সুরমা টাইমস ডেস্ক:: পদ্মার বুকে একেকটি পিলার উঠবে, আর সেই পিলারগুলোর ওপর বসবে স্প্যান। এভাবে একে একে ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসার পরই পূর্ণ রূপ পাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার লক্ষ্যেই গতকাল শনিবার (৩০শে সেপ্টেম্বর) শরীয়তপুরে জাজিরা পয়েন্টে এই সেতুর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে বসানো হয়েছে প্রথম স্প্যান।
এই প্রসঙ্গে ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প’ পরিচালক প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একে একে ৪১ টি স্প্যান বসানো শেষে পদ্মা সেতু পরিপূর্ণ রূপ পাবে। ২০১৮ সালের ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যেই এই সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। চীনসহ ১৪টি দেশের প্রায় ২ হাজার ২০০ জন প্রকৌশলী ও চার হাজারের বেশি শ্রমিকের পরিশ্রমে তিল তিল করে গড়ে উঠছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্প্যান বসানোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। তার সঙ্গে ছিলেন সেতু বিভাগের সিনিয়র সচিব আনোয়ারুল ইসলাম ও ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প’ পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেতুর নির্মাণকাজের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত প্রকৌশলীরা।
সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো প্রসঙ্গে সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোফাজ্জল হোসেন বাংলা বলেন, ‘অস্থায়ীভাবে বেয়ারিংয়ের ওপর এই স্প্যান বসানো হলো। পরে সুবিধাজনক কোনও এক সময়ে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এই কাজের উদ্বোধন করবেন।’
এর আগে ‘পদ্মা সেতু প্রকল্প’ পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রমত্তা পদ্মার প্রবল স্রোত ও ঢেউয়ের সঙ্গে লড়াই করে চলছে নির্মাণযজ্ঞ। নদীর তলদেশে মাটির স্তরের গঠন নিয়ে জটিলতা কাটিয়ে বর্ষায় নদীর প্রবল স্রোতকে উপেক্ষা করে এ নির্মাণযজ্ঞ চলছে। এসব প্রতিকূলতা জয় করে মূল সেতুর পাইলিংয়ের কাজ চলছে পদ্মার দুই পাড়ে।’ জাজিরা অংশে সব পিলারের পাইলিংয়ের মাটি পরীক্ষার কাজও শেষ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম আরও জানান, ‘প্রথম স্প্যানটি অস্থায়ী বেয়ারিংয়ের ওপর বসানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর রঙ হবে সোনালি। তবে রাতে সেতুটিতে জ্বলবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার আদলে লাল ও সবুজ বাতি। সেভাবেই সেট করা হবে বাতি। পদ্মা নদীর পানির স্তর থেকে ৫০ ফুট উঁচুতে বসবে প্রতিটি স্প্যান।
একেকটি স্প্যানের ওজন ২ হাজার ৯০০টন। আর পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।’ তিনি জানান, ‘মূল নদীর মধ্যে ১৫০ মিটার পর পর ৪২টি পিলারের প্রতিটি পিলারে ৬টি করে মোট ২৫২টি পাইল থাকছে। এরমধ্যে ২৮টি পাইলের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে, ৫৮টি পাইলের কাজ শেষ হয়েছে ৫০ ভাগ। এই মুহূর্তে ৫টি স্প্যান বসানোর জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই প্রস্তুত করা স্প্যানের লোড টেস্ট করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের জুনের শেষ দিকে এই সেতুটি দৃশ্যমান করতে স্প্যান বসানোর কথা থাকলেও বিভিন্ন টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। অবশেষে নির্মাণকাজ শুরুর প্রায় দুই বছর পর গতকাল শনিবার (৩০শে সেপ্টেম্বর) উঠলো সেই স্প্যান।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2yPg2n5
October 01, 2017 at 07:38PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন