সুরমা টাইমস ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
বুধবার (০৬ই সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্বিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে যোগদান পত্রে স্বাক্ষর করে এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি।
উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে সকাল ৯টার দিকে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কক্ষে বসেন গত বছর থেকে এই পদে দায়িত্ব পালন করে আসা ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের এই শিক্ষক।
পরে সোয়া ৯টার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ে গিয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামানের কাছ থেকে যোগদানপত্র নিয়ে তাতে স্বাক্ষর করেন অধ্যাপক আখতারুজ্জামান।
দায়িত্ব নেওয়ার পর সকাল ১০টার দিকে উপাচার্য কার্যালয়ের পাশে পুরাতন সিনেট ভবনে (সম্মেলন কক্ষ) উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
সেখানে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে নতুন উপাচার্য বলেন- “বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতি অনুযায়ী, বিদায়ী ও নতুন নিয়োগ পাওয়া উপাচার্যের উপস্থিতিতে দায়িত্ব হস্তান্তর হয়ে থাকে। বিদায়ী উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সময় সমন্বয় হয়নি।
“তা ছাড়া নিয়োগের প্রজ্ঞাপনে অবিলম্বে আদেশ কার্যকর করতে বলা হয়েছে। তাই দ্রুত যোগদান করাই মহামান্য আচার্যের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধা।”
ভোট ছাড়াই উপাচার্য প্যানেল চূড়ান্ত করা নিয়ে সমালোচনা এবং কয়েকজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েটের করা মামলায় ওই প্যানেলের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাওয়ার এক মাসের মাথায় গত সোমবার অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়- উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দিয়েছেন।
এ নিয়ে সরকারের প্রজ্ঞাপন জারির সময় গ্রামের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায় ছিলেন অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।
এ প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমি গ্রামে ছিলাম, আসতে দেরি হয়েছিল। কালকে বিকালে এসে যোগ দিতে পারেনি। তবে মহামান্যের আদেশে অবিলম্বে যোগদানের কথা বলা হয়েছে। তাই যোগদান করলাম। দুঃখিত, অনেক দেরি হয়েছে।”
অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন- “আমার মূল কাজটাই হবে সকলকে ওউন করা। এখানে কে কোনপন্থি এগুলো উপাচার্যের বিবেচ্য বিষয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরের সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্যিক মর্যাদার ব্যাপারে সবাই যেন আমরা সচেতন থাকি, সকলের দায়িত্ব যেন যথাযথ পালন করি সেটা চাইব।
“জাতির জনকের একটি কথা আছে, তিনি যখন জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন করছিলেন, বলেছিলেন ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’। আমরা যেন এই নীতিটি অক্ষুণ্ন রাখি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে পূর্ববর্তী উপাচার্যদের নেওয়া পদক্ষেপ সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলেন নতুন উপাচার্য।
তিনি বলেন- “আগে যারা কাজ করেছেন, এটি তারই একটা ধারাবাহিকতা। ক্রমান্বয়ে কিভাবে ভালোর দিকে যাওয়া যায়, সে প্রয়াস থাকবে। সব সময় লক্ষ্য থাকবে, ফ্রম ব্যাক টু ওরস না হয়ে যেন গুড টু ব্যাটার যেতে পারি।”
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে দায়িত্ব পালনের সময় উদ্যোগ নেবেন কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, “ডাকসুর বিষয়টি একক কোনো সিদ্ধান্তে হয় না।
“এটি ব্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো অংশীজনের সিদ্ধান্তের বিষয়। তারপরও কোথাও না কোথাও থেকে তো এর উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা হয়তো সবার সঙ্গে একটা সমন্বয়কের ভূমিকা রাখব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান বাড়াতে কোনো ফান্ড গঠন করবেন কিনা জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের গবেষণা যেভাবে এগুনোর কথা, সেভাবে হয়তো হয়নি। তার কারণ আমাদের সীমিত পুজি।
“আমাদের বাজেটের সবচেয়ে বড় অংশটা আসে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে। ফলশ্রুতিতে গবেষণা বাড়াতে আমাদের এখানে অন্য ধরনের একটি সিদ্ধান্ত দরকার হবে।”
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2j3isdP
September 06, 2017 at 09:23PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.