লন্ডন, ২৫ অক্টোবর- ব্রিটিশ এমপি রুশনারা আলী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর উপর হামলা বন্ধে ব্রিটিশ সরকারকে অবশ্যই মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগের দাবি জানিয়েছেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিতে অত্যন্ত ভয়ানক হিসেবে উল্লেখ করেন বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসন থেকে নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই এমপি। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সরকারের জাতিগত নিধনযজ্ঞের ভয়াবহতায় জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে দুই মাসেরও কম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। রুশনারা আলী বলেন, বার্মার রাখাইন রাজ্যে যা ঘটছে তা খুবই ভয়ানক। এটা মানুষের শেষ করে দিচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে এটা ঘটছে। সাম্প্রতিক হামলায় পাঁচ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন। ব্রিটিশ সরকারের উচিত এসব হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওপর চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখা। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিক সংস্থার মাধ্যমে তাদের ওপর এই চাপ প্রয়োগ করতে হবে। তিনি বলেন, এটা এখনও অব্যাহত রয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক তাদের বাড়িঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী এবং রাখাইন মিলিশিয়ারা তাদের গ্রামগুলো পুড়িয়ে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতি থামার কোনও আলামত দেখা যাচ্ছে না। যতক্ষণ পর্যন্ত না আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বার্মার সরকারের ওপর চাপ বৃদ্ধি না করে; আমার আশঙ্কা ততক্ষণ পর্যন্ত তারা এটি চালিয়ে যাবে। রুশনারা আলী বলেন, ব্রিটিশ সরকার মানবিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকায় রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৪৪০ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা প্রয়োজন। তাদের আরও দীর্ঘমেয়াদে সহায়তা প্রয়োজন। বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের এই এমপি বলেন, বার্মিজ কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ বাড়াতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় অঞ্চলে আমাদের বন্ধু ও সহযোগীদের প্রতি অনুরোধ করছি। এ বিষয়টি হয়তো সংবাদ শিরোনাম হওয়া হ্রাস পাবে। কিন্তু মানুষের জীবন এখনও ধ্বংস হচ্ছে। ব্রিটিশ সরকার সম্প্রতি ডিজাস্টার্স ইমার্জেন্সি কমিটি (ডিইসি) রোহিঙ্গা সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করেছে। একইসঙ্গে তারা চলমান সংকট মোকাবিলায় তহবিল আহ্বান করেছে। রুশনারা আলী বলেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে আমাদের জরুরি সহায়তা পাঠানো একেবারে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে; যেখানে বিপুল সংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষ রয়েছেন। সেখানে অনুদান বা সহায়তা দেওয়া আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সেখানে অরক্ষিত মানুষদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু; যাদের নিয়ে এনজিওগুলো কাজ করছে। তাদের সাহায্যে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। যুক্তরাজ্যের উন্নয়ন সংস্থা ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) বলছে, তারা রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ লাখ পাউন্ডের তহবিল সংগ্রহ করেছে। মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে আসা লোকদের জন্য অনুদানের আবেদন জানিয়েছিল যুক্তরাজ্যের ডিজাস্টার ইমারজেন্সি কমিটি (ডিইসি)। বিভিন্ন দুর্যোগে শীর্ষস্থানীয় দাতব্যসংস্থাগুলো এই কমিটির আওতায় কাজ করে। ওই আবেদনের অংশ হিসেবে সংগৃহীত অর্থের সঙ্গে ডিএফআইডির এই ২০ লাখ পাউন্ড যুক্ত হয়। এর আগে রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাজ্য আরও ৩০ লাখ পাউন্ড দিয়েছিল। সব মিলিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া ছয় লক্ষাধিক রোহিঙ্গার জন্য যুক্তরাজ্য ৯০ লাখ পাউন্ড অর্থ সংগ্রহ করেছে। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন আর/১২:১৪/২৫ অক্টোবর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2yJ16JK
October 25, 2017 at 07:00AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন