চট্টগ্রাম, ০৭ সেপ্টেম্বর- অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জয়ের সাফল্য আরও বড় কিছুর স্বপ্ন দেখাচ্ছিল। প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়ও খুব কঠিন কিছু মনে হচ্ছিল না। কিন্তু নিজেদের দোষেই সেই সুযোগ হাতছাড়া করল বাংলাদেশ। সিরিজে এগিয়ে থেকেও একার করে নিতে পারল না ট্রফিটা। প্রথম ইনিংসে আরও কিছু রান করতে না পারা আর দ্বিতীয় ইনিংসের হতচ্ছাড়া ব্যাটিংই পোড়াল শেষ পর্যন্ত। দিনের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার লিডটা ৭২-এ আটকে রেখে যে মনস্তাত্ত্বিক সান্ত্বনা বাংলাদেশ কুড়িয়েছিল, তা মুহূর্তেই হাওয়া তামিম-সৌম্যদের ব্যাটিংয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। সেই ধাক্কা আর সামলেই উঠতে পারেনি দল। ১৫৭ রানে অলআউট হয়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে। অস্ট্রেলিয়াকে দিতে পেরেছে মাত্র ৮৬ রানের লক্ষ্য। ৪৮ রানে ৩ উইকেট ফেলে দিয়ে সাময়িক একটা উত্তেজনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ম্যাক্সওয়েলের ১৭ বলে ২৫ রানের ঝাপটায় অঘটনের ক্ষীণতম সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেল। ৭ উইকেটে জিতে সিরিজটাও ১-১ করে ফেলল অস্ট্রেলিয়া। এই পুঁজি নিয়ে লড়াই হয় না। তবু মোস্তাফিজ নিজের তৃতীয় আর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে ওয়ার্নারকে ফিরিয়েছেন। তাইজুল স্মিথকে আর সাকিব রেনশকে ফেরানোর পর গ্যালারিতে কিছুটা উত্তেজনার রেশ দেখা গেছে। শেষ পর্যন্ত ১৩ উইকেট নেওয়া নাথান লায়নেরই জয় হলো। তাঁর বোলিংয়েই তো দ্বিতীয় ইনিংসে তাসের ঘর হয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। লায়নের বল বাইরে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে আউট তামিম। দলীয় ১১ রানের মাথায় অফ স্টাম্পের ওপর বলে খোঁচা দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার। প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে সৌম্যর ক্যাচ নেন ম্যাট রেনশ। ৯ রানে সৌম্য ফেরার পর ইমরুল আর তামিম কখনোই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে পারেনি। ৩২ রানের সময় নাথান লায়নের বলে অযথা বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তামিম। ইমরুল ৩৯ রানের মাথায় সেই লায়নের বলেই গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে ক্যাচ দেন। সৌম্য, তামিমের পর ফিরলেন ইমরুলও। কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংয়ে ৪ নম্বরে নাসির হোসেনকে নামিয়ে দিয়ে একটা ফাটকা খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর ফাটকা ব্যর্থ। স্টিভ ওকিফির অফস্টাম্পের বাইরের একটি বলে খোঁচা দিয়ে আউট হন নাসির। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে বড় ধাক্কা ছিল সাকিব আল হাসানের ফিরে যাওয়া। লায়নের বলেই ওয়ার্নারকে ক্যাচ দিয়েছেন সাকিব। বাংলাদেশের বিপক্ষে এবারের সফরে মোট ১৯ উইকেট পেলেন লায়ন। দলের ঘোরতর বিপদ। পরিস্থিতিও কঠিন। মুশফিকের কাঁধে এখন অনেক দায়িত্ব। ৯৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা বাংলাদেশকে কিছুটা আলো দেখিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুুল হক। ৩২ রানের জুটি গড়েছিলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। কিন্তু প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন অধিনায়ক মুশফিক (৩১) । এরপর মুমিনুলও এই টেস্টে লায়নের ১২তম শিকারে পরিণত হন কামিন্সকে ক্যাচ দিয়ে। চা বিরতির পর লায়ন তাইজুলকেও ফিরিয়েছেন। বাকি চারটি উইকেট সমান ভাগাভাগি করেছেন কামিন্স ও ওকিফ। বাংলাদেশের পক্ষে কারও ফিফটি দূরের কথা, ৪০ রানের ইনিংসই নেই। ত্রিশের ঘরই পেরোতে পেরেছেন একজনমুশফিক। এগিয়ে থেকেও সিরিজের ট্রফিটা একার করে নিতে না-পারার হতাশাই সঙ্গী হলো বাংলাদেশের।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2eJQAXg
September 08, 2017 at 01:57AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন