ঢাকা, ২২ সেপ্টেম্বর- ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কোটি টাকার কাবিন একটি ব্যবসাসফল ছবি। আর ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন এফ আই মানিক। অনেকেই বলেন, অশ্লীল ছবির দাপটে যখন দর্শক হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল, তখন এফ আই মানিক ওই ছবি দিয়ে আবার দর্শকদের টেনে এনেছিলেন হলে। সেই ছবির মধ্য দিয়েই প্রথম জুটি বাঁধেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। পান জনপ্রিয়তা। নায়িকা হিসেবে অপুর ওটাই ছিল প্রথম ছবি। কোটি টাকার কাবিনের পর দাদিমা, চাচ্চু ও পিতার আসনএই চারটি ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন এফ আই মানিক ২০০৬ সালে। এরপর আরো সফল ছবি নির্মাণ করেন তিনি। অথচ আজ তিনি প্রায় কপর্দকহীন। অসুস্থ স্ত্রীকে চিকিৎসা করানোর মতো অর্থ নেই তাঁর হাতে। একসময়ের এত সফল পরিচালক আর্থিক অনটনে পড়েন ছবি প্রযোজনা করতে এসেই। ছবিটির নাম জর্জ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার, ২০১০ সালে ছবিটি নির্মাণের কাজে হাত দেন মানিক। ছবিতে অভিনয়ের জন্য নেন রাজ্জাক, সোহেল রানা, আলমগীর ও শাকিব খানকে। সেই ছবি শিডিউল জটিলতার কারণে সময়মতো শেষ করতে পারেননি। কিন্তু সেখানে লগ্নি করে ফেলেন কোটি টাকা। এতে আর্থিক কষ্টের মধ্যে পড়েন তিনি। সম্প্রতি তাঁর স্ত্রীর অসুস্থতা তাঁকে আরো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। তবে এই বিপদে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন নায়ক আবদুল জলিল অনন্ত। এনটিভি অনলাইনকে এফ আই মানিক বলেন, আজকে আমার যে অবস্থা, তা বলতেও লজ্জা লাগে। টাকার অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছি না, নিজে চলতে পারছি না। আমি কোনো দিন করো কাছে সাহায্য চাইনি, এখনো চাই না। তবে চলচ্চিত্রের লোকের কাছে আমি সহযোগিতা চাই, তারা আমার পরিবারের মানুষ। অনন্ত জলিলকে ধন্যবাদ, সে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। মানিক আরো বলেন, একসময় অশ্লীলতার কারণে দর্শক হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল। গুণী নির্মাতারা ছবি বানানো বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমন সময় আমি ২০০৬ সালে কোটি টাকার কাবিন ছবি দিয়ে দর্শক ফিরিয়েছি হলে। পরপর দাদিমা, চাচ্চু, মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি এসব সুপারহিট ছবি করি। অন্য গুণী নির্মাতারা আবার চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। নিজের প্রযোজিত ছবিটি নিয়ে মানিক বলেন, আমি সব সময় বিগ অ্যারেজমেন্ট নিয়ে ছবি বানাতে চেষ্টা করেছি। এর মধ্যে নিজে প্রযোজনা করার চিন্তা করে জীবনের সব কামাই দিয়ে নির্মাণ শুরু করেছিলাম। ছবিটি ছিল জর্জ ব্যারিস্টার পুলিশ কমিশনার। সেই ছবিটি রাজ্জাক ভাই, সোহেল রানা সাহেব, আলমগীর সাহেব, শাকিব খানকে নিয়ে শুরু করেছিলাম। কিন্তু শিডিউল জটিলতায় তা সময়মতো শেষ করতে না পেরে আজ আমি পথের ফকির। মানিক আরো বলেন, এখন যাঁরা চলচ্চিত্রে কাজ করছেন, তাঁদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা সময়মতো শুটিং করবেন। কারণ, সব গল্প সব সময় ভালো লাগে না। প্রত্যেকটা গল্পেরই একটা সময় থাকে। সেই সময় পার হয়ে গেলে সেই ছবি আর ভালো লাগে না। আর আপনাদের একটু অবহেলা একজন প্রযোজককে পথের ফকির বানিয়ে দিতে পারে, যার উদাহরণ আমি নিজে। আমার মতো অনেক প্রযোজক পথের ফকির হয়ে বসে আছেন। এদিকে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে পরিচালক এফ আই মানিকের সমস্যার কথা জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস দেন অনন্ত জলিল। নিজের ফেসবুক পেজে জলিল লিখেছেন, গুণী পরিচালক এফ আই মানিক ভাই আমাদের চলচ্চিত্রের জন্য, চলচ্চিত্রের দর্শকসহ সবার জন্য এত কিছু করেছেন, তাঁকেই আজ অর্থকষ্টে ভুগতে হচ্ছে। এই স্বনামধন্য পরিচালক অর্থের অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা সঠিকভাবে চালাতে পারছেন না। যদিও তা আমি জানতাম না, কিন্তু গতকাল হঠাৎ তিনি আমার অফিসে এসে উপস্থিত হন। তখন আমি অফিসে উপস্থিত ছিলাম না। তাই তাঁকে বেশ সময় অপেক্ষা করতে হয়, যা আমার জন্য ব্যর্থতা। কারণ, আমার জন্য এত বড় মাপের পরিচালককে অপেক্ষা করতে হয়েছে। যখন উনার মুখোমুখি হই, তখন তাঁর চেহারা বেশ মলিন ছিল। তিনি আমাকে তাঁর কষ্টের কথার সঙ্গে, অর্থের অভাবে স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে পারছেন না, সে কথাও বলেন। অনন্ত পোস্টে আরো লিখেছেন, যার হাত ধরে অনেক তারকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ বিখ্যাত পরিচালক আমার কাছে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাবেন, তা হবে অনন্ত জলিলের অন্যতম ব্যর্থতা। তাই আমার যতটুকু সামর্থ্য, ততটুকু দিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, প্রতিষ্ঠিত তারকা এবং চলচ্চিত্র পরিবারের সদস্যসহ অন্যরাও এফ আই মানিক ভাইয়ের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন। এটা সাহায্য বললেও ভুল হবে, এটা আমাদের কর্তব্য। এ আর/১৫:৩০/২২ সেপ্টেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2xsIjks
September 22, 2017 at 09:33PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
আল্লাহওনাকেনেকহায়াতদানকরুকআমি। আর ওনার নাম্বারটা দেওয়াযা।
উত্তরমুছুন