নিজস্ব প্রতিবেদক ● কুমিল্লার আদালতে এসে পরিচয়। তারপর পরকীয়া প্রেম। শেষ পরিণতি খুন। গত ৬ সেপ্টেম্বর দাওয়াত দিয়ে জেলা সদর থেকে তিতাসে নিয়ে গভীর রাতে দাউদকান্দি মেঘনা-গোমতী সেতুর পাশে ট্রলারে উঠিয়ে খুন করে নদীতে ফেলা দেয়া হয়েছিল কামরুল হাসান খন্দকার নামে এক যুবককে। হত্যার শিকার কামরুল জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার নেউরা সৈয়দপুর গ্রামের আবদুর রহমান খন্দকারের ছেলে এবং সে কুমিল্লা ক্লাবের কর্মচারী ছিল।
এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গ্রেফতারকৃত আল-মামুন ও তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে এমনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এদিকে মরদেহের সন্ধানে দাউদকান্দি থানা পুলিশের সহায়তায় কোতয়ালী থানা পুলিশ গত দুইদিন ধরে মেঘনা-গোমতী নদীতে তল্লাশি চালালেও বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের মরদেহের খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ ও আসামিদের জবানবন্দি সূত্রে জানা যায়, জেলার তিতাস উপজেলার ছোলাকান্দি গ্রামের মোশারফ হোসেন মুকুল মেম্বারের ছেলে আসামি আল-মামুনের (৩৫) নামে অস্ত্র, ডাকাতি, ছিনতাইসহ অন্তত ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি দীর্ঘ দিন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। আদালতে তার যেদিন হাজিরা থাকতো সেদিন তার স্ত্রী নার্গিস আক্তার (৩০) তাকে দেখতে আসতো। গত রমজান মাসে নার্গিস তার স্বামী আল-মামুনকে আদালতে দেখতে এসে কামরুল হাসান খন্দকারের (৩৫) সঙ্গে পরিচয় হয়। একপর্যায়ে কামরুল ও নার্গিস শহরের কান্দিরপাড়ে একটি হোটেলে বসে খাওয়া-দাওয়া করে এবং একে অপরের মোবাইল নম্বর নেয়। পরবর্তীতে তাদের মাঝে গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এদিকে নার্গিসকে দিয়ে প্রেমের ফাঁদ পেতে স্থানীয় একটি চক্র বিভিন্ন কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিত। এ চক্রের আরও দুইজন হচ্ছে তিতাসের মেহেদী মামুন ও টুটুল।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, কামরুলকে নার্গিস প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে তিতাসে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর কামরুল ঘরের ভেতর ঢোকার পরে সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা মেহেদী মামুন ও টুটুল তাকে (কামরুল) চড়-থাপ্পর মেরে টাকা দাবি করে। এতে কামরুল তার স্ত্রীকে ফোন করে টাকার জন্য বলে। তারপরও ওইদিন রাতে কামরুলকে বেদম মারধর করা হয়। পরে গভীর রাতে তারা কামরুলকে একটি ট্রলারে ওঠায়। সেখানে পানি চাইলে কামরুলকে নদীর পানি খাওয়ানো হয়। এরপরই সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। ট্রলারে করে তারা দাউদকান্দি ব্রিজ থেকে কিছুটা দক্ষিণে নিয়ে কামরুলকে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়। এর আগে কামরুল নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে তার স্ত্রী সালমা আক্তার কুমিল্লার কোতয়ালী মডেল থানায় একটি জিডি করেন।
কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, মোবাইল ট্র্যাকিং করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আল-মামুন ও নার্গিস আক্তারকে দাউদকান্দি এলাকা থেকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
The post পরকীয়ার ফাঁদে ফেলে যুবক খুন; নদীতে ফেলা হয় লাশ appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2yfEb4S
September 21, 2017 at 08:30PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন