সুরমা টাইমস ডেস্ক:: সিলেট নগরীর সোনারপাড়ায় বন্ধুর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নূর মোহাম্মদ (১৮) নামের এক নির্মাণ শ্রমিক খুন হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে সোনারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নূর মোহাম্মদ ময়মনসিংহের জেলার হিম্মতপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের পুত্র। বর্তমানে সে সোনারপাড়া এলাকার ১৯২/২ নং বুলু মিয়ার বাসায় স্বপরিবারে ভাড়াটিয়ে হিসেবে বসবাস করত। নিহত নূরের লাশ ময়না তদন্ত শেষে সোমবার পুলিশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এদিকে সোমবার দুপুরে নিহত নূর মোহাম্মদের মা রহিমা বেগম বাদী হয়ে ২ জনকে আসামী করে শাহপরাণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে তাৎক্ষনিকভাবে রবিবার রাতে নগরীর সোবহানীঘাট থেকে এমদাদ মিয়াকে (১৮) গ্রেফতার করলেও মামলার প্রধান আসামি নজরুল ইসলামকে (১৮) গ্রেফতার করতে পারেনি।
মামলার এজহারনামীয় আসামি নজরুল হোসেন হবিগঞ্জ জেলার মুড়িকরা গ্রামের মৃত মিয়া হোসেনের পুত্র। বর্তমানে সে সোনারপাড়া এলাকার লুতুর মিয়ার ভাড়াটিয়া। এছাড়াও মামলার অপর গ্রেফতারকৃত আসামী এমদাদ মিয়া মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানার বাছিরপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র। সে সোনারপাড়া এলাকার ১৯২/২ নং বাসার বাসিন্দা। গ্রেফতারকৃত এমদাদকে পুলিশ আজ সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত নূর মোহাম্মদ ও হামলাকারী নজরুল হোসেন পেশায় দুজন শ্রমিক থাকায় একি সাথে চলাফেরা করতো। তারা দুজনই বন্ধু ছিলো। ঘটনার সময় নূর মোহাম্মদ,নজরুলসহ আরও কয়েকজন মিলে সোনারপাড়া স্কুলের সামনে আড্ডা দিচ্ছিল। এসময় নূর মোহাম্মদের সাথে কথাকাটাকাটি হয় নজরুলের।
পরে নজরুল ধারালো অস্ত্র দিয়ে নূর মোহাম্মদের পেঠে আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে এমদাদসহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে নূর মোহাম্মদের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে শাহপরাণ থানা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নিহত নূরের ডান দিকের পেটের নীচে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা পুলিশকে জানিয়েছেন।
নজরুল হোসেনের মা মাজেদা খাতুন জানান, আমার ছেলে নজরুল রং মিস্ত্রীর কাজ করতো। সে কোন দলের সাথে জড়িত ছিলো না। শুনছি কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে আমার ছেলেসহ অন্যরা মিলে নূর মোহাম্মদকে মারপিট করছে।
আটক এমদাদের মা আমেনা বেগম জানান, নূর মোহাম্মদরে ছোরা দিয়া মারার পর আমার ছেলে এমদাদ তাকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। কি কারণে এ হত্যাকান্ড ঘটেছে তা জানেন না তিনি।
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানান, নিহত নূরের লাশ ময়না তদন্ত শেষে সোমবার (৩০শে অক্টোবর) পুলিশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জুনিয়র-সিনিয়র দ্বন্দ্বে এ হত্যাকান্ড ঘটে। মামলার প্রধান আসামি নজরুল তাকে বড়ভাই হিসেবে ডাকার জন্য নূরকে নির্দেশ দেয়। কিন্তু নূর তা মানেনি। এরপর ঘটনার দিন গ্রেফতারকৃত এমদাদ নূরকে সোনারপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে আসলে তার উপর তারা হামলা চালায়।
হামলার এক পর্যায়ের নজরুল ছুরি দিয়ে নূরের পেটে আঘাত করে। তিনি আরও জানান- পুলিশ মামলার প্রধান আসামি নজরুল ইসলামকে গ্রেফতার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গ্রেফতারকৃত এমদাদকে সোমবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2gMCTaW
October 30, 2017 at 09:23PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন