পুলিশের কাছে অধরা, আবার মিছিলে সরব!

নিজস্ব প্রতিবেদক:: সিলেটে ফুটপাত দখলকারী ২৬ জনের বিরুদ্ধে গত ১৯শে অক্টোবর আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর ১৮ দিন পর প্রকাশ্যে মিছিল দিয়েছে পরোয়ানভুক্ত ৬ আসামী। তবে প্রকাশ্যে মিছিল দিলেও পুলিশের কাছে কোন তথ্য নেই। মঙ্গলবার দুপুরে প্রকাশ্যে নগরীর বন্দরবাজার এলাকায় মিছিল দিলেও পুলিশ খবর পয়েছেন বিকেলে। পরে বেলা ২টার দিকে পরোনাভুক্ত এক আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত মহানগর হর্কাস কল্যাণ সমবায় সমিতির সহ-সভাপতি মোখলেছুর রহমান মোখলেছ (৫৫) নগরীর শিবগঞ্জ এলাকার আগপাড়া ১০৪ নং বাসার মৃত হারুনুর রশিদের পুত্র। তার বাড়ী হবিগঞ্জে। মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ গ্রেফতারকৃত মোখলেছুর রহমানকে গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করলে বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এদিকে প্রকাশ্যে মিছিল চলাকালে পরোয়ানাভুক্ত একাধিক আসামী উপস্থিত থাকলেও মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করায় পুলিশের কর্মকর্তারা পরোয়ানাভুক্ত হকারদের কাছ থেকে ফয়দা নিচ্ছেন কিনা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলছেন অনেকে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নগরের বন্দরবাজার এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণকে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্বের ঐতিহ্যের দলিল (ওয়াল্ডর্স ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় সিলেট মহানগর হকাস লীগ এর উদ্যোগে আনন্দ মিছিল বের হয়। ওই মিছিলে সামনের সারীতেই উপস্থিত ছিলেন নগরীর হকার নিয়ন্ত্রক পরোয়ানাভুক্ত রকিব আলী, শফিক আহমদ, আতিয়ার রহমান, মো. আবুল বাশার, রুমন ইসলাম।

প্রকাশ্যে মিছিল দিলেও খবর পায়নি পুলিশ। সিলেট কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেনের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরোনাভুক্ত হকাররা মিছিল দিয়েছে বলে আমাদের কাছে কোন তথ্য ছিলো না। একপ্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ফুটপাত দখলকারী পরোয়ানাভুক্ত হকার নেতাদের খুঁজছি কিন্তু তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত ১৭ই মে আদালতে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে নগরীর ফুটপাত দখল নিয়ে একটি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৫শে মে শুনানি শেষে সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো জনস্বার্থে একটি আদেশ দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে। নির্দেশে আদালত ৭ দিনের মধ্যে কোতোয়ালি থানাধীন আদালত প্রাঙ্গণসহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সিটি করপোরেশন কার্যালয়ের আশেপাশের অবৈধ স্থাপনার নেপথ্যে থাকা নিয়ন্ত্রণকারীদের নাম ও ঠিকানা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেন। এরপর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর পক্ষে অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন ‘অবৈধ দখলদারদের তদন্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করতে সময় চেয়ে গত ৮ই জুন আদালতে আবেদন করেন। আদালত গত ১০ই জুলাই উক্ত তদন্ত রিপোর্ট দাখিলের জন্য আরো এক মাসের সময় দেন। এরপর আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ই অক্টোবর ফুটপাত নিয়ন্ত্রণকারীদের তালিকা দেন মেয়র আরিফ।

তালিকার প্রেক্ষিতে আদালত ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। আসামিরা হলেন-সিলেট মহানগর হকার্স কল্যাণ সমবায় সমিতির সভাপতি রাকিব আলী, সহসভাপতি আতিয়ার রহমান, শফিক আহমদ, মো. আবদুল বাশার, রুহুল আমিন রুবেল, মখলেছুর রহমান, শফিক আহমদ, সাধারণ সম্পাদক খোকন ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রুমন আহমদ,রংমহল টাওয়ার সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. আজমল হোসেন, সহসভাপতি মো. মুরাদ হোসেন, ধোপাদিঘীর পাড় লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি মো. সাহাব উদ্দিন সাবু, সহসভাপতি ফয়জুল মিয়া, কার্যকরী সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক বদরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর নুর হিরণ, কোষাধ্যক্ষ মো. আবদুর রশিদ, জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কোর্ট পয়েন্ট অটোরিকশা স্ট্যান্ডের আহ্বায়ক কামরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক মো. ইসলাম উদ্দিন, শফিক উদ্দিন, সদস্য সচিব ইউসুফ আলী, মধুবন পয়েন্ট লেগুনা স্ট্যান্ডের সভাপতি সোহাগ মিয়া, সহসভাপতি মো. আদিল, সাধারণ সম্পাদক মো. কবির মিয়া, অর্থ সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া এবং আম্বরখানা-সালুটির শাখার অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য তেরা মিয়া।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2iEId0z

November 08, 2017 at 12:10AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top