জাগোনিউজ২৪ ● ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। অবশ্য বাংলাদেশেও তার জনপ্রিয়তা কম নয়। অভিনয়ের পাশাপাশি চিরায়ত বাঙালি নারীর আবেদন শ্রীলেখাকে করেছে বাংলার পুরুষের কাছে আরাধ্য! ব্যাপারটা তিনিও বেশ উপভোগ করেন। সম্প্রতি শেষ হয়েছে জ্বি বাংলার কমেডি রিয়েলিটি শো ‘মীরাক্কেল-৯’এর চূড়ান্ত পর্ব। তাই কিছুটা অবসর মিলেছে এই আবেদনময়ী তারকার।
আর সেই অবসরের ফাঁকে ভারতের একটি গণমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শ্রীলেখা। মুখ খুলেছেন ব্যক্তিগত অনেক কিছু নিয়েই। সেই সাক্ষাৎকারটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো…
প্রশ্ন: চল্লিশ বসন্ত পেরিয়ে এখনো শ্রীলেখা মিত্রকে নিয়ে একটা বয়সের পুরুষ স্বপ্ন দেখে…
শ্রীলেখা: (প্রশ্ন থামিয়ে দিয়ে) একটা বয়েস? ভুল বলছেন। একটা বয়সের নয়। বিভিন্ন বয়সের পুরুষ আমাকে নিয়ে দিন-রাত স্বপ্ন দেখে। বেশ ভালোই লাগে।
প্রশ্ন: উপভোগ করেন বিষয়টা?
শ্রীলেখা: অবশ্যই। যারা এখন ৩০-এর কোঠায় তেমন অনেকে বলেছেন, তাদের বেড়ে ওঠা, সেক্সুয়ালি নিজেকে জানা, তার মাধ্যম হলাম আমি। এটা আমার কাছে একটা বিরাট কমপ্লিমেন্ট।
প্রশ্ন: এর রহস্যটা কী?
শ্রীলেখা: জানি না। কাউকে কাউকে হয়তো আমি ‘সেক্সাইট’ করি। অনেকে বলেছেন, আমরা রোগা মেয়েদের পছন্দ করি না। কিন্তু এটা নিয়ে আলাদা করে ভাবার সময় নেই। হয়তো আমার মধ্যে একটা কিছু আছে, যার জন্য আমার এতো ফ্যান (হাসিতে রহস্য)। আর দর্শক যদি রাতে আমার স্বপ্ন না দেখেন, তাহলে তো অভিনেত্রী হিসেবে সেটা আমার ফেলিওর।
প্রশ্ন: এতদিন একা রয়েছেন, কোনো বিশেষ বন্ধু হয়নি?
শ্রীলেখা: হয়েছে তো। তবে এই মুহূর্তে ভ্যাকেন্সি চলছে।
প্রশ্ন: সেটা আবার হয় নাকি?
শ্রীলেখা: হুম। এটাই সত্যি। তবে হোয়াটঅ্যাপে আমি চুটিয়ে ফ্লার্ট করি। ফ্লার্ট করাটা তো হেলদি। জানেন, আমার এখন কিছু বাচ্চাকাচ্চা জুটেছে। আর একটা বয়সের পর বোধহয় বাচ্চা ছেলেদের ভালো লাগে। আর আমার বয়সী যারা তাদের প্রবলেমটা হলো, তাদের একটা বউ আছে।
সেই বউকে নিয়ে তারা বোর হয়ে যায়। ব্যাস এবার একটু ছুঁকছুঁকানি। হু হু শ্রীলেখা…হলে ভালোই হত। আমি কেন সেটাতে হাওয়া দিতে যাব? ম্যারেড ম্যান নট ইন্টারেস্টেড।
প্রশ্ন: এই ছুটকো সম্পর্কগুলো কি শরীরী পর্যায়ে যায়?
শ্রীলেখা: (ঠোঁট কামড়ে) এটা তো একেবারে ব্যক্তিগত প্রশ্ন। যেতেই পারে, আবার যেতেই হবে এমনটাও বলছি না। যতই হোক আমি তো এখনও সাধু হয়ে যাইনি।
প্রশ্ন: আপনার কেমন পুরুষ পছন্দ?
