সুরমা টাইমস ডেস্ক:: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের মদদ দেওয়ার মামলায় আগামী ৫ই অক্টোবর স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ওইদিন আত্মসমর্পণ না করলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
রবিবার বাদীর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদনের নিষ্পত্তিতে ঢাকা মহানগর হাকিম নুর নবী এ আদেশ দেন।
বিচারক তার ওই আদেশে উল্লেখ করেন, মামলাটিতে আসামি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সমন জারি করা হলেও তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর নয়। শুধুমাত্র মানহানি সংক্রান্ত, যা জামিনযোগ্য অপরাধ। ফলে আসামিকে আগামী ৫ই অক্টোবর স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া গেল। ওই দিন তিনি আত্মসমর্পণে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুসহ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে এদিন আদালতে মামলাটির বাদী বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী উপস্থিত হন।
২০১৬ সালের ৩রা নভেম্বর বাদী ‘স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা মানহানি ঘটানোর অভিযোগে সিএমএম আদালতে এই মানহানির মামলা করেন। ওইদিন আদালত তেজগাঁও থানার ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। চলতি বছর ২৫শে ফেব্রুয়ারি তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এবিএম মশিউর রহমান মামলাটিতে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। যা গত ২২শে মার্চ তা আমলে নিয়ে আসামি খালেদা জিয়াকে ১১ই জুন আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছিল আদালত। ওইদিন খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন বাদী।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। ওই মন্ত্রিপরিষদে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের যারা প্রকাশ্য এবং আত্মস্বীকৃতিরূপে পাকিস্তানের দোসর হিসেবে নিজেদের পরিচয় প্রতিষ্ঠা করেছিল, সেই জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির, আলবদর, আলসামস কমিটির সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রী ও এমপি বানান। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন। এরমধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রিত্বপ্রাপ্ত মহিউর রহমান নিজামী এবং আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের মুত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। কিন্তু তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন মন্ত্রিত্বের সুবিধা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা তাদের বাড়ি এবং গাড়িতে ব্যবহার করেছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্বাধীনতা বিরোধী ব্যাক্তিদের তার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পতাকাকে ওই স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়িতে তুলে দিয়ে সত্যিকারের দেশ প্রেমিক জনগণের মর্যাদা ভুলণ্ঠিত করেছেন। তাই তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারার মানহানির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত আইনে মৃত ব্যক্তির বিচারের সুযোগ না থাকায় সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হলো।’
মামলায় বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর কলঙ্কিত মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ৭ই নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবের মাধ্যমে সামরিক সরকারের দায়িত্ব দখল করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন। ১৯৮১ সালের ১৭ই মে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে তাকে হুমকি দিয়ে তার বাবার বাড়িতে প্রবেশ করতে দেননি। এ ছাড়া খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করে স্বাধীনতা বিরোধী আলবদর রাজাকারদের হাতে মন্ত্রিত্ব তুলে দেয়। যার মাধ্যমে স্বীকৃত স্বাধীনতা বিরোধীদের গাড়ীতে জাতীয় পতকা তুলে দিয়ে দেশের মানচিত্র এবং জাতীয় পতাকা মানহানি ঘটিয়েছেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2wzf1wY
September 18, 2017 at 12:27AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন