বিশ্বনাথে সেই দোকান কোঠা দখল নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া : আহত ১০

7.09.17= 1

বিশ্বনাথ ( সিলেট ) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলা সদরের নতুন বাজারস্থ সেই দোকান কোঠা’সহ দ্বিতল ভবনের দখল নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা সংগঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। এতে পথচারী, ব্যবসায়ী’সহ উভয় পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হওয়ার পর ও এলাকার মুরব্বীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে।

এদিকে ব্যক্তিগত কাজে যাওয়ার পথিমধ্যে রামপাশা লাইটেস স্ট্যান্ডের সামনে এক পক্ষের হামলায় গুরুত্বর আহত হয়েছেন বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কবির। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনায় ব্যবসায়ী-পথচারীদের মনে আতংঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মিরেরচর গ্রামের মৃত জবেদ আলীর পুত্র ইউপি মেম্বার রফিক হাসান ও জানাইয়া গ্রামের ইছমাইল আলীর পুত্র জুনাব আলী জুনাই গংদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাটি ঘঠেছে। এর মধ্যে ভবনের তৃতীয় দাবিদার মিরেরচর গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র কামাল হোসেন গংরা নিজের দখলে নেওয়ার পায়তারা করে। তবে পুলিশ তিন পক্ষের লোকজনকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেয় এবং দোকান কোঠা যেভাবে আছে, সেভাবে থাকার নিদের্শ প্রদান করে। এলাকার মুরব্বীরাও পুলিশের কাছে দাবি করে ভবনটি থানা পুলিশের জিম্মায় নেওয়ার জন্য।

জানা গেছে, দোকান কোঠা’সহ দ্বিতল ভবনের চলমান সমস্যা সমাধানের লক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ে তিন পক্ষকে নিয়ে সালিশ বৈঠক বসে। সলিশ চলমান রেখে পক্ষদের মধ্যে দখল-পাল্টা দখলের অভিযোগ উঠলে ও বিষয়টির সাথে থানা পুলিশ সম্পৃক্ত রয়েছে জানতে পেয়ে বণিক সমিতি কর্তৃপক্ষ এলাকার মুরব্বীদের সামনে যার যার কাগজ দিয়ে দেন। এসময় এলাকার মুরব্বীরা বিষয়টি শেষ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে সকলের সহযোগীতা চান। এমতাবস্থায় আবারও বৃহস্পতিবার রাতে জুনাব আলী জুনাই-রফিক হাসান গংদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ওই দুই পক্ষ’সহ কামাল হোসেন গংদের দখল-পাল্টা দখলের ঘটনা সংগঠিত হয়।

উল্লেখ্য, ক্রয় সূত্রে মালিক দাবিদার জুনাব আলী জুনাই গত ১৬ আগস্ট ভবনটি দখল করতে আসে। এতে বাঁধা দিয়ে বণিক সমিতির কাছে বিচার প্রার্থী হন কামাল হোসেন। এসময় বণিক সমিতির কাছে রফিক হাসানও নিজেদের ভবনের মালিকানা দাবি করেন। তিন পক্ষেই বণিক সমিতির কাছে নিজেদের পক্ষের কাগজও বণিক সমিতির কাছে জমা দেন। আর বিচার চলমান থাকা অবস্থা জব্দকৃত ভবনটি ২৮ আগস্ট দখল করার পায়তারা করে কামাল হোসেন পক্ষ। এতে বাঁধা নিয়ে বণিক সমিতি আবারও ভবনটি জব্দ করে। গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে পুণঃরায় কামাল হোসেন পক্ষ ভবনে তালা মেরে ও সাইনর্বোড মেরে নিজের দখলে নেয়। দুপুরে রফিক হাসান পক্ষ কামালের সাইনবোর্ড ও তালা ফেলে দিয়ে নিজের তালা মেরে ঘরটি নিজের (রফিক) দখলে নেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাতে জুনাই গংরা ভবনে নিজেদের তালা মারতে আসলে রফিক গংদের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা সংঘটিত হয়।

হামলায় আহত বণিক সমিতির সমাজ কল্যাণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম কবির বলেন, বনিক সমিতির সভাপতি শামীম আহমদের নেতৃত্বে আমার উপর হামলা করা হয়েছে।

এব্যাপারে বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী বলেন, বিষয়টি বিচারাধীন রেখে কামাল হোসেন গংরা একাধিক বার ভবনটি নিজেদের দখলে নেওয়ার পায়তারা করেছে। এরপর জুনাই ও রফিক পক্ষও দখল-পাল্টা দখলে সামিল হন। বিষয়টির সাথে পুলিশের সম্পৃক্ততা রয়েছেন জানাতে পেরে ও আমাদের কথা অমান্য করার কারণে আমরা যার যার কাগজ তার তার হাতে দিয়ে দিয়েছি। বিষয়টি এলাকার মুরব্বীদের সাথে নিয়ে পুলিশের মাধ্যমে মিমাংশা হওয়ার কথা বলে শুনেছি।

রফিক হাসান বলেন, ভবনটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। আর কামাল ও জুনাই পক্ষ অবৈধভাবে ভবনটি দখলের পায়তার করছে। এজন্য আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে বণিক সমিতির সভাপতি (বিশ্বনাথ নতুন বাজার) শামীম আহমদ ও জুনাব আলী জুনাই’র নেতৃত্বে আমাদের উপর অতর্কিতভাবে হামলা করা হয়েছে। এতে আমাদের কয়েক জন আহত হয়েছেন। তারা আমাদের উপর হামলা করে দোকান কোঠা’সহ ভবনটি দখলের নেওয়ার চেষ্ঠা করে ছিল। আমরা তা প্রতিহত করেছি।

জুনাব আলী জুনাই বলেন, আমি কামাল হোসেনের ভাই শামীম মিয়ার কাছ থেকে দোকান ঘর’সহ ভবনটি ক্রয় করেছি। দোকান কোঠায় বসা অবস্থায় রফিক হাসানের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে আমরা প্রতিহত করি।

কামাল হোসেন বলেন, আমি বণিক সমিতির কোন আইন অমান্য করিনি। ভবনটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। তাই এটি আমার দখলেই আছে। আবার দখলের কোন কারণ নাই। জোরপূর্বকভাবে ওই দুই পক্ষ আমার সম্পত্তি দখলের পায়তারা করছে।

কবিরের উপর হামলা ও রফিক গংদের উপর হামলার নেতৃত্বে দেওয়ার ঘটনা অস্বীকার করে বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির

সভাপতিশামীম আহমদ বলেন, আমি সালিশে ছিলাম। কোন পক্ষে আমি নেই। কবিরকে আমি দেখিও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময়।

পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে দাবি করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, বর্তমানে ঘরটি যার দখলে আছে, তার দখলেই থাকবে। কেউ জোরপূর্বক ভবনে নিজেদের দখলে নিতে পারবেন না।



from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2wMJ1XW

September 08, 2017 at 12:18AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top