প্রথম ম্যাচেই বিশাল ব্যবধানে হারলো বাংলাদেশ

সুরমা টাইমস ডেস্ক:: প্রথম ইনিংসে ৪৯৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ তুলেছিল ৩২০ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট হারানো স্বাগতিকরা ২৪৭ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। ফলে, বাংলাদেশের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ৪২৪ রান। পঞ্চম দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ৩২.৪ ওভারে ৯০ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

তাতে, দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পায় ৩৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। ১-০ তে লিড নিয়েছে ফাফ ডু প্লেসিসের দল।

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৯৬/৩ (১৪৬ ওভার, ডিক্লে.)
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩২০/১০ (৮৯.১ ওভার)
দক্ষিণ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ২৪৭/৬ (৫৬ ওভার)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৯০/১০ (৩২.৪ ওভার)
ফল: দ. আফ্রিকা ৩৩৩ রানে জয়ী (লিড ১-০)

প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪৬ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ৪৯৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে। তেমবা বাভুমা ৩১ এবং দলপতি ফাফ ডু প্লেসিস ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। অভিষেক ইনিংসেই তরুণ ওপেনার মার্কারাম ৯৭ রান করেন। হাশিম আমলা টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম সেঞ্চুরির দেখা পান। ২০০ বলে ১৭টি চার আর একটি ছক্কায় ১৩৭ রান করে শফিউলের বলে মিরাজের তালুবন্দি হন আমলা। মোস্তাফিজের করা দলীয় ১৩১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বিদায় নেন ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস খেলা ডিন এলগার। ব্যক্তিগত ১৯৯ রানের (নবম সেঞ্চুরি) মাথায় মুমিনুলের তালুবন্দি হন তিনি।

তৃতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে গিয়ে ৩২০ রান তুলে নিজেদের প্রথম ইনিংসে অলআউট হয় ৮৯.১ ওভার খেলা বাংলাদেশ। শেষ ২৮ রানে ৫ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সফরকারীদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। ব্যক্তিগত ৭ রান করে কেগিসো রাবাদার লাফিয়ে ওঠা বলে খোঁচা মেরে স্লিপে মার্কারামের তালুবন্দি হন ইমরুল। ইমরুলের পর বিদায় নেন ২৯ বলে চারটি বাউন্ডারিতে ২৫ রান করা লিটন দাস। দলপতি মুশফিকুর রহিম কেশব মহারাজের বলে মার্কারামের তালুবন্দি হওয়ার আগে ৫৭ বলে সাতটি চার আর একটি ছক্কায় ছবি: সংগৃহীত
করেন ৪৪ রান। তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে উইকেটরক্ষক কুইন্টন ডি ককের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। তিনি ৬৭ বলে ছয়টি চার ও একটি ছক্কার সাহায্যে ৪১ করে বিদায় নেন। মুমিনুল হক কেশব মহারাজের বলে মার্কারামের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন। ১৫০ বলে ১২টি বাউন্ডারিতে ৭৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেন মুমিনুল। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বাদশ অর্ধশতক স্পর্শ করেন ১১২ বলে।
ব্যক্তিগত ৩০ রান করে ফেরেন সাব্বির রহমান। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪তম আর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান মাহমুদুল্লাহ। মরনে মরকেলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১২৪ বলে ১১টি চার আর একটি ছক্কায় তিনি করেন ৬৬ রান। তাসকিন ব্যাটিংয়ে নেমে রানআউট হয়ে ফেরেন ০ রানে। কেগিসো রাবাদার বলে এলগারের তালুবন্দি হন ৮ রান করা মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ ব্যাটসম্যান হয়ে ২ রান করা শফিউল স্লিপে মহারাজের বলে আমলার তালুবন্দি হন। মোস্তাফিজ ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। মহারাজ তিনটি, রাবাদা দুটি আর মরনে মরকেল দুটি উইকেট পান।

দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়াদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন মার্কারাম এবং ডিন এলগার। ইনিংসের অষ্টম ওভারে শফিউলের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন এলগার। বিদায়ের আগে করেন ১৮ রান। দলীয় ৩০ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় দ. আফ্রিকা। দলীয় ৩৮ রানের মাথায় স্বাগতিকদের দ্বিতীয় উইকেটের পতন ঘটান মোস্তাফিজ। দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করেন অভিষিক্ত মার্কারামকে। বিদায়ের আগে তিনি করেন ১৫ রান। চতুর্থ দিনের শুরুতে মোস্তাফিজের দারুণ এক কাটারে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি হন হাশিম আমলা। বিদায়ের আগে তিনি ৪৩ বলে করেন ২৮ রান।

এরপর ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করতে থাকা দলপতি ফাফ ডু প্লেসিস ১০১ বলে করেন ৮১ রান। মুমিনুলের বলে এলবির শিকার হয়ে ফেরার আগে তিনি ৬টি চারের সাথে একটি ছক্কা হাঁকান। এটি ছিল মুমিনুলের টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় উইকেট। প্রথমটি পেয়েছিলেন ২০১৩ সালে, চট্টগ্রামে। এরপর নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় উইকেটটি নিতে ফিরিয়ে দেন তেমবা বাভুমাকে। উইকেটের পেছনে লিটনের গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে বাভুমা ১০৭ বলে সাতটি বাউন্ডারিতে করেন ৭১ রান। এক ওভার পরই মুমিনুল ফিরিয়ে দেন কুইন্টন ডি কককে। স্ট্যাম্পিং হয়ে ফেরার আগে তিনি করেন ৮ রান। মুমিনুল তিনটি, মোস্তাফিজ দুটি আর শফিউল একটি করে উইকেট পান।

৪২৪ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ওপেনিংয়ে নামেন তামিম ইকবাল-ইমরুল কায়েস। মরনে মরকেলের করা দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই তামিম বিদায় নেন বোল্ড হয়ে। ওভারের শেষ বলে মুমিনুল বিদায় নেন এলবির ফাঁদে পড়ে। কোনো রান ওঠার আগেই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায় ঘটে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে সেই মরনে মরকেলের বলে দলীয় ৬ রানের মাথায় বোল্ড হয়েও ‘নো বল’ এর কারণে বেঁচে যান মুশফিকুর রহিম। তামিম-মুমিনুলকে হারানোর পর প্রতিরোধ গড়েছিলেন মুশফিক-ইমরুল। ইমরুল ফিরেছেন ডি ককের গ্লাভসে ধরা পড়ে। মহারাজের স্পিনে আউট হওয়ার আগে ৪২ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৩২ রান করেন ইমরুল। দলীয় ৪৯ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ে নেমে শেষ দিনের শুরুতেই বিদায় নেন দলপতি মুশফিকুর রহিম। শেষ দিন ব্যাটিংয়ে নেমে মুশফিক বিদায় নেওয়ার আগে করেন মাত্র ১৬ রান। কেগিসো রাবাদার বলে হাশিম আমলার তালুবন্দি হয়ে আউট হওয়ার আগে চতুর্থ দিনের রানের সাথে কোনো রানই যোগ করতে পারেননি মুশফিক। দলীয় ৫৫ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দলীয় ৬২ রানের মাথায় বিদায় নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। রাবাদার বলে বোল্ড হওয়ার আগে তিনি করেন ৯ রান। আবারো রাবাদার আঘাতে বাংলাদেশ ষষ্ঠ উইকেট হারায়। এলবির ফাঁদে ফেলে এই পেসার ফিরিয়ে দেন ৪ রান করা লিটন দাসকে। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিদায় নেন ৪ রান করা সাব্বির রহমান। কেশব মহারাজের বলে এলবির ফাঁদে পড়েন তিনি। ৬৭ রানেই ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ৪ রান করা তাসকিনকে এলবির ফাঁদে ফেলেন কেশব মহারাজ। দলীয় ৭১ রানেই বাংলাদেশ হারায় ৮ উইকেট। রান আউট হয়ে ফেরেন শফিউল। মিরাজ ১৫ রানে অপরাজিত থাকলেও মোস্তাফিজ বোলার কেশব মহারাজের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার মরনে মরকেল দুটি, কেগিসো রাবাদা তিনটি আর কেশব মহারাজ চারটি করে উইকেট নেন।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2yEG37G

October 02, 2017 at 11:28PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top