সুরমা টাইমস ডেস্ক:: বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে টেলিকম খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেছেন, আগামী মার্চে ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাড থেকে এ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা যাবে বলে তারা আশা করছেন।
বুধবার (২৯শে নভেম্বর) বিটিআরসি কার্যালয়ে টেলিকম খাতের সাংবাদিকদের সংগঠন টিআরএনবির নবগঠিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ে এ কথা জানান বিটিআরসি প্রধান।
তিনি বলেন, “ফ্রান্স সফরে গিয়ে আমরা সেটি দেখে এসেছি। নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ হয়েছে।এখন উৎক্ষেপণের অপেক্ষা। মার্চের কোনো এক সময় উৎক্ষেপণ করা হবে বলে আমরা আশা করছি।”
যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ এর ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে গত ১৬ই ডিসেম্বরে ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু হারিকেন আরমায় ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় ওই লঞ্চ প্যাড থেকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ বন্ধ থাকে। ফলে বিভিন্ন দেশের বেশ কয়েকটি স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ আটকে যায়।
এ প্রকল্পের পরিচালক মো. মেজবাহুজ্জামান গত সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ এর সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট রিভিউ (এসআরআর) এবং প্রিলিমিনারি ডিজাইন রিভিউ (পিডিআর) সম্পন্ন হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্টেনা তৈরি এবং কমিউনিকেশন ও সার্ভিস মডিউল তৈরির কাজও শেষ। উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিতে বিভিন্ন পরীক্ষাও সম্পন্ন করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নির্মাণের এই কাজ চলে ফ্রান্সের থালিস এলিনিয়া স্পেস ফ্যাসিলিটিতে। নির্মাণ, পরীক্ষা ও পর্যালোচনা শেষে বিশেষ কার্গো বিমানে করে সেটি লঞ্চ সাইট কেইপ কেনাভেরালে পাঠানোর কথা।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান- কেইপ কেনাভেরালে স্পেসএক্স এর ফ্যাসিলিটি থেকে কোনো কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের আগে লঞ্চ প্যাডের প্রস্তুতিতে দুই মাস সময় লাগে। লঞ্চ ভেহিকল ফ্যালকন-৯ এর ইন্ট্রিগ্রেশনসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শুরু করতে হয় নির্ধারিত তারিখের এক মাস আগে থেকে।
ফলে কযেকটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময় পিছিয়ে যাওয়ার তার প্রভাব পড়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ওপর।
২০১৫ সালের ২১শে অক্টোবর সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এই ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর প্রায় ২ হাজার কোটি টাকায় ‘স্যাটেলাইট সিস্টেম’ কিনতে থালিসের সঙ্গে চুক্তি করে বিটিআরসি।
‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণে অর্থায়নের জন্য হংক সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) সঙ্গে গতবছর প্রায় এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার ঋণচুক্তি করা হয়।
সরকার আশা করছে, এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে বাংলাদেশের।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে, যার ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে এবং বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপনের জন্য গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি স্থানে কাজ চলছে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2nfJxNb
November 29, 2017 at 10:58PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন