আন্দিজ পর্বতমালার ওপরে শেষ ভাগ্য পরীক্ষা দিতে ইতোমধ্যেই পৌঁছে গেছেন লিওনেল মেসি অ্যান্ড কোং। জীবনে এর চেয়ে আর কঠিন কোনো পরীক্ষায় পাঁচবারের বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি পড়েছেন কি না সন্দেহ। একটি বিশ্বকাপের ফাইনাল কিংবা দুটি কোপা আমেরিকার ফাইনালও হয়তো এর চেয়ে সহজ ছিল মেসির কাছে। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের এই ম্যাচ যতটা না কঠিন। বিশ্বকাপই খেলতে পারবেন না লিওনেল মেসি- কথাটা শুনতেই যেন কেমন লাগার বিষয় সবার কাছে। রাশিয়া বিশ্বকাপ যদি মেসিকে ছাড়াই মাঠে গড়ায়, তাহলে অর্ধেক আকর্ষণই কমে যাবে। কিন্তু সেই বাস্তবতার দিকেই এগিয়ে চলেছে আগামী বিশ্বকাপের ভাগ্য। আর মাত্র একটি ম্যাচ। এই ম্যাচের পরই সব নির্ধারণ হয়ে যাবে। মেসির দেশ বিশ্বকাপে খেলতে পারবে কি পারবে না। মেসিদের শেষভাগ্য এখন পুরোপুরি ইকুয়েডর আর কিছু ইকুয়েশনের ওপর নির্ভর করছে। শেষ ম্যাচে ইকুয়েডরকে তো হারাতেই হবে। সঙ্গে উরুগুয়ে, চিলি, কলম্বিয়া এবং পেরুর ম্যাচগুলোর দিকেও তাকিয়ে থাকতে হবে মেসিদের। তবে, এটা ঠিক, জিতলেই অন্য ইকুয়েশনের হয়তো খুব বেশি প্রয়োজন হবে না। সেরা চারের মধ্যে থেকেই বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করতে পারবে আর্জেন্টিনা। কিন্তু প্রশ্ন হলো কাজটা কতটা সহজ কিংবা কঠিন? খেলাটা ইকুয়েডরের মাঠে। পয়েন্ট টেবিলে এই দেশটির অবস্থান আট নম্বরে। বিশ্বকাপে খেলার আর চান্স নেই। কিন্তু ইকুয়েডরের কাছেই তো হেরে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু করতে হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। নিজেদের মাটিতেই এই দেশটির কাছে ০-২ গোলে হেরে গিয়েছিল মেসিহীন আর্জেন্টিনা। এবার সেই দেশটিরই রাজধানী কুইটোতে গিয়ে খেলতে হবে লিওনেল মেসিদের। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে যে শহরটির উচ্চতা ৯ হাজার ৩৫০ ফুট। তবে এস্টাডিও অলিম্পিকো আতাহুয়ালপা স্টেডিয়ামটির উচ্চতা প্রায় দেড়শ ফুট কম। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ১২৭ ফুট ওপরে। পয়েন্ট টেবিলের ৬ষ্ঠতম স্থানে থেকে চতুর্থ স্থানে উঠে আসতে হবে মেসিদের। এত উচ্চতায়, যেখানে কিছুক্ষণ দৌড়ানোর পরই দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হবে, সেখানে কিভাবে মেসিরা ইকুয়েডরকে হারাবে, সেটাই এখন সবচেয়ে চিন্তার বিষয়! এডগার্ডো বাউজাকে বরখাস্ত করে লাতিন আমেরিকার অন্যতম সফল কোচ হোর্হে সাম্পাওলিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল আর্জেন্টিনাকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার জন্য। কিন্তু তার অধীনে তিনটি ম্যাচের কোনোটিতেই জিততে পারল না আর্জেন্টিনা। সবগুলোতেই ড্র করে পয়েন্ট হারাতে হয়েছিল। সর্বশেষ পেরুর বিপক্ষে নিজেদের মাঠে মেসিরা নেমেছিল বিশ্বকাপে নিজেদের স্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। কিন্তু ওই ম্যাচেও একের পর এক মিসের মহড়া দিয়ে ফিরতে হয়েছিল গোলশূন্য ড্র নিয়ে। ওই ড্রয়ের পরই শঙ্কা দেখা দেয়, ১৯৭০ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপ থেকে আর্জেন্টিনার ছিঁটকে পড়ার। কারণ, লাতিন আমেরিকা থেকে সরাসরি বিশ্বকাপে খেলবে ৪টি দল। পঞ্চম দল প্লে-অফ খেলে বিশ্বকাপের টিকিট কাটার সুযোগ পাবে ওশেনিয়ান চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। আর্জেন্টিনা এখন রয়েছে ৬ নম্বরে। ইকুয়েডরের সঙ্গে যদি কোনোভাবে হোঁচট খায়, তাহলে পঞ্চম স্থান তো দূরে থাক, বিশ্বকাপে খেলার আর কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না তাদের। অতীত ইতিহাস খুব বেশি শঙ্কা জোগাচ্ছে মেসিদের মনে। কারণ, ১৯৬০ সালের পর ইকুয়েডরের মাটিতে একটি মাত্র ম্যাচ জিততে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। ২০০১ সালে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে ২-০ গোলে ইকুয়েডরকে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এরপর আরও চারবার ইকুয়েডরের মাটিতে খেলতে গিয়ে আর্জেন্টিনা হেরেছে দুবার, ড্র করেছে দুবার। জয় একবারও নেই। ২০০৫ এবং ২০০৯ সালে ০-২ গোলে হেরে এসেছিল আর্জেন্টিনা। ২০১৩ সালে দুবার খেলতে গিয়ে একবার ১-১ গোলে এবং আরেকবার ড্র করেছিল গোলশূন্য। এবার মেসিরা কী করবেন? যেখানে মেসির প্রতিপক্ষ ইকুয়েডরের সঙ্গে রয়েছে ৯ হাজার ফুট উচ্চতা। এইটাই সবচেয়ে বড় শঙ্কা দুবারের বিশ্বকাপজয়ীদের। সূত্রঃ জাগো নিউজ২৪.কম আর/০৭:১৪/১০ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2yTPqAE
October 10, 2017 at 01:09PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন