মুম্বাই, ২৩ অক্টোবর- বিরাট কোহলি নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে দারুণ সেঞ্চুরিতে ভারতকে টানলেন। কিন্তু ম্যাচ শেষে তার মুখে নেই হাসি। ভারত অধিনায়কের কীর্তি আড়াল করে দিল রস টেইলর ও টম ল্যাথামের দুর্দান্ত জুটি আর নিউ জিল্যান্ডের অসাধারণ জয়। দেশের মাটিতে প্রায় অপ্রতিরোধ্য ভারতকে হারিয়ে দারুণভাবে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ওয়ানডেতে রোববার মুম্বাইয়ে ৬ উইকেটের জয়ে কিউরা এগিয়ে গেছে ৩ ম্যাচ সিরিজে। টপ ও মিডল অর্ডারের বিবর্ণ দিনে ১২১ রানের ইনিংস খেলে ভারতকে ২৮০ রানের পুঁজি এনে দিয়েছিলেন কোহলি। রান তাড়ায় শুরুটা ভালো না হলেও শেষ পর্যন্ত নিউ জিল্যান্ড জিতেছে এক ওভার বাকি রেখে। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে সবচেয়ে বড় রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড এটিই। ল্যাথাম ও টেলরের ২০০ রানে জুটি যে কোনো উইকেট জুটিতেই এই মাঠের সর্বোচ্চ রান। নিউ জিল্যান্ডের জয়ে আলাদা করে বলতে হবে ট্রেন্ট বোল্টের কথাও। এই বাঁহাতি পেসারই শুরুতে নাড়িয়ে দেন ভারতকে। নতুন বলে আরেক পাশে টিম সাউদি খরুচে হলেও বোল্ট ছিলেন একই সঙ্গে আগ্রাসী ও কিপটে। দুর্দান্ত প্রথম স্পেলেই ভারতে বড় শক্তি দুই ওপেনারকে ফেরান বোল্ট। প্রথম স্পেলে তার বোলিং ফিগার ছিল ৫-১-৭-২! মিডল অর্ডারে দিনেশ কার্তিক, মহেন্দ্র সিং ধোনিরা খানিকটা সঙ্গ দেন কোহলিকে। কিন্তু কেউ থাকতে পারেননি লম্বা সময়। ২৯ রানে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়ে ভারত অধিনায়কই টানেন দলকে। দারুণ দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১১১ বলে। ২০০ ম্যাচেই ৩১ সেঞ্চুরি করে ফেললেন কোহলি। রিকি পন্টিংকে পেছনে ফেলে ওয়ানডে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিয়ানের তালিকায় এককভাবে উঠে এলেন দুইয়ে। ২০০তম ম্যাচে সেঞ্চুরির কীর্তি কোহলির আগে ছিল কেবল একজনেরই, এবি ডি ভিলিয়ার্সের। ১২৫ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১২১ করে কোহলি আউট হন শেষ ওভারে। শেষ দিকে দুটি করে চার ও ছক্কায় ভুবনেশ্বর কুমার করেন ১৫ বলে ২৬। ভারত তোলে ২৮০ রান। রান তাড়ার শুরুটা ভালোই করেছিল নিউ জিল্যান্ড। উদ্বোধনী জুটিতে মার্টিন গাপটিল ও কলিন মানরো তোলেন ৪৮ রান। তবে থিতু হওয়ার পর আউট হন দুজনই। দুই ওপেনারের মাঝে ফিরে যান বড় ভরসা কেন উইলিয়ামসনও। নিউ জিল্যান্ডের রান তখন ৩ উইকেটে ৮০। সেই নড়বড়ে জায়গা থেকেই টেইলর ও ল্যাথামের ঠিক ২০০ রানের ম্যাচ জেতানো জুটি! এমনিতে ওপেনার হলেও স্পিনে দক্ষতার কথা ভেবেই এই সিরিজে টম ল্যাথামকে পাঁচে খেলানোর ঘোষণা আগেই দিয়েছিলেন কিউই কোচ মাইক হেসন। প্রথম ম্যাচেই দারুণ সফল এই পরিকল্পনা। শুরুতে টাইমিং পেতে ধুঁকছিলেন টেইলর। একটু অধৈর্যও হয় উঠছিলেন। কিন্তু ল্যাথাম উইকেটে যাওয়ার পর রানের চাকা সচল করে কমিয়ে দেন টেইলরের চাপ। দুজনে মিলে এগিয়ে নেন দলকে। বড় চ্যালেঞ্জ ছিল যুজবেন্দ্র চেহেল ও কুলদীপ যাদবের স্পিন। কিন্তু দুজনই তাদের সামলেছেন দারুণ দক্ষতায়। পায়ের কাজ ছিল দেখার মত, খেলেছেন সুইপ, প্যাডল সুইপ, রিভার্স সুইপ। এই ম্যাচের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন দুজনই। তবে এদিন করলেন একজন, কাছে গিয়ে আউট হলেন আরেকজন। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ১০২ বলে ১০৩ বলে অপরাজিত ল্যাথাম। তার চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি। চারটি সেঞ্চুরি করলেন চার মহাদেশে! জয়ের জন্য যখন প্রয়োজন ১ রান, টেলর আউট হলেন ৯৫ রান করে। পরের বলেই হেনরি নিকোলসের বাউন্ডারিতে জয়। অসাধারণ অপরাজিত ইনিংসে ম্যাচ সেরা ল্যাথাম। সংক্ষিপ্ত স্কোর: ভারত: ৫০ ওভারে ২৮০/৮ (রোহিত ২০, ধাওয়ান ৯, কোহলি ১২১, কেদার ১২, কার্তিক ৩৭, ধোনি ২৬, পান্ডিয়া ১৬, ভুবনেশ্বর ২৬, কুলদীপ ০*; সাউদি ৩/৭৩, বোল্ট ৪/৩৫, মিল্ন ০/৬২, স্যান্টনার ১/৪১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০/২৭, মানরো ০/৩৮)। নিউ জিল্যান্ড: ৪৯ ওভারে ২৮৪/৪ (গাপটিল ৩৮, মানরো ২৮, উইলিয়ামসন ৬, টেইলর ৯৫, ল্যাথাম ১০৩*, নিকোলস ৪*; ভুবনেশ্বর ১/৫৬, বুমরাহ ১/৫৬, কুলদীপ ১/৬৪, পান্ডিয়া ১/৪৬, চেহেল ০/৫১)। ফল: নিউ জিল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ১-০তে জয়ী সিরিজ: টম ল্যাথাম সূত্রঃ বিডিনিউজ২৪.কম আর/১২:১৪/২৩ অক্টোবর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2yHjd27
October 23, 2017 at 06:51AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top