শ্রীলেখা: আমার তো একসঙ্গে চার-পাঁচ জন পুরুষ দরকার। যারা বিভিন্ন কাজ করে দেবে। একজন ফাইনান্স দেখবে। কোথায় কোথায় ইনভেস্ট করব সে সব বলে দেবে। আর একজন রোমান্টিক হবে। যে মাঝে মাঝে দু’কলি গান গেয়ে দেবে। কবিতা পড়ে দেবে। কবিতা আর ফিনান্সটা একসঙ্গে খুব চাপের। আর একজন বাজারটা করে দেবে। আমার মেয়ে একবার বলেছিল, মাম্মা যারা কেয়ারিং হবে, তারা হ্যান্ডসাম হবে না, আবার হ্যান্ডসাম হলে কেয়ারিং হবে না কিন্তু। চয়েজ ইজ ইয়োরস্। আসলে একজন পুরুষের মধ্যে তো সব কিছু থাকে না। তাই ছড়িয়ে দাও ভালবাসা।
প্রশ্ন: বিয়ে করবেন আবার?
শ্রীলেখা: না! বিয়ে বা লিভ টুগেদার কোনওটাই নয়। একা থেকে এই স্পেসটা এনজয় করতে শুরু করেছি। যেখানে আমিই আমার বস। আসলে আমার মোমেন্টারি ভালো লাগাটা হতে পারে। আর ভালো লাগলে যা যা হয়, সবই হতে পারে। আমার চারপাশে হয়তো চার-পাঁচজন পুরুষ বন্ধুকে দেখছেন। কিন্তু সত্যিই আমার কেউ নেই।
তার জন্য কোনও হা-হুতাশও নেই। আমার খিদে পেলে খাব, ঘুম পেলে ঘুমোব। আবার শরীরী চাহিদা থাকলে সেটা পূরণ করব। তার জন্য প্রেম হতে হবে, এটার কোনও মানে নেই। একটা অ্যাট্রাকশন, ভালো লাগা যথেষ্ট। আর তাতে দু’জনেরই সায় থাকতে হবে। সত্যি বলতে কি, আমার প্রচুর ফ্যান ফলোয়িং। তারা ব্র্যান্ড শ্রীলেখাকে পছন্দ করে। কিন্তু মানুষ শ্রীলেখাকে ক’জন জানতে চায়? বা তার চোখের কোনের কালিটা ক’জন দেখতে পায়?
প্রশ্ন: আপনি কি যে কোরো সম্পর্ক লিড করতে চান? তাই এত সমস্যা?
শ্রীলেখা: দেখুন, আমি বুদ্ধিমতী। কিন্তু চালাক নই। চালাকিটা আমি জানি না। এটা সত্যি যে, আমার চিরকালই আন্ডারডগদের প্রতি প্রেম হয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমি কখনও কারো কাছে মাথা নোয়াইনি। নিজের শর্তে নিজের মতো করে বাঁচতে ভালবাসি। তাতে আমার কোনো আফসোস নেই। আই লিভ লাইফ অন মাই টার্মস। বিষয়টা আমার এক বান্ধবী আমাকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়েছিল। বলেছিল, তুই আসলে একজন পুরুষ। তোর মধ্যে সুপিরিওরিটি কমপ্লেক্স কাজ করে। সে জন্য তুই কোনো পুরুষের নীচে থাকতে স্বচ্ছন্দ নোস। তবে কোনো সম্পর্ক কন্ট্রোলও করি না।
প্রশ্ন: কোনো একটা সম্পর্ক ফিরে পেতে চান?
শ্রীলেখা: না বোধহয়। আসলে আমি কুইটার নই। সব সম্পর্কেই শেষ অবধি থাকার চেষ্টা করি। কি বলুন তো, সব জিনিসেরই একটা এক্সপায়ারি ডেট থাকে। তবে আরো বয়স হলে হয়তো মেয়ের কথা ভেবে, আমার এক্স হাজবেন্ড যদি কখনো মনে করে, হয়তো একসঙ্গে থাকতে পারি।
সেটা তো সময় বলবে। আমরা তো সেপারেটেড কাপলদের আইডিয়াল রেফারেন্স কেস। যদিও টু বি অনেস্ট আমি নিজেও জানি না, ঠিক কী চাই।
প্রশ্ন: অনস্ক্রিন ন্যুডিটি নিয়ে আপনি কতটা স্বচ্ছন্দ?
