তিতাস প্রতিনিধি ● ইউনিয়ন পরিষদ তৃণমূলের জনসাধারনের সবচেয়ে কাছের ও অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলেও কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের ৪টিতেই নেই নিজস্ব কোনো ভবন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় উপজেলার ১নং সাতানী, ৫নং কলাকান্দি, ৬নং ভিটিকান্দি ও ৭ নং নারান্দিয়া ইউনিয়নসহ কোনটাতে নেই কোন নিজস্ব ভবন। ফলে যখন যিনি চেয়ারম্যান হচ্ছেন তার সুবিধা মতো জায়গায় দোকানঘর ও স্কুলেই চলছে পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম।
এসকল ইউনিয়নের স্থানীয় জনসাধারনের সাথে আলাপ করে জানা যায়, মূলত ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা আবার কোথাও ভূমির ব্যবস্থা হলেও ভূমির অবস্থান নিয়ে চেয়ারম্যান ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের মতবিরোধের কারনে ঝুলে আছে ভবন নির্মাণ কার্যক্রম।
১নং সাতানী ইউপির চেয়ারম্যান মো. শামসুল হক সরকার জানান, ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পর প্রায় ২০ বছর ধরে অস্থায়ী কার্যালয়ে চলছে কার্যক্রম। তবে আমার পূর্বতন চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ধন মিয়ার সময়ে কৃষ্ণপুরের একটি স্থানে ভবন নির্মাণের জন্য দরপত্র হয়েছিল এবং ঠিকাদার কাজ শুরু করার জন্য নির্মাণ সামগ্রী এনেও নির্ধারিত স্থান নিয়ে সাতানী গ্রামবাসীর আপত্তির মুখে নির্মাণকাজ স্থগিত হয়। বর্তমানে উচ্চ আদলতে স্থান নির্ধারনের বিষয়টি বিচারাধীন আছে।
৫নং কলাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান মো. হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, ১৯৯২ সালে উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের একাংশ নিয়ে কলাকান্দি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এখানে কোন স্থায়ী ভবন নির্মাণ হয়নি। তবে আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আমার নিজ গ্রাম হারাইকান্দিবাসীর আর্থিক ও সার্বিক সহযোগীতায় জনসাধানের ভোগান্তি লাঘবের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি ২৫ শতক জমি ক্রয় করেছি এবং কোন ধরনের সমস্যা না হলে আমার সময়কালের মধ্যেই এখানে স্থায়ী ভবন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হবে।
৬নং ভিটিকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লা জানান, পুরাতন ভবনটি আনুমানিক ৯০এর দশকে গোমতী নদীর ভাঙনে বিলীন হওয়ার পর থেকেই আর কোন ভবন নির্মাণ হয়নি। বর্তমানে মানিককান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে কার্যক্রম চলছে। তবে কেন স্থায়ী ভবন নির্মাণ হচ্ছেনা তা জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে লেখালেখি করতে বারণ করলেও স্থানীয়রা জানায় মূলত স্থান নির্ধারণ নিয়ে গোমতী নদীর উত্তর পাড়ের ও দক্ষিণ পাড়ের লোকজনের মতপার্থক্যের কারনেই ভবন নির্মাণ সম্ভব হচ্ছেনা।
অপরদিকে ৭নং নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইঞ্জি. সালাউদ্দিন আহমেদ জানান, ওই ইউপির নিজস্ব ভবন থাকলেও ১৯৯২ সালে ইউনিয়নের একাংশ নিয়ে জিয়ারকান্দি ইউনিয়ন গঠিত হওয়ার পর ভবনটি জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের আওতায় চলে গেলে আর কোনো স্থায়ী ভবন নির্মাণ হয়নি। এবং ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সেলিমের সহযোগীতায় আসমানীয়া বাজারে ভবন নির্মাণের জন্য জমি নির্ধারণ করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ে পাঠালে কার্যক্রম অনেকদূর এগিয়েও যায় এবং ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তৎকালীন সময়ে একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে আমার পরিষদের ৩/৪জন ইউপি সদস্যের আপত্তির মুখে কাজ স্থগিত হয়ে যায়। তবে আমি গত ইউপি নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছি এবং আমার সময়কালের মধ্যেই ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করবো।
এই বিষয়ে তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি তাই এখনো সবকিছু অবগত নই। তবে যেসব ইউপিতে নিজস্ব ভবন নেই ওইসব ইউপিতে যেন দ্রুত স্থায়ী ভবন নির্মাণ করা যায় তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে খুব সহসাই আমি কথা বলবো এবং ভবন নির্মাণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
The post ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলে দোকানঘর ও স্কুলে appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2kpRjm7
October 05, 2017 at 07:30PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন