কুমিল্লার মাঠে ভারতীয় নারী শ্রমিক

মোশাররফ রহিম ● এতদিন পর বুঝলাম আমাদের দেশ উন্নত বিশ্বের পর্যায়ে পৌঁছেছে। কারণ, আমাদের দেশের ক্ষেতে-খামারে এখন বিদেশি (ভারতীয়) শ্রমিক কাজ করে। তবে পাসপোর্ট/ভিসা ছাড়া। রবিবার সকালে বর্ডারের (চৌদ্দগ্রাম) দিকে হাঁটতে গিয়ে দেখে মহিলারা ধান ক্ষেতে নিড়ানির কাজ করছে। আমাদের অঞ্চলের মহিলারা কিন্তু ক্ষেত-খামারে কাজ করেন না। তাই ওদেরকে দেখে আশ্চর্য হয়ে ওদের নাম পরিচয় জিজ্ঞাস করি।

আরতি, মমতা, শুক্লা, তাপসী, খঞ্জনা, কাজল, ঊষা ওদের পরিচয় দিল ওরা ভারতের রাধানগর এলাকার বাসিন্দা। তাদের এলাকায় কাজ নাই বলে তারা প্রতিদিন সকালে বিএসএফ’র কাছে তাদের কার্ড জমা দিয়ে বাংলাদেশের জয়ন্তীনগর, সেনেরখিল, চন্ডিপুর, পুর্ব ধনমুড়ি প্রভৃতি এলাকায় কৃষি কাজ করতে আসে। এ দেশে ওদের প্রতিজনের হাজিরা ৩৫০টাকা প্রতিদিন কাজের সময় সকাল আটটা থেকে বিকাল সাড়ে চারটা।

এই সময়টুকু ওদের দেশে কাজ করলে পায় দুইশো টাকা থেকে আড়াইশত টাকা। তাও কাজ আধরষধনষব থাকে না। তাই অভাবের তাড়নায় রিস্ক নিয়ে সীমান্তের কাঁটাতার পাড়ি দিয়ে ওরা বাংলাদেশে চলে আসে। ওদেরকে বললাম, বাংলাদেশি সীমান্তরক্ষী (বিজিবি) আপনাদেরকে ধরে না? আমরাতো ডাবল কাঁটাতার ভেদ করে ভারতে ঢুকতে পারি না, আপনারা আসেন কি করে? ওদের সরল উক্তি- না, বিজিবি আমাদেরকে বাঁধা দেয় না, কিছু বলে না। তাদেরকে নিয়োগকর্তা জয়ন্তীনগর গ্রামের হালিম মিয়াকে বললাম- আমাদের দেশের লোকেরা কাজ পায় না, অথচ আপনি ভারত থেকে লোক এনে কাজ করান! ব্যাপারটা কি? চাচা বললেন- আমাদের দেশের লোক পাঁচশত টাকায় হাজিরাতেও পাওয়া যায় না। পেলেও কাজে ফাঁকিঝুঁকি দেয়। কাজ পরিষ্কার না। ওদের কাজের কোয়ালিটি দেখে চাচার কথাই বিশ্বাস করলাম। পুনরায় চাচাকে জিজ্ঞাস করলাম- ওরা ভারত থেকে এসে আমাদের এখানে কাজ করে, আমরা কি ভারতে গিয়ে কাজ করতে পারব? চাচার উত্তর- ভারতে গিয়ে কাজ করাতো দূরের কথা, এখন ওদের সীমানা পিলারের কাছে গেলেই ওদের বিএসএফ গুলি করার হুমকি দেয়।

আবার চাচাকে প্রশ্ন করলাম- তাহলে ওরা আসে কিভাবে? কাজ পায় কিভাবে? চাচার উত্তর- ওদেরকে বিএসএফ সুযোগ দেয়। তাছাড়া আমাদের বিডিআরও ওদেরকে ডিস্টার্ব দেয় না। বুঝলাম- বন্ধুপ্রতিম দেশ বলে কথা। তবে তা একপেশে। আরো বুঝলাম- আমাদের দেশ অনেক এগিয়েছে। বিদেশি শ্রমিক এসে কাজ করে আমাদের খেত-খামারে। —লেখকের ফেসবুক থেকে নেয়া।

The post কুমিল্লার মাঠে ভারতীয় নারী শ্রমিক appeared first on Comillar Barta.



from Comillar Barta http://ift.tt/2wyCVso

September 17, 2017 at 05:25PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top