এ কে আজাদ, চাঁদপুর : ঢাকা-বরিশাল রুটে দ্রুতগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ গ্রীন লাইন-২ চাঁদপুর মেঘনা মোহনা অতিক্রম করার সময় প্রচন্ড ঢেউয়ের কারনে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না থাকলেও লঞ্চটিকে চাঁদপুর স্টিমারঘাটে লঙ্গর করে রাখা হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টার সময় লঞ্চটি ঢাকা থেকে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বরিশালে একটা ত্রিশ মিনিটে পৌঁছার কথা থাকলেও পথিমধ্যে বেলা সাড়ে ১১টায় চাঁদপুর ত্রিনদী মোহনার অংশে এসে ঢেউয়ের কবলে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। অল্পের জন্যে রক্ষা পেয়েছে ৩ শতাধিক যাত্রী। প্রত্যক্ষদর্শী লঞ্চযাত্রী মুহাম্মদ ইমরান জানায়, প্রচন্ড বাতাসে বিকট শব্দে প্রথমে লঞ্চের সামনের অংশের গ্লাস ফেটে চৌচির হয়ে যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই লক ভেঙ্গে প্রধান গেটটি খুলে যায়। এতে গেটটি আর বন্ধ করা সম্ভব হয়নি এবং প্রচন্ড ঢেউয়ে লঞ্চের ভেতরে পানি প্রবেশ করতে থাকে। এ পরিস্থিতিতে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার দিতে থাকে। তৎক্ষণে লঞ্চটি চাঁদপুর ত্রিনদী মোহনা পেরিয়ে হরিণা, ফেরিঘাট এলাকা পার হচ্ছিল। যাত্রীদের চিৎকারে লঞ্চটিকে হরিণা থেকে পুণরায় ঘুরিয়ে চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে এনে লঙ্গর করে রাখা হয়েছে। এদিকে লঞ্চের বেশ কিছু যাত্রী বিভিন্নভাবে তাঁর নিজ গন্তব্যে চলে গেছে। বাকী প্রায় দেড় শতাধিক এখনো লঞ্চে আছেন। তাদের মধ্যে লঞ্চের যাত্রী আব্দুর শুক্কুর জানায়, আমরা লঞ্চে এখনো আছি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত আমরা লঞ্চ ছাড়তে দিবো না। এ ব্যাপারে লঞ্চটির মাস্টার ফরিদুল ইসলাম জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারনে লঞ্চ না ছাড়ার সরকারী কোন নির্দেশনা আমরা পাইনি। এ জন্য ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে আমরা রওনা হই। দুর্ঘটনার ব্যাপারে তিনি বলেন, চাঁদপুরের মোহনায় আসার কিছুক্ষণ আগে থেকেই নদীতে প্রচন্ড ঢেউ অনুভব করছিলাম। হরিণা এলাকায় যাওয়ার পর লঞ্চের দরজা খোলে পানি প্রবেশ করলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। আমি লঞ্চটিকে নিয়ে সামনে না এগিয়ে পুণরায় পিছনের দিকে চাঁদপুর ঘাটে ভিড়িয়ে রাখি। চাঁদপুরে আসার পর প্রশাসন ও ভিআইডাব্লিউটি’র কর্মকর্তাদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি। আবহাওয়া অনুকূলে আসার সাথে সাথেই আমরা বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা হবো। এ ব্যাপারে শনিবার বিকেলে চাঁদপুর বন্দর ও পরিবহন কর্র্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গ্রিন লাইন-২ চাঁদপুর ঘাটে আছে। তবে তারা ত্রুটি দূর করতে পারলে আজকেই বরিশালের উদ্দেশ্যে চলে যাবে। বর্তমানে লঞ্চটি চাঁদপুর স্টিমার ঘাটে অবস্থান করছে। যাত্রীরা কেউ বাইরে এবং ভিতরে রয়েছে। প্রসঙ্গত, এমভি গ্রীন লাইন-২ ও এমভি গ্রীন লাইন-৩ এ জাহাজ দুটি বিমানের মত করে তৈরি করা হয়েছে। সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক এ জাহাজে দুটি মাত্র ৫ ঘন্টায় যাত্রীদেরকে ঢাকা থেকে বরিশাল পৌঁছে দিতে পারে। এ জাহাজে একদিনের মধ্যেই বরিশাল থেকে ঢাকা এসে আবার বরিশালে ফেরা সম্ভব হয়। দুটি শ্রেণীতে মোট ৬শ’ জন করে যাত্রী বহনে সক্ষম। আসন ব্যবস্থা ক্যাটাম্যারান টাইপের ব্রিটিশ এয়ারলাইন্সের বিমানের মতো চেয়ার সিট।
from ঢাকা – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2guolwL
October 21, 2017 at 08:29PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন