ঢাকা, ২৭ নভেম্বর- রূপকথার গল্পকেও যেন হার মানিয়ে দিয়েছিল তাহসান-মিথিলা জুটির প্রেমাখ্যান! অতঃপর বিবাহিত এ দম্পতিকে এক ফ্রেমে বাঁধা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিল দর্শক-শ্রোতা-ভক্ত। যদিও তাদের সে সম্পর্ক আজ অতীত; বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়ে দুজনই বেছে নিয়েছেন দুটি পথ। এ মুহূর্তে একমাত্র মেয়ে আইরা তাহরিম খানকে নিয়ে নতুন করে জীবন গুছিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন মিথিলা। এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে বিবাহবিচ্ছেদের প্রায় চারটি মাস। এখন কেমন কাটছে মিথিলার দিনকাল, একেবারে একা চলার লড়াইটা তিনি কীভাবে সামলাচ্ছেন? মজার ব্যাপার হলো, প্রতিবেদকের সঙ্গে কথোপকথনের একপর্যায়ে মিথিলা জানালেন, বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলেও এখনো তার সঙ্গে নাকি নিয়মিত দেখা হয়; এমনকি সন্তানকে নিয়ে ঘুরতেও বের হন তারা। বাকি গল্পটা শোনা যাক, মিথিলার বয়ানেই এখন যেভাবে কাটছে দিনকাল ব্র্যাকের হেড অব আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট ইন্টারন্যাশনালের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি আমি। ফলে এ সংশ্লিষ্ট কাজ নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তাছাড়া আমি নিজে যেহেতু শিশু ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করি, সেহেতু এ বিষয়ক কাজকর্ম নিয়েও ব্যস্ত থাকতে হয়, নানা প্রোগ্রামে যোগ দিতে হয়। নতুন করে আরেকটি ব্যস্ততা যোগ হচ্ছে, তা হলো রেডিও স্বাধীনে শিশুদের বিকাশ নিয়ে নতুন একটি অনুষ্ঠান শুরু করতে যাচ্ছি। নাটকে অভিনয় করলে সিরিয়ালে খুব একটা দেখা যায় না আপনাকে। কিন্তু এখন নাকি সিরিয়ালে অভিনয় করছেন? নাটকেও খুব একটা সময় দেয়া হয়ে ওঠে না। শুধু ঈদ, ভালোবাসা দিবস ও পহেলা বৈশাখের মতো দিনগুলো উপলক্ষে কিছু ভালো প্রডাকশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করি। আর হ্যাঁ, সিরিয়ালে অভিনয় তো করি না। কিন্তু এবার একটি সিরিয়ালের একটি মাত্র গল্পে আমাকে অভিনয় করতে দেখা যাবে। নির্মাতা রেদওয়ান রনি নির্মিত এ সিরিয়ালের নাম ক্যান্ডি ক্রাশ। সিঙ্গেল মাদার হিসেবে আপনি আপনার সন্তানকে বড় করে তোলার দায়িত্বটা এ মুহূর্তে পালন করছেন। এ নিয়ে জানতে চাই সামাজিক ও পারিবারিক পরিপ্রেক্ষিতে যদি বলতে হয়, তাহলে বলব বিবাহবিচ্ছেদের পর আমার জীবনে খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। কারণ আমার মেয়েকে শুরু থেকে আমাকেই দেখতে হয়। আমি যখন সিঙ্গেল ছিলাম না, তখনো এ দায়িত্ব পালন করতে হতো, এখনো হয়। আমাদের দেশে একজন নারী যতই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী থাকুক না কেন, ঘরে ফিরে তাকেই সংসারের কাজ করতে হয়। আমার ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। তবে পরিবর্তন এসেছে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে। আগে একসঙ্গে থাকায় দুজনের