শ্রীলেখা: এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি হয়তো ততটা কনফিডেন্ট নই। জানি না, তেমন জোরালো চরিত্র পেলে হয়তো ভেবে দেখব। আমাকে কেউ এখনও তো সেভাবে মোটিভেট করেনি। চোখ বন্ধ করে আমার ডিরেক্টর আর ক্যামেরা পার্সনকে ভরসা করতে পারি এমন জায়গাটা থাকতে হবে।
প্রশ্ন: মেয়ে তো বড় হচ্ছে। ও কি আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড?
শ্রীলেখা: মাইয়া (ঐশী) আমার খুব ভালো বন্ধু। ওর সঙ্গে আমি অনেক কিছু শেয়ার করি, অনেক গল্প হয়। আসলে এই জেনারেশন অনেক বেশি স্ট্রেট ফরোয়ার্ড। তারা ডেটে গেলেও ব্যাগে কন্ডোমটা রাখে। আমার মেয়ে একটু বড় হোক। আমি ওকে সেফ সেক্সের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দেব।
প্রশ্ন: আপনাদের তো একটা গার্লস গ্যাং রয়েছে। সেই আড্ডাটা কতটা রিফ্রেশিং?
শ্রীলেখা: ওফ! (উত্তেজিত হয়ে) আমি, চান্দ্রেয়ী, রূপাঞ্জনা, বিদীপ্তা দারুণ এনজয় করি। বুধবার করে আমরা কফিও খাই, মদও খাই।
প্রশ্ন: চারজনই নায়িকা। কোনও ইগো ক্ল্যাশ হয়নি?
শ্রীলেখা: কসম দিয়ে বলছি- আমাদের মধ্যে কখনো কোনো ইগো ক্ল্যাশ হয়নি। কি বলুন তো, বেসিক কোথাও মিল না থাকলে আমরা বন্ধু হতে পারতাম না।
প্রশ্ন: অবসর কিভাবে কাটে?
শ্রীলেখা: আমার মেয়ে মাইয়া আছে। আর সাত মাসের ছেলে চিন্তামণি (শ্রীলেখার আদরের সারমেয় তখন তার জামা ধরে টানতে ব্যস্ত)। দিব্যি সময় কেটে যায়। আর তা ছাড়া বই পড়া, ছবি দেখা, আমেরিকান সিরিজ, গেম অব থ্রোনস তো আছেই।
প্রশ্ন: আর বিষণ্ণতা সামলান কিভাবে?
শ্রীলেখা: মন খারাপ হলে চকলেট খাই। কিছু না পেলে বিস্কিটের মধ্যে মাখন লাগিয়ে চিনি দিয়েও খেয়ে নিই।
প্রশ্ন: দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কোনো আফসোস রয়েছে?
শ্রীলেখা: ধুর! আমার এ ফ্ল্যাটের ফ্রম পর্দা টু পাপোশ আমি নিজে করেছি। হোক না সেটা কামালগাজিতে। আমার নিজের তো। তা হলে আর রিগ্রেট কোথায়?
প্রশ্ন: কোনো কষ্ট?
শ্রীলেখা: (মন খারাপের হাসি) আমার সেই ১৬-১৭ বছরের মেয়েটার জন্য কষ্ট হয়। ওকে খুব মিস করি। যে জন্মদিনে গোলবাড়ির সামনে বয় ফ্রেন্ডের জন্য ওয়েট করছিল। কিন্তু দু’ঘণ্টা পরেও সেই বন্ধু আসেনি। সেই মেয়েটাকে আমি আর খুঁজে পাই না।
The post আমার একসঙ্গে চার-পাঁচ জন পুরুষ দরকার : শ্রীলেখা appeared first on Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা.
from Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা http://ift.tt/2xO8SCz
October 17, 2017 at 09:43PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন