বিশ্বনাথ (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নে (টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও কর্মসৃজন) বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব প্রকল্পের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই দায় সেরেছেন সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা। কাজ হওয়া প্রকল্পের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। অভিযোগ রয়েছে, অসৎ উদ্দেশ্যে প্রকল্পবাস্তবায়নকারী জনপ্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট অফিসের দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে সরকারের এসব উন্নয়ন প্রকল্পে ‘নয়-ছয়’ করেছেন। জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩২টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে (টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন প্রকল্প) লামাকাজী ইউনিয়ন পরিষদে ৪১লক্ষ ১৬হাজার ৩শত ৬২টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
সরজমিন লামাকাজী প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিটা) কর্মসূচির আওতায় ২য় পর্যায়ের ১লক্ষ ৩২হাজার ২শ ৯২ টাকা বরাদ্দের ৪নং ওয়ার্ডের ‘পূর্ব সোনাপুর শামসুজ্জামানের বাড়ী হতে কটিরাই রেললাইন পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’, গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ২য় পর্যায়ের ১লক্ষ ৫হাজার টাকা বরাদ্দের একই ওয়ার্ডের ‘সোনাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে হতে জলাল উদ্দিনের বাড়ীর সামন পর্যন্ত
রাস্তা উন্নয়ন’ প্রকল্প দুটিতে কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন করা হয়নি। এর মধ্যে প্রথম প্রকল্পে নাম উল্লেখিত শামসুজ্জামান জানান.সড়কটিতে আনুমানিক ২০০ফুট মাটি ও ২০০ফুট বালি ফেলেই কাজ শেষ দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকল্পে নাম উল্লেখিত জলাল উদ্দিনও একই অভিযোগ করেন। তবে, জলাল উদ্দিনের বাড়ী পর্যন্ত সড়কের কাজ পুরো যদি না হয়ে থাকে, তাহলে করে দেবেন বলে জানান এই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ফাতেমা বেগম। প্রকল্পগুলোর মধ্যে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (টিআর) কর্মসূচির আওতায় ২য় পর্যায়ের ৩০হাজার টাকা বরাদ্দের ৭নং ওয়ার্ডের ‘কেশবপুর বাদশা মিয়ার বাড়ীর সামনের রাস্তা উন্নয়ন’ প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাবার পরও কোনো কাজ করানো হয়নি। তবে, সরজমিন প্রকল্প ঘুরে আসার পর ফের সে প্রকল্পে গেলে দেখা যায় তড়িঘড়ি করে কাজ শুরু করা হয়েছে। কাজের দায়িত্ব পাওয়া
উপজেলা জাতীয়পার্টি নেতা একেএম দুলাল জানান, বাড়ীর সীমানা নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরেও কাজ করাতে পারিনি। বিরোধ নিস্পত্তি হওয়ায় এখন কাজ প্রায় শেষ। অতি দরিদ্রদের জন্যে কর্মসংস্থান কর্মসূচীর আওতায় ২য় পর্যায়ের ২লক্ষ টাকা বরাদ্দের ৯নং ওয়ার্ডের ‘আকিলপুর দক্ষিণের রাস্তা হতে সাত কিয়ারী হয়ে হাজারীগাঁও রাস্তা পর্যন্ত মেরামত’ নিয়েও স্থানীয়দের কিছুটা অভিযোগ। এব্যাপারে জানতে ওয়ার্ডের সদস্য গয়াছ উদ্দিনের খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১লক্ষ টাকার উপরে কাজ করানো হয়েছে। এর মধ্যে পিআইও অফিসের জাফর সাহেবকে ২৫হাজার টাকা এবং সাংবাদিকদের জিম্মায় (ম্যানেজ করতে) ১০/১৫হাজারের মত দিতে হয়েছে। একই প্রকল্পের ২লক্ষ ৪৮হাজার টাকা বরাদ্দের ৯নং ওয়ার্ডের ‘হাজারীগাঁও রাস্তা হতে তিলকপুর শামসুদ্দিনের বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা মেরামত’ প্রকল্পে অনিয়ম করা হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সর্বোচ্চ ৬০হাজার টাকার মত কাজ হয়েছে। সড়কে কাজ করা এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছে, এ প্রকল্পে ৮০হাজার থেকে ৯০হাজার টাকার মত কাজ হয়েছে।
পিআইও শফিক উদ্দিন বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য নয়। প্রকল্পে কাজ না হলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এর আগে অভিযোগ উঠা বিভিন্ন ইউনিয়নের যে
প্রকল্পগুলোতে কাজ হয়নি, সে সব প্রকল্পের ৬/৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে (ফেতর নিয়েছি)। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার সাংবাদিককে জানান, প্রকল্প অনুযায়ী কাজ না হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2m4zLwv
November 08, 2017 at 06:25PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন