সুুরমা টাইমস ডেস্ক:: সৌভাগ্য ও ধন সম্পদের দেবী কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা আজ। সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব এটি। ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন মঠ-মন্দির ছাড়াও হিন্দুদের প্রতিটি ঘরে ঘরে যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে নানা আয়োজনে পালিত হবে কোজাগরী লক্ষী পূজা।
বাংলাদেশে চান্দ্র আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে অর্থাৎ কোজাগরী পূর্ণিমায় দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। এছাড়া প্রতি বৃহস্পতিবার সধবা স্ত্রীগণ তাদের ঘরে লক্ষ্মী পূজা করে থাকেন।
পঞ্জিকা মতে, পূর্ণিমা তিথি বুধবার রাত ১টা ২২ মিনিট পরে আরম্ভ হয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিট পর ছেড়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যেই লক্ষ্মীপূজার সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে হবে।
গত ৩০শে সেপ্টেম্বর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় পাঁচদিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। দুর্গাপূজার ৪ দিন পরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা। দেবী দুর্গার আগমনে আনন্দময় হয়ে উঠেছিল ধরণী। চিন্ময়ীর বিদায় বার্তা ভুলে আজ আবার আনন্দে মেতে উঠবেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা।
দেবী লক্ষ্মী আসবেন নৌকায় ধন-সম্পদে পূর্ণবতী হয়ে। দেবী লক্ষ্মী শুধু ধনই দেন না। ষোল প্রকার সম্পদ প্রদান করেন তিনি। খ্যাতি, জ্ঞান, সাহস, শক্তি, জয়, সুসন্তান, বীরত্ব, স্বর্ণ, অন্যান্য রত্নরাজি, শস্য, সুখ, বৃদ্ধি, সৌন্দর্য, উচ্চাশা, উচ্চভাবনা, নৈতিকতা, সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন। এককথায় লক্ষ্মীপূজা করলে মানুষ সার্বিকভাবে সুন্দর ও চরিত্রবান হয়।
দেবী লক্ষ্মী দ্বিভূজা। তিনি ছয়টি বিশেষ গুণের দেবী। লক্ষ্মী বিষ্ণুর পত্নী। তাঁর অপর নাম মহালক্ষ্মী। বাহন পেঁচা। লক্ষ্মীপূজা কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা নামেও পরিচিত। কোজাগরী শব্দটি এসেছে ‘কো-জাগর্তি’ থেকে যার অর্থ কে জেগে আছো?
অন্নপূর্ণার আলতা রাঙা পায়ের চিহ্ন আঁকা হবে আজ হিন্দুদের প্রতিটি ঘরে ঘরে। ধন-সম্পদের আশায় নারী-পুরুষেরা উপবাস ব্রত পালন করবেন। আরাধানা করবেন লক্ষ্মী দেবীর। পূজা শেষে দেবেন পুষ্পাঞ্জলী। প্রার্থনা করবেন-এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমারি ঘরে থাক আলো করে।
সনাতন বিশ্বাস মতে, আজ রাতে দেবী লক্ষ্মী ধন-সম্পদ দিতে যে কোন সময় ঘরের দ্বারে এসে ‘কো জাগর্তি’ বলে ডাক দেবেন। জেগে থাকা মানুষেরাই এই ধন লাভের অধিকারী হয় বলে ব্রতকারীরা এজন্য সারারাত জেগে থাকবেন ডাকের প্রতীক্ষায়।
এদিকে লক্ষ্মী পূজা সামনে রেখে গতকাল বুধবার পূজার উপকরণ কিনতে ব্যস্ত সময় পার করেছেন হিন্দু নারী-পুরুষরা। সকাল-রাত পর্যন্ত ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দোকান ও ভাসমান বিক্রেতাদের কাছ থেকে লক্ষ্মী প্রতিমা, ফুল, বেলপাতা, তুলসী, ধানের গোছা, জালা, ছাতা, মলা, মুড়ি, খৈ, মিঠাসহ নানা উপকরণ কিনতে দেখা গেছে। তবে পুরুষ ক্রেতাদের চেয়ে বিবাহিত নারীদের সংখ্যা ছিল বেশি।
দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিভিন্ন ভাসমান বিক্রেতারা পূজার উপকরণের সাজিয়ে বসেছে রাস্তার একপাশে ও বিভিন্ন অলি-গলির সামনে। এসব ভাসমান বিক্রেতাদের সামনে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল বন্দরবাজার এলাকা ঘুরে এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2xYbCu4
October 05, 2017 at 11:11PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন