পানাগড়, ২৪ নভেম্বর- তাপমাত্রা হঠাৎই অস্বাভাবিকভাবে কমে নতুন ইনিংসেই চালিয়ে খেলতে শুরু করল শীত। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জাঁকিয়ে শীত পড়ল দক্ষিণবঙ্গে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই শীতের আমেজ আগামী দিনেও বজায় থাকবে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, আগামী কয়েকদিনে তাপমাত্রা আরও কমবে। দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রার পারদ বুধবারের থেকেও খানিক নামল বৃহস্পতিবার। পানাগড়, শান্তিনিকেতনে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে যায়। আবহাওয়াবিদদের একাংশ মনে করছেন শীতের শুরুতেই তাপমাত্রা এভাবে ১০ ডিগ্রি হয়ে যাওয়ায় সর্বকালীন রেকর্ড হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে যায় কলকাতা ও শহরতলি এলাকায়। বৃহস্পতিবার শহরে তাপমাত্রা ছিল ১৬.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রার পারদ নামায় কার্যত শীত পড়ে গেল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। তড়িঘড়ি আলমারি থেকে বেরিয়েছে সোয়েটার, চাদর, মাফলার, টুপি। প্রাতঃভ্রমণকারীরা বেরিয়েছেন আপাদমস্তক শীত-পোশাকে ঢেকে। স্কুলপড়ুয়াদের গায়ে উঠেছে সোয়েটার, ব্লেজার। গরম জামাকাপড় ছাড়া কাজে বেরিয়ে হাত কামড়েছেন অনেকে। পাশাপাশি শীতের আমেজ শুরু হতেই চিকিৎসকমহলে স্বস্তির হাওয়া। চিকিৎসকরা মনে করছেন তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে নানা রোগের প্রকোপ কমবে। বিশেষত ডেঙ্গুর মশা কমতে থাকবে। ফলে জ্বরের হাত থেকে রক্ষা পাবেন সাধারণ মানুষ। শীতের দরজা খুলব খুলব করছিল বেশ কদিন ধরে। শেষ পর্যন্ত খুলল। শুধু খুলল বললে ভুল হবে। বেশ হাট হয়েই খুলল। আর তার ভিতর দিয়ে কনকনে উত্তুরে বাতাস ঢুকে রীতিমতো নাড়িয়ে দিল অপ্রস্তুত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গকে। এমনকী, হাওয়া অফিসকেও চমকে দিয়ে বুধবার কলকাতার পারদ নেমে গেল ১৬ ডিগ্রির কোঠায়। এক ধাক্কায় পাঁচ ডিগ্রি পারদ পতন। রাঢ়বঙ্গে পারদ নেমেছে দশের ঘরে। বীরভূম, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদে শুরু হয়েছে ঠকঠকানি। শীতবুড়োর এহেন আকস্মিক দৌড় দেখে বিস্ময় লুকোচ্ছেন না আবহাওয়াবিদরাও। তবে শীতের ওম পোহানোর জন্য এবার সবাই তৈরি। কিন্তু তখনই জাগছে সংশয়। অনেকের প্রশ্ন, ইদানীং আবহাওয়ার যা খামখেয়ালি মেজাজ, তাতে শীত স্রেফ মুখ দেখিয়েই উধাও হবে না তো? সোয়েটার-টুপি ফের যদি কুলুঙ্গিতে তুলে রাখতে হয়? জমাটি ঠান্ডার ইঙ্গিত না-থাকলেও আবহাওয়াবিদরা একেবারে নিরাশ করছেন না। তাঁদের বক্তব্য, শীতভাব মালুম হলেও এই মুহূর্তে হাড় কাঁপানো পরিস্থিতি তৈরি হবে না। জাঁকিয়ে শীত পড়তে পড়তে সেই মাঝ ডিসেম্বর। তবে শীতের আমেজ এখনই গায়েব হবে না। বেশ কয়েকদিন টের পাওয়া যাবে। আবহাওয়াবিদদের একাংশ আবার বলছেন, আগামী ২৫ তারিখ নাগাদ রাজ্যে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হানা দিতে পারে। যার জেরে মেঘ ঢুকে হয়তো উত্তুরে হাওয়ার পথে দেওয়াল তুলবে। তখন তাপমাত্রা ফের বাড়ার সম্ভাবনা। কিন্তু আচমকা এভাবে ঠান্ডা পড়ল কেন? আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যা, উত্তর ভারতে শৈত্যপ্রবাহ চলছে। তারই প্রভাব পড়েছে বঙ্গে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কাশ্মীর-উত্তরাখণ্ডে তুষারপাতের জেরে উত্তরপ্রদেশ-ঝাড়খণ্ডে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের নিচে ঘোরাফেরা করছে। নভেম্বরের কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নামার রেকর্ড রয়েছে। যেমন, ২০১২ সালের ৩০ নভেম্বর নেমেছিল ১৪ ডিগ্রিতে। ২০১৪-র ২৬ নভেম্বর ছিল ১৪.১ ডিগ্রি। ২০১৫-র ২২ নভেম্বর ১৪.৯ ডিগ্রি। কিন্তু শেষ কবে একধাক্কায় কলকাতার তাপমাত্রা পাঁচ ডিগ্রি নিচে নেমেছে, তা মনে করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র:সংবাদ প্রতিদিন আরএস/১০:১৪/২৪ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2A8pYsE
November 24, 2017 at 04:49PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন