বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং-র ছবির ঠাঁই এখন নর্দমায়!

সুরমা টাইমস ডেস্ক:: স্বঘোষিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিং জেলে যাওয়ার পর ভক্তরা একে একে এখন তার ডেরা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে দুটি ধর্ষণ মামলায় আদালত ২০ বছরের সাজা ঘোষণার পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ভক্তদের কাছে গুরমিত এখন আর ‘বাবা’ নন। একের পর কুকীর্তি ফাঁস হয়ে চলেছে তার। যতই সে সব খবর ছড়িয়ে পড়ছে, ততই খালি হচ্ছে কথিত গুরুর অতি সাধের ডেরা। ঘরের দেওয়াল থেকে তার ছবির ঠাঁই পাচ্ছে এখন নর্দমায়।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগরের চিফ স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর দেবেন্দ্র রাঠোর খুবই বিস্মিত হয়েছেন এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে। তিনি দেখতে পান, নর্দমার পানি নিষ্কাশন আটকে আছে ময়লা-আবর্জনার কারণে নয়, গুরমিত রাম রহিমের কয়েকশ ছবি এতে বাধার সৃষ্টি করছে। দেবেন্দ্র বলেন, শুধু ছবি নয়, স্বঘোষিত গুরুর শতাধিক পোস্টারও তিনি নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখেন যেগুলো তার ভক্তরা ফেলে দিয়েছে।

গুরমিতের টানে এক দিন যারা ডেরায় আশ্রয় নিয়েছিলেন আজ তারাই বিমুখ। প্রতিদিনই কেউ না কেউ ডেরা ছাড়ছেন। এরকম একজন মনজিৎ সিংহ। দু’বছর আগে ডেরায় এসেছিলেন। বাবা গুরমিতের অনেক গুণের কথা শুনে সেই মোহে এসেছিলেন ডেরায়। এরপর বাবার শিষ্যত্ব গ্রহণ করে ডেরার সেবা করে গিয়েছেন মনে প্রাণে। বন্ধুরা মাঝে মাঝে গুরমিতকে নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করলেও সে সব বিশ্বাস হয়নি তার।

কিন্তু, এখন সব প্রমাণিত এবং আদালত তার সাজা ঘোষণার পর মনজিতের ভুল ভেঙ্গেছে। শনিবার সকালে ডেরা ছেড়ে সিকিমে নিজের বাড়ির পথে রওনা দেন মনজিৎ। তিনি বলেন, ‘অনেক অভিযোগ শুনেছি। বিশ্বাস করিনি। বাবাজিকে যখনই দেখতাম সব ভুলে যেতাম। আজ আমার সব ভুল ভেঙে গিয়েছে। তার ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি। আর কোনও দিন কোনও গডম্যানকে বিশ্বাস করব না।’

ছত্তিশগড়ের মেয়ে ২১ বছরের পূজাও প্রায় একই কথা বলেন। গত ৩০ আগস্ট হরিয়ানা পুলিশের সহায়তায় ডেরা থেকে বাড়ি ফিরেছেন পূজা। তিনি বলেন, ‘২০১৫-তে ‘এমএসজি: দ্য মেসেঞ্জার’ এবং ‘এমএসজি-২: দ্য মেসেঞ্জার’ মুক্তির পরই বাবার ভক্ত হয়ে উঠি। তার পর বাড়ি ছেড়ে সরাসরি ডেরা সেচ্ছায় বাবার কাছে এসে শিষ্যত্ব গ্রহণ করি।’। তিনি বলেন, ‘বাবাকে দেখলেই কেমন যেন হয়ে যেতাম। নিজেকে পবিত্র মনে করতাম। বাবার টানে আর বাড়ি ফিরতে পারিনি। কিন্তু আর নয়। সব জেনে ঘৃণা ধরে গিয়েছে।’

শুধু ডেরা সদস্যরা নয়, গুরমিত সম্পর্কে মোহভঙ্গ হয়েছে তার নিজ এলাকা রাজস্থানের শ্রীগঙ্গানগর জেলার গুরুসার মুণ্ডিয়া গ্রামেও। ১৯৬৭ সালের ১৫ আগস্ট এই গ্রামে জন্ম তার। নিজ গ্রামে তার জনপ্রিয়তা এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে।

যে গ্রামের প্রতিটি মানুষ তাকে ভগবানের মতো বিশ্বাস-ভক্তি করতেন তারাও এখন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। গ্রামের কমবেশি প্রায় প্রতিটি ঘরেই ছিল গুরমিতের ছবি। কিন্তু, আদালতের রায়ের পরে পাল্টে গিয়েছে সে চিত্র। এখন আর ঘরের দেওয়ালে নয়, গুরমিতের ছবির ঠাঁই হয়েছে নর্দমায়।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2gDsPUP

September 03, 2017 at 09:35PM
03 Sep 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top