কলকাতা, ২৬ নভেম্বর- বাংলার অগ্নিকন্যা বনাম বঙ্গ রাজনীতির চাণক্যর লড়াইটা এবার আসন্নই। আপাতত বাকযুদ্ধে চাণক্যের কাছে গোল খেয়েই চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের তথাকথিত ডাকসাইটে নেতা-নেত্রীরা। কেউই হালে পানি পাচ্ছে না মুকুল রায়ের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার কাছে। তাই দলত্যাগী প্রাক্তন সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে সামলাতে এবার ময়দানে নামতে হবে মমতাকেই। অন্তত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা সেই অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন। বঙ্গ রাজনীতিতে অগ্নিকন্যা বনাম চাণক্যর লড়াই অনিবার্য বিগত ২০ বছর তাঁর ডানহাত বলে পরিচিত মুকুল রায় দিদির সঙ্গ ছেড়ে বিপক্ষ শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। দল ছেড়েও দিদির প্রতি আনুগত্য বজায় রেখেই চলছেন মুকুল। কিন্তু রেয়াত করছেন না তৃণমূলকে। বিশেষ করে তিনি প্রথমের টার্গেট করেছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিশ্ববাংলা, জাগোবাংলা থেকে শুরু করে মা-মাটি-মানুষ প্রসঙ্গে মুকুলের নিশানায় ভাইপো অভিষেকই। কিন্তু মমতার বিরুদ্ধে স্পিকটি নট মুকুল রায়। মমতাও মুকুলের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত একটি কথাও বলেননি। বরং তিনি মুকুলের মোকাবিলা করার জন্য এগিয়ে দিয়েছেন অন্যান্য নেতাদের। পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে ফিরহাদ হাকিম, মানস ভুঁইয়া, এমনকী অভিষেক- সবাই মুকুলের কাছে বাচ্চা ছেলেই প্রতিপন্ন হয়েছে। এমতাবস্থা মুকুল রায় ক্রমেই ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন আক্রমণের। তৃণমূলকে টার্গেট করে একের পর এক বাণ ছাড়ছেন। ফাইল প্রকা্শের হুমকি তো রয়েছেই, তার উপর ভোট আসন্ন। এক এক করে অনেক এলাকার কর্মীকে ভাঙিয়ে নিচ্ছেন মুকুল রায় অ্যান্ড কোং। এই অবস্থায় মমতার ময়দানে নামা ছাড়া উপায় নেই। রাজনৈতিক মহলও দেখতে চাইছে চাণক্যকে কীভাবে সামলান অগ্নিকন্যা। বঙ্গ রাজনীতিতে অগ্নিকন্যা বনাম চাণক্যর লড়াই অনিবার্য এর আগে এমন লড়াই দেখেনি বঙ্গ রাজনীতি। একটা দলের এক ও দুই নম্বর এখন পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে। দুজনে দুটি পৃথক দলের মুখ। কিন্তু এই লড়াই প্রসঙ্গে এ কথা সর্বজনবিদিত যে জননেত্রী হিসেবে মমতার ধারেকাছেও আসবেন না মুকুল রায়। মুকুল রায় আদতে কোনও জননেতাই নন। তবে তিনি সাংগঠনিক নেতা হিসেবে টেক্কা দিতে পারেন মমতাকে। কেননা এতদিন মমতার দলের হয়ে সেই কাজটিই তিনি নেপথ্যে থেকে করে গিয়েছেন। তাই এই লড়াই জননেত্রী বনাম দক্ষ সংগঠকেরও। মমতা তাই তাঁর দলের একদা প্রধান সংগঠক মুকুল রায়কে কোন অস্ত্রে মোকাবিলা করেন, সেদিকে তাকিয়ে বাংলার রাজনীতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভেবেছিলেন তাঁর দলে বড় নেতার অভাব নেই। তাঁরাই দেখে নেবেন মুকুল রায়কে। কিন্তু আদতে তাঁর সেই রণকৌশল ব্যর্থ। মুকুলের বাকচাতুর্য্যের সঙ্গে পেরে ওঠেননি কেউই। মুকুল রায়ের জায়গায় এখন যিনি নম্বর টু হিসেবে পরিচিত তিনি বাকযুদ্ধে না জড়িয়ে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন। তিনি মুকুল রায়ের কাছে যে একেবারেই শিশু, তা বুঝেই নামেননি এই অসম লড়াইয়ে। যেটুকু লড়াই দেওয়ার দিয়েছেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কাঁচরাবাবু, কাঁচাছেলে থেকে শুরু করে চাটনিবাবু পর্যন্ত লড়াই গড়িয়েছিল। অতঃপর বন্ধু সম্বোধনে সন্ধির রাস্তায় হেঁটেছেন পার্থও। বঙ্গ রাজনীতিতে অগ্নিকন্যা বনাম চাণক্যর লড়াই অনিবার্য এমতাবস্থায় পড়ে রয়েছেন একা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দল ছাড়িয়ে সচিবদেরকে নামিয়েও মুকুলের শাণিত বাণে ধরাশায়ী হয়েছে তাঁর সরকার। তাই রাজনৈতিক মহলের ধারণা এবার মমতাই নামবেন ময়দানে। দলে এতদিন তাঁর সবথেকে কাছে যিনি ছিলেন, তাঁকে মোকাবিলা করতে নিজেই নামবেন যুদ্ধে। মুকুল রায় একাবারে তৈরি হয়েই নেমেছেন। তাঁর তূণে অনেক অস্ত্রই রয়েছে। সেইসব অস্ত্রকে ভোঁতা করতে আসন্ন পঞ্চায়েত যুদ্ধে তাঁর বাণেও শান দিচ্ছেন মমতা। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার তিনি যে প্রাক্তনীকে এবার আর ছেড়ে কথা বলবেন না, তা নিশ্চিত অর্থেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে পঞ্চায়েতের আগেই মুকুল-মমতা যুদ্ধ হতে পারে। কেননা ইতিমধ্যেই সবংয়ে উপনির্বাচনের ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তারপর রয়েছে উলুবেড়িয়া, নোয়াপাড়ার নির্বাচনও। তাই মমতাকে তাঁর বাকচাতুর্যে প্রাক্তনীকে ধরাশায়ী করতে আসরে নামতে হবে শীঘ্রই। তেমনই মুকুলও তাঁর একদা নেত্রীকে কীভাষায় আক্রমণ করেন, সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর থাকবে রাজনৈতিক মহলের। সূত্র: ওয়ানইন্ডিয়া আর/০৭:১৪/২৬ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2A6XSAB
November 26, 2017 at 02:40PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top