কলকাতা, ০৭ সেপ্টেম্বর- রোগীর ক্ষুব্ধ পরিজনদের রোষানল থেকে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের রক্ষা করতে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট নাগরিকদের সহায়তা নেবে স্বাস্থ্য ভবন৷ শুধুমাত্র তাই নয়৷ সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানকারী কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত বিভিন্ন ধরনের খামতি পূরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে থাকা স্বাস্থ্য দফতর৷ একই সঙ্গে, বিভিন্ন হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে৷ চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগের জেরে সম্প্রতি যেভাবে সংশ্লিষ্ট রোগীর ক্ষুব্ধ পরিজনদের রোষানলে পড়তে হচ্ছে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের, তার জন্য খোদ স্বাস্থ্য দফতরেরই বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক একই সঙ্গে উদ্বেগ এবং আতঙ্কে রয়েছেন৷ এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে কীভাবে বের হওয়া যায়, তার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষস্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরাও ভাবছেন৷ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, সরকারি ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা যেভাবে আক্রান্ত হচ্ছেন, তাতে দফতরের এই সব মানুষকে রক্ষা করার বিষয়টি তো ভাবতেই হবে৷ এ দিকে, শুধুমাত্র সরকারি ক্ষেত্রে নয়৷ বেসরকারি ক্ষেত্রেও যেভাবে রোগীর ক্ষুব্ধ পরিজনদের রোষানলে পড়তে হচ্ছে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের এবং সম্প্রতি যেভাবে এই ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা বেড়ে চলেছে, তার জেরে সরকারি এবং বেসরকারি ডাক্তারদেরও বিভিন্ন অংশ একই সঙ্গে উদ্বেগ এবং আতঙ্কে রয়েছে৷ এই ধরনের পরিস্থিতির অবসানের জন্য পুলিশ-প্রশাসন যাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তার দাবিতে ইতিমধ্যেই বহির্বিভাগে একদিনের কর্মবিরতিও পালন করেছেন বেসরকারি ক্ষেত্রের বহু ডাক্তার৷ পরিস্থিতির বদল না ঘটলে আগামী দিনে সরকারি এবং বেসরকারি ডাক্তাররা একযোগে কর্মবিরতির পথে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে৷ শুধুমাত্র তাই নয়৷ ওয়াকিবহাল মহলের বিভিন্ন অংশের তরফে এমনও জানানো হয়েছে, ডাক্তার এবং রোগী সহ পরিজনদের মধ্যে যেভাবে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে, তার প্রভাবে আসলে চিকিৎসা পরিষেবার বিষয়টিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ অন্যদিকে, ডাক্তার এবং রোগীর মধ্যে অবিলম্বে সম্পর্কের উন্নতি না ঘটলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছে সরকারি ডাক্তারদেরই বিভিন্ন অংশ৷ এবং, এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেই বিষয়েও ভাবছে স্বাস্থ্য ভবন৷ রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, সমাজে এখন সামান্য কারণে অনেক বেশি অসহিষ্ণুতা দেখা যাচ্ছে৷ ডাক্তারদের প্রতি সমাজের যে বিশ্বাসভঙ্গ হয়েছে, সেটা সমাজকেই পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে৷ সমাজকে বুঝতে হবে, ডাক্তারদের প্রয়োজন৷ সমাজে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের সংখ্যাই বেশি৷ এ কাজে সমাজের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদেরই এগিয়ে আসতে হবে৷ এই বিষয়ে কী বলছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য? তিনি বলেছেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজে ডাক্তারদের যেমন স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে৷ তেমনই, ডাক্তারদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজকেও আরও বেশি এগিয়ে আসতে হবে৷ ডাক্তাররা যাতে নির্ভয়ে চিকিৎসা করতে পারেন, পরিজনদের সেটা বুঝতে হবে৷ কিন্তু, সমাজ যাতে আরও এগিয়ে আসে, তার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট নাগরিকদের মাধ্যমে যদি সমাজের কাছে আবেদন রাখে স্বাস্থ্য দফতর তা হলে কি পরিস্থিতির বদল ঘটতে পারে? দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, এই বিষয়টি ভাবা যেতে পারে৷ একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ডাক্তারদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সমাজকে কীভাবে আরও বেশি এগিয়ে আসতে হবে, তার জন্য আলোচনা, বিতর্কও চলতে পারে৷ তবে, বিতর্কে দোষ খুঁজে লাভ নেই৷



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2waaQYv
September 07, 2017 at 06:56PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top