বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে ‘প্রতারণা করে অপহরণ’ করার চেষ্টার অভিযোগে শায়েস্তা মিয়া (৩০) নামের প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মুরব্বীদের উপস্থিতিতে বুধবার উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া-নোয়াগাঁও গ্রামবাসী শায়েস্তা মিয়াকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। আটককৃত শায়েস্তা মিয়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর (মাঝপাড়া) গ্রামের ওয়াছিদ আলীর পুত্র।
জানাইয়া-নোয়াগাঁও গ্রামের সমছু মিয়ার পুত্র ছাইদ মিয়া বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং বিশ্বনাথ সি.আর ৩২৪/২০১৭ইং। মামলার অভিযুক্তরা হলেন- সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চাটিবহর (মাঝপাড়া) গ্রামের ওয়াছিদ আলীর পুত্র শায়েস্তা মিয়া ও বিশ্বনাথ উপজেলার জানাইয়া-নোয়াগাঁও গ্রামের তখলিছ আলীর পুত্র আবুল হাছান।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শায়েস্তা ও হাছানকে অভিযুক্ত করে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করতে চাইলে মামলা নেননি থানার ওসি। এসময় ওসি বাদী পক্ষকে জানান হাছানকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র শায়েস্তাকে অভিযুক্ত করে মামলা দিলে তিনি (ওসি) তা রেকর্ড করবেন, অন্যতায় কোর্টে গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন। মামলা রেকর্ড করার জন্য এলাকার জনপ্রতিনিধি ও মুরব্বীরা ওসিকে অনুরোধ করলেও তিনি তা রাখেননি।
মামলা না নেওয়াসহ নিজের উপর উত্থাপিত অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামছুদ্দোহা পিপিএম বলেন, শায়েস্তাকে পুলিশের কাছের সোপর্দের পর আর কোন পক্ষই থানায় আসেননি এবং কোন অভিযোগপত্রও দায়ের করেন নি। কেউ এসে থাকলে থানার থাকা সিসি ক্যামেরায় তা রেকর্ড করা থাকবে আর না এলে রেকর্ড থাকবে না। কেউ না আসায় ও অভিযোগপত্র দায়ের না করায় শায়েস্তাকে তার অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বাদী পক্ষের আইনজীবি আবদুল গফুর বলেন, মামলাটি তদন্ত করার জন্য বিশ্বনাথ থানাকে নিদের্শ দিয়েছেন মাননীয় আদালত।
অভিযোগপত্রে আরোও উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী বা বাদীর ভাই তোরণ মিয়াকে হত্যা করার পরিকল্পনার ধারাবাহিকতায় অভিযুক্ত আবুল হাছানের প্ররোচনা ও পূর্বপরিকল্পনা অনুসারে তার (হাছান) ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবে অপর অভিযুক্ত শায়েস্তা মিয়া গত ৭ নভেম্বর নিজের সমস্যা (৩টি মামলার আসামী হওয়ায়) দেখিয়ে বাদীর বশত বাড়িতে এসে বাদীর মায়ের কাছে থাকার জন্য আশ্রয় চায়। মানবিক কারণে অপরিচিত হওয়া স্বত্বেও বাদীর মা শায়েস্তাকে আশ্রয় দেন। এসময় অভিযুক্ত শায়েস্তা মিয়া বাদীর মাকে জানায় তার ভাই-বোন, বাবা-চাচা লন্ডনে থাকেন। বাদীর ভাই তোরণ মিয়ার কাছে শায়েস্তাকে সন্দেহজনক লাগায় পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। এসময় সে আবুল-তাবুল বলতে থাকে। এতে তাদের সন্দেহ আরোও বাড়ে। এসময় সে (শায়েস্তা) ‘মোঃ কবির আহমদ খাজা’ নামে একটি আইডি কার্ড দিয়ে বলে এটি তার কার্ড আর এতে সব ঠিকানা আছে। বাদীর ভাই খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওই আইডি কার্ডটি অন্যজনের। তখন বাদীর বাড়িতে উপস্থিত থাকা গ্রাম ও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসা করলে সে (শায়েস্তা) তার সঠিক নাম ও ঠিকানা প্রদান করে। এসময় সে (শায়েস্তা) বলে অপর অভিযুক্ত আবুল হাছান তাকে (শায়েস্তা) ৮ হাজার টাকায় ভাড়া করেছেন মিথ্যা কাহিনী তৈরী করে বাদী বা তার ভাইকে কৌশলে অপহরণ করে বিশ্বনাথ বাজারে অপেক্ষমান হাছানসহ খুনী চক্রের কাছে হস্তান্তরের জন্য। এরপর এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বার ও মুরব্বীদের পরামর্শে থানা পুলিশকে সংবাদটি প্রদান করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেন ৩/৪টি দেশের মুদ্রা ও ২টি আইডি কার্ড এবং কয়েক জনের ছবিসহ শায়েস্তা মিয়াকে বিশ্বনাথ থানার এসআই রফিকুল ইসলাম’সহ উপস্থিত থাকা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। শায়েস্তার স্বীকারোক্তি একাধিক মোবাইলে রেকর্ড করা আছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় এলাকার মুরব্বী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে স্বাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2jdGfs2
November 09, 2017 at 11:21PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.