রোজগার ভাগাভাগি করতাম। এখন হয়তো সেটা আমাকেই সামলাতে হয়। তবে আমি আগেও স্বাধীন ছিলাম, এখনো আছি, মাঝে দায়িত্বটা একটু বেড়েছে। ব্যক্তি মিথিলার কথায় আসি। সঙ্গীবিহীন একা পথচলাটা কেমন চলছে? বিচ্ছেদের পর আবেগীয় জায়গা থেকে আমি কষ্ট পেয়েছি ও মানসিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছি। কিন্তু কাজের জায়গাটা থামিয়ে রাখিনি। কারণ আমি কখনই আমার নিজের জন্য কাজ করিনি। আমি যেহেতু একাধারে একজন উন্নয়ন কর্মী, একজন মা, একজন নারী; সেহেতু সমাজ পরিবর্তনে আমার যে দায়িত্ব, তা পালন করতেই হবে। এতে কোনো ছাড় দিইনি। সত্যি বলতে কি, আমি এখন এত কিছু নিয়ে কাজ করছি যে, দুঃখ বিলাসিতা করার সময় আমার নেই। এবং সেভাবেই নিজেকে নিজে সামলানোর চেষ্টা করেছি। আমি ভেঙে পড়িনি, হেরে যাইনি, মাথা নিচু করিনি। বিবাহবিচ্ছেদ শব্দটি একজন নারীর জায়গা থেকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? বিবাহবিচ্ছেদ তো একটা সামাজিক ট্যাবু। যেই শোনে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে, সেই দীর্ঘশ্বাস নেয়। আমিসহ সব মেয়েকেই এটা শুনতে হয়। আবার অনেকে দোষ দিয়ে বলে, মেয়েটাই পারেনি সংসারটা টেকাতে। যাহোক, বিবাহবিচ্ছেদ কখনই ভালো কোনো ঘটনা নয়। বিচ্ছেদ কখনই সুখের নয়। আমার মনে হয়, আশপাশের মানুষগুলো আঙুল না তুলে আরেকটু সহযোগিতাপ্রবণ হলে ওই মানুষটার জন্য এগিয়ে যাওয়াটা একটু সহজ হয়। নেতিবাচক মন্তব্যকে কীভাবে মোকাবেলা করছেন? নেতিবাচক মন্তব্যকে ধারে কাছে ঘেঁষতেই দিই না। নেতিবাচক মন্তব্য মাথায় নিলে তো কাজ করতে পারতাম না। আমার মনে হয়, আমি ওসব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করি। কারণ জানি, আমি যদি ভেঙে পড়ি, তাহলে অন্য নারী যারা আমাকে অনুসরণ করে, তারাও ভুল পথে পরিচালিত হবে। একটা কথা বহুল প্রচলিত যে, তারকাদের সংসার টেকে না। বিবাহিত জীবনে কখনো এ কথা মাথায় এসেছিল যে, নিজের ক্ষেত্রেই এমন ঘটনা একদিন ঘটবে? পৃথিবীতে বহু তারকা আছেন, যারা শেষদিন পর্যন্ত সংসার করছেন। আবার এ রকমও শত শত উদাহরণ দেখাতে পারব যে, তারকা নয়, সাধারণ মানুষও বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। আসলে বিচ্ছেদের সঙ্গে মিডিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। সবার জীবনেই এমনটা ঘটতে পারে। যেহেতু পারস্পরিক সিদ্ধান্তে আপনারা দুজনই আলাদা হয়েছেন, আবার আপনাদের কাজের ক্ষেত্রগুলোও প্রায় একই জায়গা। তো মাঝে মধ্যে দেখা-সাক্ষাত্ হয় কি? তাহসান নিয়মিত তার মেয়েকে দেখতে আসে বাসায়। আমাদের সঙ্গে বাইরে বেড়াতে যায়। তাহসানের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয়। আর আমাদের তো কথা বলতেই হবে। যেহেতু মেয়েকে বড় করে তুলতে হবে, সেহেতু ভালো-মন্দ সিদ্ধান্ত তো দুজন মিলেই নিতে হয়। সূত্র: বনিক বার্তা আর/১০:১৪/২৭ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2n9B5Pd
November 28, 2017 at 05:53AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন