সুরমা টাইমস ডেস্ক:: ধর্ষণের দায়ে ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের হরিয়ানার সিরসার ডেরায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। ভারতের বিতর্কিত এই ধর্মগুরুর বিলাসী জীবনের নানা কাহিনি প্রকাশ পাচ্ছে। তাঁর ডেরায় পানির নিচে গোপন ‘সেক্স কেভ’ বা ‘যৌন গুহার’ সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আজ শুক্রবার রাম রহিমের ডেরায় শত শত আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ ও ভিডিওচিত্র সাংবাদিকের বিশাল একটি দল অভিযান চালায়। মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা সম্পদ খোঁজার জন্য সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল খননযন্ত্র।
গোপন গুহায় নারীদের নিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করতেন রাম রহিম। জোর করে সেখানে নারীদের নিয়ে গিয়ে যৌন হেনস্তা করা হতো। ডেরার প্রাসাদ চত্বরে যে সুইমিং পুল রয়েছে, তার নিচেই ওই ‘যৌন গুহা’ গড়ে তুলেছিলেন ডেরাপ্রধান রাম রহিম।
অভিযানের প্রথম দুই ঘণ্টার মধ্যে ডেরা থেকে অর্থ, নিষিদ্ধ মুদ্রা, হার্ড ডিস্ক, কম্পিউটারসহ বিপুল পরিমাণ অর্থ জব্দ করা হয়। প্রায় ৮০০ একর জায়গার ওপর গড়ে ওঠা ‘ডেরা সচ্চা সৌদা’র দুটি কক্ষ সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সাবেক বিচারপতি এ কে এস পাওয়ারের নেতৃত্বে ডেরার বাইরে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, কমান্ডো, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রস্তুত ছিল।
ডেরার ভেতর দুই অনুসারীকে ধর্ষণের দায়ে গত সপ্তাহে ‘রকস্টার গুরু’ রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
রাম রহিমের ওই ডেরায় আইফেল টাওয়ার, তাজমহল, ক্রেমলিন ও ডিজনি ওয়ার্ল্ডের অনুকরণে স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। ডেরার ভেতরের ওই ডিজনি ওয়ার্ল্ডে রাম রহিমের পালক মেয়ে হানিপ্রীত ইনসানের প্রবেশাধিকার ছিল। এ ছাড়া অল্প কয়েকজন বিশ্বস্ত সহযোগী ছাড়া সেখানে আর কারও প্রবেশাধিকার ছিল না। এ ছাড়া সাত তারকা মানের ‘এমএসজি রিসোর্ট’ এবং সব জায়গায় ডেরাপ্রধানের পোস্টার লাগানো আছে। ডেরার ভেতরে রয়েছে একটি ‘আন্তর্জাতিক স্কুল’, দোকান, একটি হাসপাতাল, একটি স্টেডিয়াম, ঘরবাড়ি এবং একটি সিনেমা থিয়েটার, যেখানে রাম রহিমের ‘এমএসজি’ চলচ্চিত্রগুলো দেখানো হয়।
ডেরার ভেতরে একটি গোলাপি ভবন রয়েছে, যা রাম রহিমের কুখ্যাত ‘গুফা’ (গুহা) নামে পরিচিত। ওই বাড়িতেই তাঁর নারী অনুসারীদের ধর্ষণ করা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সবকিছুই অনুসন্ধান করা হবে। হরিয়ানার পুলিশপ্রধান বি এস সন্ধু বলেন, ‘ডেরা প্রাঙ্গণ একটি বিশাল এলাকা। তাই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সময় লাগবে।’
এ অভিযানকে কেন্দ্র করে ডেরা এলাকার কাছাকাছি একাধিক তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের সহিংসতা রোধে সিরসা শহরে আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের পাশাপাশি ৪০ সোয়াত কমান্ডো, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ডগ স্কোয়াড সতর্ক অবস্থায় আছে।
গত ২৫ আগস্ট সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে রাম রহিমকে দোষী সাব্যস্ত করার দিন পঞ্চ কুলা ও সিরসায় বড় আকারের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় তখন ৩৮ জন নিহত হয় বলে পুলিশ জানায়। তখন থেকেই হরিয়ানাজুড়ে শতাধিক স্থানে পুলিশ অভিযান চালায়। কয়েকটি স্থান থেকে অস্ত্রও পাওয়া গেছে।
গত ২৫ আগস্ট দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন রাম রহিম। এরপর দুটি মামলায় ১০ বছর করে মোট ২০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2wODrHe
September 09, 2017 at 08:33PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.