কুমিল্লার বার্তা ডেস্ক ● বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী খন্দকার আবু তালহা হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে ওয়ারী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আবদুর রহমান ওরফে মিলন ও বেলাল হোসেন ওরফে সবুজ। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইজ গিয়ার লাইটার চাকু, একটি মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কাপ্তান বাজার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার দু’জন পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা হেটে হেটে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ছিনতাই করতো বলে জানিয়েছেন পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, এ ঘটনায় আরো একজন জড়িত রয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর সকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের রূপসী এলাকা থেকে র্যাব-৩ এর একটি দল এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে জীবন হোসেন ওরফে লিটু নামে একজনকে আটক করে।
গত ৮ অক্টোবর ভোরে রাজধানীর টিকাটুলির মোড়ে বেসরকারি স্কুলের এক শিক্ষিকা ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছে, এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে তালহার। ওই শিক্ষিকাকে বাঁচাতেই ছিনতাইকারীদের ধাওয়া দেন তিনি। একজনকে ধরে কিল ঘুষি মেরে মারাত্মক জখমও করেন। কিন্তু ছিনতাইকারী চক্রের অন্য দু’জন তালহাকে পাল্টা আঘাত করে। দুর্বৃত্তরা ছুরি দিয়ে এলোপাতারি কোপানোর কারণে মৃত্যু হয় তালহার। তিনি ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া শাখার কম্পিউটার সায়েন্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় ছিলেন তালহা। তার বাবা নূর উদ্দিন একজন ব্যবসায়ী। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বরুড়া থানায়। তারা টিকাটুলি কে এম রহমত লেনে থাকতেন।
নিহতের বাবা নুর উদ্দিন জানিয়েছিলেন, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য বাসার সামনে থেকে রিকশায় করে যাত্রাবাড়ি যাচ্ছিলেন তালহা। বাসা থেকে মাত্র ১০০ গজ দূরে যাওয়ার পর কয়েকজন ছিনতাইকারী তার গতিরোধ করে। তাকে ছুরিকাঘাত করে সাথে থাকা মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে সকাল সোয়া ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ওই দিনই নিহতের বাবা বাদি হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে ওয়ারী থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, গ্রেফতার দু’জনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনার সাথে আরো একজন জড়িত রয়েছে। তাকে ধরতে অভিযান চলছে।
ডিসি আরো জানান, নিহত তালহার ১২/৪ কে.এম দাস লেন, টিকাটুলি ওয়ারীর স্থায়ী বাসিন্দা। ঘটনার দিন ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন তালহা। রিকশায় তিনি বাসস্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন। কিছু দূর যেতেই দেখেন একদল ছিনতাইকারী দু’জনের (সানি ও তার বোন সাদিয়া) গতিরোধ করে। ছিনতাইকারীরা তাদের কাছ থেকে মোবাইল ও মানিব্যগ কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল।
তালহা দ্রুত রিকশা থেকে নেমে ছিনতাইকারীদের ধাওয়া করে। পেছন থেকে সানিও তাদের ধাওয়া করে। তালহা ছিনতাইকারীদের লক্ষ্য করে এক টুকরো ইট নিক্ষেপ করে।
চিৎকার করে সে লোকজন জড়ো করে ছিনতাইকারীদের ধরার চেষ্টা করে। কিন্তু ছিনতাইকারীরা নিজেদের বাঁচাতে পেছনে ফিরে তালহাকে এলোপাথারি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আর এতেই নিহত হন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আবু তালহা।
The post কুমিল্লার তালহা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন appeared first on Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা.
from Comillar Barta | দেশ সেরা আঞ্চলিক অনলাইন পত্রিকা http://ift.tt/2gPSB5P
October 18, 2017 at 07:07PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.