ঢাকা, ০৩ অক্টোবর- দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানে হার মেনেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৩২০ রান করলেও পরের ইনিংসে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পরে। লজ্জাজনকভাবে ৯০ রানে অলআউট হয়ে যায়। এমন শ্রীহীন ব্যাটিং নিয়ে চলছে সমালোচনা ও চুলচেড়া বিশ্লেষণ। ওয়ানডে সিরিজ খেলতে দেশ ছাড়ার আগে আজ মাশরাফি বিন মুর্তজাও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তার মতে টেস্টে মাঝে মাঝে এমন দিন আসে। মাশরাফি বলেন, আমার কাছে মনে হয় যে একটা বাজে দিন গেছে। আপনি গেলে বুঝবেন দক্ষিণ আফ্রিকায় ওই কন্ডিশনে আমাদের জন্য কতটা কঠিন হয়। উইকেট যেমনটা আমরা আশা করেছিলাম তার থেকে ভালো ছিল। এটা সত্যি কথা। তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন ওরা বোলিং করে ওদের যে ক্ষমতা সেই অনুযায়ী আমাদের ব্যাটসম্যানদের কাজ এতোটা সহজ না। তারপরও আমাদের একটা পর্যায়ে প্রথম ইনিংসে বিশেষ করে আমাদের অনেক ব্যাটসম্যান সেট হয়ে গিয়েছিল। দূর্ভাগ্যজনকভাবে ওই একটা দুইটা ইনিংস যদি বড় হতো তাহলে আমাদের জন্য খুব ভালো হতো। আর দ্বিতীয় ইনিংসে যেটা হয়েছে ক্রিকেটে মাঝে মাঝে এমন দিন আসে। হুট করে এমন হয়ে যায়। এটা অবশ্যই হতাশাজনক। আমাদের দিক থেকে আরও বেশি হতাশাজনক এই দিক থেকে যারা খেলছে। কিন্তু আমি মনে করি এটা ভুলে গিয়ে সামনের ম্যাচে কিভাবে আরও ভালোভাবে খেলা যায় এবং আমরা যারা বাইরে আছি আমাদের তাদের অনুপ্রাণিত করাই উচিৎ। এর আগে চারবার প্রত্যেকবারই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছি। এবার একটু হলেও উন্নতি আছে। নাই যে তা না। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের চেয়ে অনেক ভালো ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে গিয়েও সংগ্রাম করে করে না তা না। ওদের প্রত্যেকেই প্রতিটা সংবাদ সম্মেলনে বলেছে এই টেস্ট ম্যাচ ড্র হবে তার মানে ড্রেসিং রুমেও এই ধরণের আলোচনা করেছে। যতটুকু আমি বুঝি কারণ আমি এখনও খেলছি। এই মানসিকতা নিয়ে খেললে দিনে দিনে আমাদের খেলাটার উন্নতি হবে। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বোলিং নিয়ে তিনি বলেন, টেস্ট ক্রিকেটের বোলিং সবসময়ই আমাদের জন্য দুশ্চিন্তার ছিল। টেস্ট ক্রিকেটে লম্বা সময় বল করতে হবে পাশাপাশি ব্রেক থ্রু দিতে হবে। সাম্প্রতিক সময়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় বলেন কিংবা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয় বলেন সেখানে স্পিনাররাই নিয়ন্ত্রণ করেছে। তাই টেস্ট ক্রিকেটের বোলিং আসলে রাতারাতি বদলে দেওয়া সম্ভব না। ঘরোয়া ক্রিকেটে যারা বাইরে থাকবে তাদের মন দিয়ে খেলতে হবে। এবং সেটা অনেক লম্বা সময় ধরে। এমন না যে দুই তিন চারটা ম্যাচ ভালো খেলেই আমি টেস্ট ক্রিকেটে ভালো খেলব। ওইখানে ভালো করছি বলে টেস্টেও ভালো করব। এতো সহজ না টেস্ট ক্রিকেট। টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানের জন্য যেমন চ্যালেঞ্জিং তেমনি ব্যাটসম্যানরাও আপনাকে চ্যালেঞ্জ দিবে। তাই এমন না যে রাতারাতি বদলে দেওয়া সম্ভব। তারপরও এরা একবারেই অনভিজ্ঞ, এরা যদি আরও বেশি খেলার সুযোগ পায় অভিজ্ঞ হলে আমার বিশ্বাস এরা ভালো করবে। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, আমরা সরাসরি অ্যাকশনের দিকে তাকাই। চারটা দিন যে ছেলেরা লড়াই করেছে সেটা কিন্তু আমরা কেউ বলছি না। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে কিছু না কিছু ভুলের কারণে ইনিংসটি এমনভাবে ভেঙে পড়েছে। অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশে এসে তিন দিনে হেরে যাচ্ছে। এটাও যদি এনালাইসিস করি। শুধু যদি জয় আর হারটাই দেখি। ঘরে বসে যদি এনালাইসিসই না করতে পারি যে দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কি। তাদের কিসের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে এটা যদি না বুঝতে না পারি তাহলে আমার মনে হয় ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা করা ঠিক না। আমরা যদি ওইভাবে চিন্তা করি ওদের জন্য কঠিন কন্ডিশন, আসলেই কঠিন। হ্যাঁ, এটা ঠিক চার নম্বর ইনিংসে যেটা হয়েছে আমি আপনি কেউই আশা করিনি এটা। এমনটা হওয়ার কথা না। কিন্তু হয়ে গেছে দুঃখজনকভাবে। ক্রিকেটে এমন দিন হয়। এমন ইনিংস কিন্তু ১০ বছর পর হল। ২০০৭ সালে মনে হয় ১০০ এর নিচে আউট হয়েছে। ১০০ তো না আমাদের আশা ছিল ৭ উইকেট নিয়ে শেষ দিনটা পাড় করব। যারা খেলেছে তাদের যদি আপনি প্রশ্ন করেন তারা আমাদের থেকে আপনাদের থেকে আরও বেশি হতাশ। হয়ে গেছে আর এখানেইতো শেষ না আসলে। সামনে ম্যাচ আছে। এই দলটাই কিন্তু টেস্ট ম্যাচ জিতে আমাদের আনন্দ দিয়েছে। আমরা তাদের অনুপ্রাণিত করি। এখান থেকে বসে আরও ভালো কথা কিভাবে বলা যায়, তাদের নিয়ে ইতিবাচক কিছু বলা যায় এটা ব্যক্তিগতভাবে আমি অনুভব করি। অনেকেই বলতে পারে আমি খেলোয়াড় বলে এটা বলছি আসলে তা না। তাদের দরকার ওইটাই। কারণ এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় কি হয়েছে টেস্ট ম্যাচে সেটা আমি আপনি সবাই জানি। সেখান থাকে তারা এখন ভালো খেলছে। দুঃখজনকভাবে একটা দুইটা ঘটনা ঘটেছে যেটা অন্যদল বাংলাদেশে আসে বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরের দল আসে তাদের কিন্তু ঘটছে। আপনাকে ওই জিনিসটাও এনালাইসিস করতে হবে। এআর/২০:৪৫/০৩ অক্টোবর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2kkyQXU
October 04, 2017 at 02:46AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top