সুুরমা টইমস ডেস্ক:: মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে ঢাকা ত্যাগ করেছেন তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান।
বৃহস্পতিবার রাত আটটা ৫০ মিনিটে তাকে বহনকারী তুরস্কের বিশেষ ফ্লাইটটি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমিনে এরদোয়ানকে বিদায় জানান।
এরআগে সন্ধ্যা সাতটায় তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানসহ দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা আলোচনা করেন। এ সময় তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুৎ কাভুসোগলু উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এমিনে এরদোয়ান রোহিঙ্গাদের সার্বিক অবস্থা জানতে কক্সবাজারে যান। সেখানে তিনি রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ক্যাম্প ঘুরে দেখেন এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনেন। পরে এক ব্রিফিংয়ে এরদোয়ানপত্নী জানান, তার দেশ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পরবর্তী অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপন করবে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় তিনি বাংলাদেশের প্রশংসা করেন।
এমিনে এরদোয়ান বলেন, তুরস্ক রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে মিয়ানমারের সরকারকে চাপ অব্যাহত রাখবে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এমিনে এরদোয়ানের শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের সময় তার সঙ্গে ছিলেন- তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুৎ কাভুসোগলু, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার ভোর তিনটার দিকে তুরস্কের ফার্স্ট লেডি এমিনে এরদোয়ান ঢাকায় এসে পৌঁছান। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম তাকে স্বাগত জানান।
এর আগে গত ৩১ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে ফোন করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহায়তার অঙ্গীকার করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের পর রোহিঙ্গা যোদ্ধারা অন্তত ২৫টি পুলিশ স্টেশন ও একটি সেনাক্যাম্পে প্রবেশের চেষ্টা করলে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়।
এরপর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হেলিকপ্টার গানশিপের ব্যাপক ব্যবহার করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এতে মিয়ানমার সরকারের হিসাবে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিম নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে আহত শত শত রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে এসেছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের দাবি, পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।
অবশ্য চলতি মাসের শুরুতে রাখাইনে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। ঘোষণা দেয় অভিযানের। এরই মধ্যে গ্রামের পর গ্রাম রোহিঙ্গাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। বর্মি সেনাদের গণহত্যার বদলা নিতেই রোহিঙ্গা স্বাধীনতাকামীরা পুলিশ পোস্টে হামলা ও একটি সেনাঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2eLQM8n
September 08, 2017 at 01:13PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন