কলকাতা, ১৫ সেপ্টেম্বর- ধর্ম নিয়ে অসহিষ্ণুতার অন্ধকার গ্রাস করছে বিশ্বকে। বাদ পড়েনি মহানগর কলকাতাও। শারদোৎসবের আবহে সেই অন্ধকার দূর করার চেষ্টায় রাজডাঙা নব উদয় সংঘ৷ তাদের পুজোয় এবার সর্বধর্ম সম্মেলন। অসহিষ্ণুতা আঘাত করেছে জনৈক কবিকে, কখনও জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে। কখনও অসহিষ্ণুতা আঘাত করেছে টেলিভিশন, রেডিওর বিখ্যাত সঞ্চালককে। ধর্মের অসহিষ্ণু কালো মেঘ সরতে পারে একমাত্র সর্বধর্ম সহাবস্থানের মাধ্যমে। দুর্গা পুজোর মণ্ডপের মাধ্যমে সেই প্রচেষ্টাই করছে রাজডাঙা নব উদয় সংঘ। পুজোর থিম মার্গ বা পথ। ক্লাবের কার্যকরী সম্পাদক অমল সমাদ্দার জানিয়েছেন, ৩২তম বছরে পড়েছে আমাদের পুজো। থিম সম্পর্কে তিনি জানান, যে কোনও লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে একটি পথের মাধ্যমে যেতে হয়। সেটা কোনোদিনই ধর্মের পথ হতে পারে না। জীবনে যদি মোক্ষ লাভ করতে হয় তাহলে তা আসতে পারে একমাত্র কর্মের মাধ্যমে। অমলবাবুর কথায়, যে লক্ষ্যেই পৌঁছতে চান না কেন সেখানে পৌঁছতে গেলে ভালো কাজের প্রয়োজন। যদি ভালো কাজ না করেন তাহলে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এই কাজের পথই হল মার্গ। তিনি এও জানিয়েছেন , ধর্ম সৃষ্টি করেছে মানুষ। ধর্ম নিয়ে কিছুদূর এগোনো সম্ভব। কিন্তু সম্পূর্ণ পথ অতিক্রম কখনোই সম্ভব নয়। কর্ম দিয়েই এগোনো সম্ভব । এই মার্গ বা পথ বোঝাতেই রাজডাঙ্গার নব উদয় সংঘের মণ্ডপে সর্বধর্ম সম্মেলনের আয়োজন। অমলবাবু জানিয়েছেন, দর্শক মণ্ডপে প্রবেশ করা মাত্রই দেখতে পাবেন পাঁচটি ধর্মের ধর্মস্থানের আকার তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্যেকটিই সুন্দর হাতের কাজের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে। এই পাঁচ ধর্মের কোনটিতে রয়েছে মন্দির, কোথাও রয়েছে মসজিদ। রয়েছে গির্জা, গুরুদোয়ারা এবং জৈন ধর্মস্থানের আদল। এরপরেই রয়েছে মাতৃ মণ্ডপ। অমলবাবুর দাবি, দর্শকদের মানসিক পরীক্ষার ফেলবে আমাদের ভাবনা। কারণ এই পাঁচটি মার্গ দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগাবে তিনি মানব ধর্মের পরিপন্থী না নির্দিষ্ট কোনও একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পরিপন্থী। থিমের মাতৃমূর্তি এখানে দশভুজা নন। শিল্পী সুশান্ত পালের ভাবনায় গড়ে ওঠা মণ্ডপের মাতৃমূর্তি একটি সাধারণ মেয়ের প্রতিকৃতি। বোঝা যাবে না তিনি কোন ধর্মের৷ অমলবাবু জানিয়েছেন, দর্শক তাঁকে যে রূপে কল্পনা করবেন তিনি সেরকম। দেবী এখানে আদ্যোপান্ত মানববেশধারিণী। রাজডাঙায় হিন্দু দেবী মা দুর্গা সবার মা৷ আর এই ভাবেই জাতপাতের জীবন থেকে বেরিয়ে নতুন ভাবে সমাজ শুরু করার সেই অমোঘ শান্তির বাণী নিয়েই এবার হাজির রাজডাঙা নব উদয় সংঘ৷ মা দুর্গার এই নবরূপ সাধারন মানুষ কিভাবে নেন সেটাই এখন দেখার৷ আর/১২:১৪/১৫ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2y9mAwt
September 15, 2017 at 07:55AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন