গ্রেপ্তারের দাবি ও মু্খ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে চেয়ে প্রতিবাদ সভা

কলকাতা, ১৩ অক্টোবরঃ প্রায় শ’পাঁচেক দর্শকের উপস্থিতিতে একটি প্রতিবাদ সভায় কাঁপল অ্যাকাডেমি প্রেক্ষাগৃহের বাইরে ‘রাণুছায়া মঞ্চ’।

বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব ছাড়াও এখানে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য সাধারণ নাট্যোমোদী মানুষ এবং সে দিনের প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজন।

প্রত্যেকের দাবি, বর্ধমান ভবনে নাট্য প্রশিক্ষণ শিবিরে যৌন হেনস্তা ও মদ্যপানের দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক প্রেমাংশু রায়কে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। তার সঙ্গে সেই শিবিরে অন্য প্রশিক্ষকদের ভূমিকা নিয়েও নানা প্রশ্ন উঠল। বারবার ধিক্কারের স্লোগান উঠল মঞ্চ থেকে। তবে তার মধ্যেই অনেকে এও স্মরণ করিয়ে দিলেন, প্রেমাংশু রায় কোনও ব্যক্তির নাম নয়, এটা একটা ‘সিনড্রম’, রুখে দাঁড়াতে হবে তার বিরুদ্ধে।

নাট্যকর্মী খেয়ালী দস্তিদার বললেন, এই প্রতিবাদ লাগাতার চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন। যে জন্য তিনি একটি স্থায়ী ‘মঞ্চ’ গড়ে তোলার দাবিও তুললেন।

নাট্যসংগঠক ও অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত আবার বললেন, ‘এই ঘটনায় আমি বিস্মিত নই। আশঙ্কা আমি আগেই করেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, যে ভাবে রাতের দিকে এই অ্যাকাডেমির বাইরে মদ-গাঁজার আসর বসে, আগামী সময়ে না এখানেই কিছু ঘটে যায়!

বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব প্রবীর গুহ অনেকের সঙ্গে এও মন্তব্য করলেন, ‘এই প্রেমাংশু রায়ের মতো লোকদের কারা প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেয়? বাংলা থিয়েটারে কি নাট্য-প্রশিক্ষক কম পড়িয়াছে?’

অপর এক নাট্য-কর্মী সীমা মুখোপাধ্যায় অবিলম্বে প্রেমাংশু রায়ের নামে এফআইআর করার দাবি তুললেন। যদিও অনেকেই আবার বললেন, ঘটনাটির জন্য আদালত বা পুলিশের তরফে সুয়োমোটো পদক্ষেপ নিয়ে প্রেমাংশু রায়কে গ্রেপ্তার করা যেতে পারত।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে, আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এফআইআর-এর একটি বয়ান তৈরি হয়েছে। আগামীকাল সেটি স্বাক্ষরের জন্য প্রশিক্ষণ শিবিরে উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের কাছে পাঠানো হবে। সব্যসাচীবাবু অবশ্য বলেন, এতেও কাজ না হলে ২৩ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট খুললেই পিটিশন জমা দেওয়া হবে। তাঁর অভিযোগ, উচ্চ ন্যায়াদলতের নির্দেশ মতো ‘বিশাখা গাইড লাইন’ না মেনে এই কর্মশিবির কী করে বসে? কেন একজনও মহিলা প্রশিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না?

এই ঘটনাটিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের দাবি তুললেন এক নাট্যকর্মী। সঙ্গে এও শোনা গেল, প্রশিক্ষণ শিবিরটি নাকি ‘মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণা’ বলে প্রচার করা হয়েছিল।

প্রেমাংশু রায় গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত এক নাট্যকর্মী তাঁর বক্তব্যে অনশনে বসার কথা বলেছিলেন। জানা গিয়েছে, অন্যদের হস্তক্ষেপে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার থেকে তাঁকে আপাতত বিরত করা হয়েছে।



from Uttarbanga Sambad | Largest Selling Bengali News paper in North Bengal http://ift.tt/2yiZCDA

October 13, 2017 at 08:45PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top