বিশেষ প্রতিনিধি:: গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে এক কিশোরী নিহত ও আরও জন আহত হন। গত ১৩ই নভেম্বর সোমবার সকালে জাফলংয়ের মন্দিরের জুম এলাকায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহত কিশোরী নাম শম্পা দাশ (১৭)। সে নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের রঞ্জিত দাশের মেয়ে। নিহত শম্পা দাশ পরিবারের সাথে কয়েক বছর ধরে জাফলংয়ের মোহাম্মদপুর এলাকায় বসবাস করে আসছিল। এ ঘটনায় আহত হন জুতি বিকাশ, দীপ্ত সরকার, অজিত সরকারসহ চার জন।
এদিকে, গত ১৩ই নভেম্বর সোমবার রাতেই নিহত শম্পা দাশ (চম্পা)-এর মা রেখা দাশ বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামী করা হয় পাথর উত্তোলনের গর্তের মালিক খলিলুর রহমানকে। এছাড়াও মামলায় তার ব্যবসায়ী সহযোগী হিসেবে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা নানু মিয়াসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামী করা হয়। পরে এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার এজাহার নামীয় আসামী নানু মিয়াকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু অধরা থেকে যান এই গর্ত এবং জায়গার অবৈধ মালিক হেনরি লামিন। যিনি অন্যের জায়গা দখল করে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে এই এলাকা থেকে পাথর উত্তোলন করাচ্ছেন।
কে এই হেনরি লামিন:-?
বল্লাঘাট জাফলংয়ের মৃত ঝিনু লামিনের ছেলে হেনরি লামিন। শ্রিপুর, খড়মপুর, আদর্শ গ্রামের জমির মালিক ছিলেন তৈয়াং খাসীয়া, উছই খাসিয়া, উলং পতাম, উকচি পতাম, কাসিং পতাম, কালাও পতাম। ১৯৮০ সালের তৎকালিন সময়ে তারা সবাই ভারতে মারা যান। এরপর হেনরি লামিন জাল দলিল এবং ভূয়া কাগজ তৈরী করে মালিক সেজে এসব এলাকার জমি এবং সরকারী খাঁস জমিসহ আশপাশের জায়গা দখল করেন। গড়ে তুলেন পাহাড় পরিমান সম্পতি। তৈরী করেন নিজের ব্যক্তিগত নিজস্ব সন্ত্রাস বাহিনী।
জাফরংয়ে হেনরি লামিন এক আতঙ্ক। তার ভয়ে কেউই তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারে না। ভয়ে কেউই গত ১৩ই নভেম্বর সোমবার সকালে জাফলংয়ের মন্দিরের জুম এলাকায় যে ঘটনা ঘটে। এই ১৪৫ একর জায়গার প্রকৃত মালিক কাসিং পতাম গং। আর এই হেনরি লামিন জাফলংয়ের মন্দিরের জুম এলাকায় জমি এলাকার বিভিন্ন লোক মাধ্যমে অবৈধবোমা মেশিন লাগিয়ে পাথর উত্তোলন করান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সীমানাবর্তী এলাকার নোমেন্স ল্যান্ডে গিয়েও হেনরি লামিন বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করান। নোমেন্স ল্যান্ডে গিয়েও বোমা মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করায় বাংলাদেশের সীমানা ভেঙ্গে ভারতে প্রবেশ করছে বলে জানান এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিরা। দীর্ঘদিন থেকে জাফলং মন্দিরের জুম এলাকায় মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকে পাথর হেনরি লামিন তার নিজস্ব লোক দিয়ে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে আসছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, নিহত শম্পা দাশ (চম্পা)-এর মা রেখা দাশকে দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে হেনরি লামিন অন্যের নামে মামলা করিয়েছেন। যাতে করে হেনরি লামিন আবার অবৈধভাবে পাথর উত্তোলণ করতে পারেন।
গোয়াইনঘাটের ইউএনও বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, কোয়ারী এলাকা ব্যতিরকে অন্য কোন স্থান থেকে পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি কেউ কোয়ারী এলাকা ছাড়া অন্য কোন স্থান থেকে পাথর উত্তোলনের পায়তারা করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2nayrZA
November 28, 2017 at 08:18PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন