নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেট নগরীর মা ও শিশু হাসপাতালের ভূয়া ভৌতিক বিল পরিশোধ না করায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মা-শিশুকে আটকে রাখে। পরে আদালতের নির্দেশে কোতোয়ালি থানা পুলিশ (১০ই অক্টোবর) সোবানীঘাটস্থ হাসপাতালের ৩য় তলার ৩০৯ নং রুম থেকে গৃহবধূ লুবনা বেগম ও নবজাতক কন্যা শিশুকে উদ্ধার করে আদালতে নিয়ে আসে। পরে আদালত লুবনা বেগমের স্বামীর জিম্মায় তাদেরকে দিয়ে দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভিকটিমদেরকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার এসআই হাদিউল ইসলাম। তিনি জানান-আদালতের নির্দেশ পেয়ে পুলিশ হাসপাতাল থেকে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে আদালতে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা: জাকারিয়া আহমদসহ ১০জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেন মৌলভীবাজার কুলাউড়ার মোহনলালের ছেলে চুনু মিয়া। তিনি লুবনা বেগমের স্বামী।
আদালত সূত্রে জানা যায়-স্ত্রীর কষ্টের কথা বিবেচনা করে তাকে সিলেটের মা ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি গৃহবধূ লুবনা বেগমকে ভর্তি করান তার স্বামী চুনু মিয়া। শুরুতে তাকে বলা হয়েছিল, নরমাল ডেলিভারি হবে, ১০/১২ হাজার টাকা বিল আসবে। তিনি রাজি হন। এরপর বলা হয় অস্ত্রোপচার করতে হবে। বিল আসবে ৪২ হাজার টাকা। তাতেও তিনি রাজি হয়ে যান। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চুনু মিয়ার এক মেয়ে সন্তানের জন্ম নেয়। কিন্তু প্রসূতি মাকে একই স্থানে তিনটি অস্ত্রোপচার করে ডাক্তাররা চিরতরে তার মা হওয়ার বাসনা কেড়ে নিয়েছেন। কেটে ফেলা হয়েছে তার গর্ভাশয়।
এক মাকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রেখেও ক্ষান্ত হননি ডাক্তারেরা। ওই কৃষকের হাতে ধরিয়ে দেন ১ লাখ ৯১ হাজার টাকার গলাকাটা বিল। এরপর হাসপাতালের ডাক্তার তাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেন। জমি বিক্রি করে কৃষক ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান। এরপর অবশিষ্ট টাকার জন্য মা ও মেয়ে শিশুকে ওই হাসপাতালেই বন্দি করে রাখা হয়।
এ ঘটনায় মৌলভীবাজার জেলা কুলাউড়া থানার মোহনলাল গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে চুনু মিয়া বাদি হয়ে সোমবার (৯ই অক্টোবর ) সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭ জন ডাক্তারসহ ১০ জনকে আসামি করে মামলা (নং-১৩৫৫) দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন-মা ও শিশু হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা: জাকারিয়া আহমদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: তারেক আহমদ, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ডা: শামসুর রহমান, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ডা: জিয়াউর রহমান, ডিএমডি ডা: মামুন আহমদ, প্রশাসন এডমিনিষ্ট্রেশন ডা: মোর্শেদ আহমদ, অপারেশন ইনচার্জ ডা: শাহ ফাহমিদা সিদ্দিকা পপি, ম্যানেজার পারভেজ আহমদ, সুপার ভাইজার মোর্শেদ আহমদ ও পার্টনার কামাল আহমদ। উল্লেখ্য এর আগেও মা ও শিশু হাসপাতালে ডাক্তারদের দায়িত্বে অবহেলার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে রোগীর স্বজনরা হাসপাতালও ভাংঙ্গচুর করেছেন। গত ১৫ই আগষ্ট মেন্দীবাগের জনৈক কয়েছ মিয়া তার স্ত্রীকে ভর্তি করিয়েছিলেন ওই হাসপাতালে । কিন্তু ডাক্তারদের অবহেলার কারনে তার শিশু মারা যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল ভাংঙ্গচুর করেছিলেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2ygvomA
October 11, 2017 at 09:10PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন