আবু ধাবি, ০২ অক্টোবর- শেষ উইকেটটি নিয়েই ডানা মেলে দিলেন দিলরুয়ান পেরেরা। একই ভাবে দুহাত মেলে ভাসছিলেন দিনেশ চান্দিমালও। যেন থামাথামি নেই! থামলেন রঙ্গনা হেরাথের আলিঙ্গনে। সে কী উচ্ছ্বাস লঙ্কানদের! মাঠের বাইরে সাপোর্ট স্টাফদের উল্লাসও বাঁধনহারা। হঠাৎ অ্যান্টি-ক্লাইম্যাক্স। টিভি রিপ্লে দেখাল, পেরেরার ডেলিভারিটি ছিল নো বল! চরম নাটকীয়তার ম্যাচে আরেক দফা নাটক। হয়ত ওই উইকেট লেখা ছিল আসলে হেরাথের ভাগ্যেই। শেষ উইকেট নিয়ে ইতিহাসের প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে স্পর্শ করলেন ৪০০ উইকেট। প্রথমবার জয়োল্লাসের খানিক পর আবার উল্লাসে মাতল শ্রীলঙ্কা। এবার পাকিস্তানের রিভিউ আটকাতে পারল না শ্রীলঙ্কার জয়। আবু ধাবি টেস্টে রোমাঞ্চ, নাটকীয়তা আর উত্তেজনায় ঠাসা শেষ দিনে সোমবার পাকিস্তানকে ২১ রানে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। এগিয়ে গেল দুই ম্যাচ সিরিজে। ১৬ উইকেট পতনের দিনে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য ছিল মাত্র ১৩৬। কিন্তু রান তাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং। গুটিয়ে যায় তারা ১১৪ রানেই। লঙ্কানদের জয়ের নায়ক সেই হেরাথ। অসাধারণ বোলিংয়ে শেষ ইনিংসে নিয়েছেন ৬ উইকেট। ম্যাচে ১১ উইকেটে পূর্ণ করেছেন ৪০০ টেস্ট উইকেট। ছুঁয়েছেন প্রথম বোলার হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০০ উইকেটের মাইলফলকও। ম্যাচের বেশিরভাগ জুড়েই মন্থর গতিতে এগোতে থাকা ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় চতুর্থ দিন বিকেলে। শেষ সেশনে শ্রীলঙ্কা হারায় ৪ উইকেট। সেই নাটক পূর্ণতা পেল যেন শেষ দিনে। নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রানেই গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এই রান পর্যন্তও তারা যেতে পারে নিরোশান ডিকভেলা অপরাজিত ৪০ রানের ইনিংসটি খেলতে পেরেছিলেন বলে। ইয়াসির শাহ আরও একবার নেন ৫ উইকেট। ২৭ টেস্টের ক্যারিয়ারে তার দ্বাদশ ৫ উইকেট। উইকেট তখন স্পিনারদের পক্ষে। ১৩৬ রানের লক্ষ্য তবু কঠিন হওয়ার কথা ছিল না। কঠিন বানিয়ে ছাড়লেন হেরাথ ও দিলরুয়ান পেরেরা। দুই পাশ থেকে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন শ্রীলঙ্কার দুই স্পিনার। মাঝে আজহার আলির গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়েছেন সুরঙ্গা লাকমল। ৩৬ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েছিলেন হারিস সোহেল ও সরফরাজ আহমেদ। যথারীতি শ্রীলঙ্কার ত্রাতা হেরাথ। সরফরাজকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৪২ রানের জুটি। বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে তখন হারিস সোহেল। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের লিড পাওয়ার নায়ক অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান দ্বিতীয় ইনিংসেও খেলছিলেন দারুণ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তাকে ফেরার পেরেরা। শ্রীলঙ্কা জয়ের গন্ধ পায় তখনই। শেষটা হলো হেরাথের হাতে। শেষের আগে পেরেরার সেই নো-বল নাটক। ম্যাচ শেষে লঙ্কানদের তাতে মন খারাপের কারণ নেই। অসাধারণ জয় বলেই হয়ত একই জয় দুবার উদযাপনের সুযোগ মিলল তাদের! সংক্ষিপ্ত স্কোর: শ্রীলঙ্কা ১৫৪.৫ ওভারে ৪১৯ পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৪২২ শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৬৬.৫ ওভারে ১৩৮ (আগের দিন ৬৯/৪) (মেন্ডিস ১৮, লাকমল ১৩, ডিকভেলা ৪০*, পেরেরা ৬, হেরাথ ০, সান্দাকান ৮, প্রদিপ ০; আমির ০/২৭, আব্বাস ২/২২, ইয়াসির ৫/৫১, হাসান ১/২১, শফিক ১/৭, সোহেল ১/৭)। পাকিস্তান: ৪৭.৪ ওভারে ১১৪ (লক্ষ্য ১৩৬) (মাসুদ ৭, আসলাম ২, আজহার ০, শফিক ২০, বাবর ৩, হারিস ৩৪, সরফরাজ ১৯, হাসান ৮, আমির ৯, ইয়াসির ৬, আব্বাস ০; লাকমল ১/১২, হেরাথ ৬/৪৩, পেরেরা ৩/৪৩, প্রদিপ ০/৪, সান্দাকান ০/৪)। ফল: শ্রীলঙ্কা ২১ রানে জয়ী সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০তে এগিয়ে ম্যান অব দা ম্যাচ: রঙ্গনা হেরাথ আর/১০:১৪/০২ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2yThp3V
October 03, 2017 at 05:52AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন