সুরমা টাইমস ডেস্ক:: নির্বাচনী সংলাপকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূয়সী প্রশংসা করায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার কড়া সমালোচনা করেছে যুবলীগ। দলটির চেয়ারম্যান এটাকে ‘নতুন ভূত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। প্রধান বিচারপতির পর সিইসিকেও ভূতে পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।
সোমবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বিএনপির মুখপাত্রের মতো কথা বলেছেন। বিএনপির সঙ্গে সংলাপে সিইসির বক্তব্যকে অসাংবিধানিক ও অসত্য। সিইসির এই বক্তব্যের কারণে তার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।’ অবিলম্বে তিনি সিইসির বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল রবিবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জিয়াউর রহমানকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা বলে উল্লেখ করেন। এছাড়াও সূচনা বক্তব্যে তিনি বিএনপিকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দেন। তিনি বলেন, বিএনপি সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করেছে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় করেছে, দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষার সুযোগ দিয়েছে। র্যাব, দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, আইন কমিশন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সীমা ৩০ বছর করেছে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিশ্চিতভাবেই বিএনপিকে খুশি করতে এবং বিএনপির ‘আস্থা’অর্জনের জন্য এমন অযাচিত, অপ্রাসঙ্গিক স্তুতি করেছেন। কিন্তু এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি শুধু মিথ্যাচার করেননি, ইতিহাস বিকৃতি এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো দলকে তৈলমর্দন জরুরি নয়।’
ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘সিইসি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন সেগুলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে মোটেও সম্পর্কিত নয়। বাংলাদেশের সংস্কৃতি হলো, নিরপেক্ষতা প্রমাণের জন্য হয় আওয়ামী লীগকে গালি দিতে হবে অথবা বিএনপিকে প্রশংসা করতে হবে। এক শ্রেণির সুশীল ৭৫ এর ১৫ই আগস্টের পর জাতির ওপর এই ভারসাম্য তত্ত্বের ভূত চাপিয়েছিল।’
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘কিছু চেয়ারে এখনো পাকিস্তানি ভূতের আচড় রয়ে গেছে। ওই সব ‘মহান ব্যক্তি’ চেয়ারে বসে অনেক জ্ঞানবিবর্জিত কথা বলেন। চেয়ারলোভীরা নিজেকে ঈশ্বরের পরেই ক্ষমতাবান মনে করেন। আর তাঁর ক্ষমতা জাহির করার জন্য তিনি নিরপেক্ষতায় মুখোশ আঁটেন মুখে। তখন তিনি নন, কথা বলে ‘ভূত’। নায়ক হওয়ার জন্য ইতিহাস বিকৃতি এবং মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে নিজেই খলনায়কে পরিণত হন।’
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে একরকম ভূতে পেয়েছিল। এজন্য তিনি ষোড়শ সংশোধনীর রায়ে বলেছিলেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ কারও একক নেতৃত্বে হয়নি। এবার ভূতে পেয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে। এজন্য তিনি জিয়াকে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা বলেছেন। জিয়া যদি বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠাতা হন তাহলে জাতির পিতা কি গণতন্ত্রের হত্যাকারী? মি. হুদার মতে গণতন্ত্রের ঘাতক কে ছিলেন? বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে কি তাহলে হ্যাঁ না ভোটের প্রহসন? বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঘাতক, লুটেরা, গণহত্যাকারীদের রাজনীতির অধিকার? বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে ক্যান্টনমেন্টে রাজনৈতিক দলের জন্মগ্রহণ? বহুদলীয় গণতন্ত্র মানে সামরিক পোশাক পরে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল? তাহলে জনাব নুরুল হুদা কি নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন না বলাই বাহুল্য।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2ysP9aS
October 16, 2017 at 11:28PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন