কাতারে ‘সুরক্ষা বিল’ পাশে উচ্ছসিত প্রবাসীরা

কুমিল্লার বার্তা ডেস্ক ● বিদেশে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিযার্তন নিত্য দিনের ঘটনা। কখনোও মালিক, কখনো এজেন্ট আবার কখনোও নিজ সহকর্মী দ্বারা ঘটেই চলেছে এ ধরণের ঘটনা। প্রবাসী শ্রমিকদের এই আর্তনাদ দীর্ঘ দিনের। বিশ্বের যেসব দেশে বিদেশি শ্রমিকদের আনাগোনা রয়েছে প্রায় সবদেশেই শ্রমিক থেকে শুরু করে প্রবাসী ব্যবসায়ীরা নানা ধরণের হয়রানি আর নির্যাতনের শিকার হয়।

তাই শ্রমিকদের কথা মাথায় রেখে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিক বান্ধব এই দেশটি নতুন বিল পাশ করায় সাড়া ফেলে দিয়েছে সেদেশে প্রায় ২০ লাখ প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে।

এরই মধ্যে দেশে-বিদেশে এ ধরণের বিল পাশ করে দেশটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। কাতারের শ্রমমন্ত্রী ইসা আল-নুয়াইমি জানান, এ তহবিলের মাধ্যমে শ্রমিকদের পাওনা মজুরি নিশ্চিত করা হবে। মন্ত্রী এটিকে ‘শ্রমিকদের সাহায্য এবং বীমা তহবিল’ হিসেবে আখ্যা দেন এবং এটি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবে বলে জানান। আগামী ২০২২ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করতে চলেছে কাতার।

এ মহা আয়োজনকে সামনে রেখে অবকাঠামো নির্মাণে বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মতো দেশ থেকে প্রচুর শ্রমিক সে দেশে কাজ করছেন। কাজের মান বাড়াতে কাজ করতে গিয়ে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ, কাজে ধীরগতি দেখা না দেয় সেজন্য এ ধরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। গত বুধবার দেশটির মন্ত্রিসভা কিছু নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে আছে বিদেশী শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন নিশ্চিত করা, যাতে তারা জীবন চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পায়। এছাড়া যেসব দেশ থেকে কাতারে সবচেয়ে বেশি শ্রমিক কাজ করে, তাদের সঙ্গে সরকার ৩৬টি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা দিয়ে। গত বুধবার কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিবিদদের এক বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বেলজিয়ামভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন (আইটিইউসি) নতুন এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে একে ‘ব্রেকথ্রু’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। আইটিইউসির ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে সংস্থাটির সাধারণ সম্পাদক শারান বারো বলেন, বিদেশী শ্রমিকদের সুরক্ষার জন্য এটি কাতার সরকারের সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এসব উদ্যোগে আইটিইউসির সমর্থন আছে এবং আশা করা যায়, এটি বাস্তবায়নের সময় আইএলও তাদের কারিগরি দক্ষতা দিয়ে সাহায্য করবে। অনেক কিছুই এখনো করা বাকি, তবে এসব উদ্যোগ শ্রমিকদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণের পথ খুলে দিয়েছে এবং তাদের জীবন ও জীবিকার সুরক্ষা প্রদান করে।

উল্লেখ্য, গত বছর কাতার সরকার একটি নতুন শ্রম আইনের সূচনা করে, যেটির লক্ষ্য ছিল বিদেশী শ্রমিকদের চাকরি পরিবর্তন এবং দেশত্যাগ সহজ করছে। এ আইনের মাধ্যমে বর্তমানের কেফালা আইনকে সহজ করার উদ্যোগ নেয়া হয়। কেফালা আইনে একজন বিদেশী শ্রমিককে বিদেশ ভ্রমণ বা চাকরি পরিবর্তনের জন্য নিয়োগকর্তার অনুমতি নিতে হয়। নতুন আইনে রাষ্ট্র পরিচালিত ‘নালিশ কমিটি’ গঠন করা হয়, যেখানে মালিক দেশত্যাগের অনুমতি না দিলে শ্রমিকরা নালিশ জানাতে পারেন।

এছাড়া শ্রমিকদের বেতন প্রদানে বিলম্ব ঠেকানোর জন্য ২০১৫ সালে বেতন সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। এর আওতায় কোম্পানিগুলোকে সব শ্রমিকের বেতন ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে দেশটির একটি প্রতিষ্ঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর করতে হয়।

The post কাতারে ‘সুরক্ষা বিল’ পাশে উচ্ছসিত প্রবাসীরা appeared first on Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা.



from Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা http://ift.tt/2zPwdjU

October 29, 2017 at 10:35PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top