ফের বিতর্কের মুখে সাবেক এমপি শাহীনুর পাশা !

সুরমা টাইমস ডেস্ক:: সাবেক এমপি মাওলানা শাহীনুর পাশাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় উঠেছে। চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। চলছে বিতর্ক। এতে শামিল হয়েছেন শাহীনুর পাশা নিজেও।

আজ এ নিয়ে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন। মাওলানা শাহীনুর পাশা চৌধুরী। চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ আসনের এই সাবেক এমপি। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। সিলেটের রাজনীতিতে শাহীনুর পাশা চৌধুরী এক পরিচিত নাম। ইসলামী যেকোনো আন্দোলনে সিলেটের রাজপথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন তিনি। নিজ দল জমিয়ত ছাড়াও সিলেটের হেফাজতে ইসলামেও তার রয়েছে নিয়ন্ত্রণ।

এবারের মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ইস্যুতে সিলেটে আন্দোলনে বড় কোনো প্ল্যাটফরম তৈরি হয়নি। সেক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছিলেন শাহীনুর পাশা। নিজের অনুগামীদের নিয়ে চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিলেটে গঠন করেছিলেন ‘হিউমিনিটি ফর রোহিঙ্গা’ নামের সংগঠনটি। আর এই সংগঠনের ব্যানারে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে ২১শে ও ২২শে মার্চ সিলেট থেকে টেকনাফ অভিমুখে রোডমার্চের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর থেকে শুরু হয় প্রস্তুতি। প্রস্তুতিকালেই ব্যাপক সাড়া জাগায় শাহীনুর পাশার এই উদ্যোগ।

সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে গত বৃহস্পতিবার সিলেট থেকে গাড়ি বহর নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রোডমার্চ শুরু করেন শাহীনুর পাশা। কিন্তু রোডমার্চের বহরটি নগর থেকে ১০ কিলোমিটার যেতেই পথিমধ্যে রশিদপুরে পুলিশ আটকে দেয়। পুলিশের বাধার মুখে শাহীনুর পাশা গাড়ি বহর নিয়ে ফিরে আসেন সিলেটে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে। অনেকেই পাশার রোডমার্চ আয়োজন ও ফিরে আসা নিয়ে নানা মন্তব্য করেন। এমনকি তারা রোডমার্চের নামে পাশার বিরুদ্ধে অর্থ লুটপাটেরও অভিযোগ তুলেন। এসব বিষয় নিয়ে গত তিনদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়। চলছে পাল্টাপাল্টি। সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হচ্ছে রোডমার্চের নামে চাঁদা সংগ্রহ নিয়ে। তবে, পাশাও কম যাচ্ছেন না। তিনিও সামাজিক মাধ্যমে সোচ্চার। জবাব দিয়েছেন।

শুধু জবাবই নয়, তিনি আজ নিজ উদ্যোগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সব প্রশ্নের উত্তর খোলাসা করবেন বলে জানিয়েছেন। সাংবাদিক ইকবাল মাহমুদের ফেসবুকের স্ট্যাটাস নিয়ে বেশি ঝড় বইছে পাশার বিরুদ্ধে।

ওই স্ট্যাটাসে ইকবাল মাহমুদ বলেছেন- কয়েক কিলোমিটারের মাথায় রশিদপুর যাওয়ার আগেই রোডমার্চ থামিয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের বক্তব্য, রোডমার্চের কোনো প্রশাসনিক অনুমোদন নেয়া হয়নি। ত্রাণ বিতরণের জন্য নেয়া হয়েছে অনুমোদন। এত গাড়ি, এত মানুষ; কিন্তু ত্রাণ কই? খোঁজা শুরু হলো। ৬৮টি গাড়ির মধ্যে ৬৭টিতেই শুধু মানুষ, একটি গাড়ির পেছন দিকে পাওয়া গেল অল্প কিছু ত্রাণের প্যাকেট। পুলিশ সেই গাড়িটি ছেড়ে দেয়। বাকি সবাইকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়।’

স্ট্যাটাসে সাংবাদিক ইকবাল লিখেন- ‘এই ৬৮টি গাড়ির ভাড়া কত হতে পারে? দুই লাখ ৩৮ হাজার টাকা। প্রচার-প্রচারণাসহ সব মিলিয়ে ধরুন আরও দুই লাখ টাকা খরচ। অর্থাৎ পাঁচ লাখের মধ্যেই মামলা খতম। এক কোটি থেকে পাঁচ লাখ বাদ দিলে কত বাকি থাকে? ৯৫ লাখ টাকা। এমন ইস্যু যদি বছরে দুয়েকবার আসে, তাহলে আগামী নির্বাচনের খরচ জোগাড় হয়ে যাবে অনায়াসেই।’ এই স্ট্যাটাসের পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়েছেন শাহীনুর পাশা চৌধুরী।

তিনি বলেছেন- ‘আমরা গাড়ি ভাড়া করবো, এরকম কথা কোথাও বা সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়নি। তাহলে ২শ’ গাড়ির ভাড়া হিসাব করে এরকম কোটি টাকার স্বপ্ন জাতিকে যে গিলাবার ব্যর্থ চেষ্টা করলেন।’

তিনি বলেন- ‘আমরা প্রশাসনের কাছে অনুমতির জন্য যে দরখাস্ত করেছি তাতে রোডমার্চের কথাই বলা হয়েছে, ত্রাণ সম্পর্কিত একটি শব্দও লিখা হয়নি। চ্যালেঞ্জ দিলাম, সাংবাদিক হিসেবে আপনি প্রমাণ করুন। ত্রাণের অযৌক্তিক কথা ম্যানশন করে বলেছেন- কোটি টাকা মানুষে দিয়েছে, আর এগুলোকে হজম করার জন্যই রোডমার্চের নাম নিয়ে টাকা আত্মসাৎ। আপনার বক্তব্য যে নির্জলা মিথ্যাচার, মিডিয়া লাইনের সবাই এ দু্থসপ্তাহ থেকে দেখছেন। কারণ রোডমার্চের বিরুদ্ধে যারা নিজস্ব মতামত দিয়েছেন, তারা বলেছিলেন- রোডমার্চে যে খরচ হবে, এই টাকাটা ত্রাণে দিলে উপকার হতো। আমরা যদি ত্রাণ দিতাম, তাহলে না চাঁদার বিষয়টি আসতো।

শাহীনুর পাশা চৌধুরী আরো লিখেন, ‘রোডমার্চের খরচ ৩ লাখ ১৪ হাজার ৭ টাকার উপরে কোনো ব্যক্তি যদি বলেন, এক টাকাও চাঁদা দিয়েছেন, অথবা প্রমাণ করতে পারেন, তাদের প্রতি ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়তে বাধ্য হলাম। ঘাটতি ৩৮ হাজার ২৪৬ টাকা আমার পকেট থেকে খরচ করেছি।’

এদিকে- আজ রোববার দুপুরে সিলেটের একটি হোটেলে শাহীনুর পাশা চৌধুরী রোডমার্চ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন। এতে তিনি তার বক্তব্য তুলে ধরবেন।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2yzn9Qm

September 24, 2017 at 10:45PM
24 Sep 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top