মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: বিশ্বনাথে উপজেলা সদরের নতুন বাজারে একটি দ্বিতল ভবনের দোকান ঘর দখল-পাল্টা দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সালিশ-বৈঠক চলাকালে দখল-পাল্টা দখল নিয়ে কয়েক দিন ধরে ৩টি পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে আসছে। এনিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ মিরেরচর গ্রামের মৃত জবেদ আলীর পুত্র ইউপি মেম্বার রফিক হাসান, উত্তর মিরেরচর গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর পুত্র কামাল হোসেন ও জানাইয়া গ্রামের ইছমাইল আলীর পুত্র জুনাব আলী জুনাই’র মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতল ভবন নিয়ে এই বিরোধ চলছে। রফিক হাসান দাবি করছেন ১৯৭২ ইংরেজী সালে আছমত আলী নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তার পিতা (রফিক হাসান) এই দোকান ঘরটি ক্রয় করেন। তাই খরিদা সূত্রে তিনি বিরুদপূর্ণ দোকান ঘর’সহ দ্বিতল ভবনের মালিক। এদিকে কামাল হোসেন দাবি করছেন এই দোকানটি তার পিতার মৃত আছদ্দর আলীর নামে। তাই উত্তরাধীকার সূত্রে দোকানের মালিক তিনি। অন্যদিকে, জুনাব আলী জুনাই দাবি করছেন কামাল হোসেনের ভাই শামীম মিয়ার কাছ থেকে তিনি কিছুদিন পূর্বে দোকান ঘর’সহ দ্বিতল ভবনটি ক্রয় করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে আরোও জানা গেছে, সম্প্রতি কামাল হোসেনের নিযুক্ত দোকানের ভাড়াটিয়াকে বিদায় করে দোকান ঘরে তালা লাগিয়ে দখলে নেন জুনাব আলী জুনাই। এরপর তা পুনঃরায় দখলে নেন কামাল হোসেন। এনিয়ে তিন পক্ষের মধ্যে উত্তেজেনা বিরাজ করলে নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির নেতৃবৃন্দ’সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি মিমাংশা করার জন্য শালিস-বৈঠকের উদ্যোগ গ্রহন করেন এবং দোকান ঘর জব্ধ করেন। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর শালিস-বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু বৈঠকের পূর্বেই ২৮ আগস্ট কামাল হোসেন দ্বিতল ভবনের ২য় তলায় তালা দিয়ে তা নিজের দখলে নেন। দখলের সংবাদ পেয়ে বনিক সমিতি আবারও তা জব্দ করে। এরপর ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে পুনঃরায় কামাল হোসেন জব্দকৃত ভবনের নিচতলার দোকান কোঠা দখল করেন ও সাইন বোর্ড স্থাপন করেন। জব্দকৃত দোকান ঘর কামাল হোসেন দখল করেছেন এমন সংবাদ পেয়ে শুক্রবার দুপুরে ওই তালা ভেঙ্গে ও সাইন বোর্ড ফেলে দিয়ে দোকান ঘর’সহ দ্বিতল ভবন নিজের দখলে নেন রফিক হাসান। দখল-পাল্টা দখল নিয়ে তিনটি পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে।
এব্যাপারে রফিক হাসান বলেন, আমার পিতা ১৯৭২ সালে ওই দোকান ঘরটি ক্রয় করার পর থেকে কামাল হোসেনের পিতা আছদ্দর আলী ভাড়াটিয়া হিসেবে দোকান পরিচালনা শুরু করেন। কিšুÍ আমার পিতার মৃত্যুর পর আছদ্দর আলী দোকানটি আতœসাৎ করার চেষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে আমরা জানতে পারি ক্রয় করার সূত্রে ওই দোকান ঘর’সহ দ্বিতল ভবনের মালিক আমরা (পরিবার)। আমাদের কাছে দোকানের বৈধ কাগজপত্রও রয়েছে। এব্যাপারে কামাল হোসেন প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার সাথে আমি যোগাযোগ করলে তিনি দেশে ফিরে বিষয়টি সমাধানের আশ্বাসও দেন। আর এখন দেশে এসে নতুন বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শামীম আহমদের ইন্ধনে তিনি (কামাল) বার বার জব্দকৃত দোকান দখল করে আতœসাৎ করার চেষ্টা করছেন। তাই আমি আমার দোকান ঘর’সহ দ্বিতল ভবন নিজের দখলে নিয়েছি।
দখল করার অভিযোগ অস্বীকার করে জুনাব আলী জুনাই বলেন, আমি কামাল হোসেনের ভাই শামীম মিয়ার কাছ থেকে দোকান ঘর’সহ ভবনটি ক্রয় করেছি। তাই আমাকে দোকানের দখল বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্বও শামীমের। আমি কোন ঝামেলায় জড়াতে চাই না।
এব্যাপারে মোবাইল ফোনে কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এব্যাপারে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
নিজের বিরুদ্ধে উত্তাপিত অভিযোগ সঠিক নয় দাবি করে বিশ্বনাথ নতুন বাজার বনিক সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ বলেন, বিষয়টি আপোষ-মিমাংশায় নিস্পত্তি করার জন্য বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শালিসের উদ্যোগে নিয়েছেন এবং দোকান ঘরটি জব্দ করেন। কিন্তু শালিস বৈঠকের পূর্বেই কামাল হোসেন ও রফিক হাসান দখল-পাল্টা দখল করে আইন অমান্য করেছেন।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2wv0RjV
September 03, 2017 at 02:52PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন