মোঃ আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: বিশ্বনাথে দিনদুপুরে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল সেট ছিনতাই হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকাল ১১টার দিকে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড বিশ্বনাথ শাখা থেকে টাকা উত্তোলন করে অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে বাড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে উপজেলার বগিরচক নামকস্থানে এঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের ঘটনাটি রহস্যজনক বলে মনে করছেন সচেতন মহল ও এলাকাবাসী। রহস্যজনক ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে ‘ব্যাংক কর্মকর্তাদের’ যোগসাজশ রয়েছে বলেও এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলা সদরের উত্তরা ব্যাংকে থাকা যুক্তরাজ্য প্রবাসী জরিনা খাতুন নামীয় একাউন্ট থেকে ২২ লাখ ২০ হাজার টাকা ও তার পুত্রবধু জেবুন্নাহারের নামীয় একাউন্ট থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বুধবার সকালে উত্তোলন করেন। টাকা উত্তোলন শেষে ব্যাংকে থাকা অবস্থায়ই একজনকে ১ লাখ টাকা প্রদান করেন প্রবাসী মহিলা। এরপর সঙ্গে থাকা ২২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও পূর্ব থেকে তাদের সঙ্গে থাকা ১০ হাজার টাকা নিয়ে অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে প্রবাসী মহিলা’সহ ৩জন মহিলা বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। উপজেলার বগিরচক নামক স্থানে যাওয়ার পর আরেকটি অটোরিকশা (সিএনজি) যোগে আসা ৩ জন ছিনতাইকারী তাদের অটোরিকশার পথ গতিরোধ করে। এসময় ছিনতাইকারীরা তাদেরকে দারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রবাসী মহিলার সঙ্গে থাকা নগদ ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা, একটি ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ২টি মোবাইলসেট ছিনতাইকারীরা নিয়ে যায়।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান সাংবাদিকদেরকে বলেন, বিশ্বনাথে প্রায় পৌনে ২ বছর ধরে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে একজন গ্রাহক এক দিনে সর্বোচ্চ ৭/৮ লাখ টাকা দিয়েছেন। আজ বুধবার ওই প্রথম কোনো গ্রাহককে এক সঙ্গে ২২ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছেন। ‘পুলিশকে না জানিয়ে ও ব্যাংক রুল ভঙ্গ’ করে কি কারণে একজন গ্রাহককে হঠাৎ করে এত টাকা দিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা আবদুল মান্নানকে প্রশ্ন করলে তিনি কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। তবে এঘটনার সাথে ব্যাংকের কেউ জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেন।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী মহিলা জরিনা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, তার নিজের নামীয় একাউন্ট থেকে কোনো টাকা আজ বুধবার উত্তোলন করেননি। পুত্রবধু জেবুন্নাহার তার নিজের একাউন্ট থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন প্রবাসী মহিলার হাতে দিয়েছেন। আর ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল সেট’সহ ওই টাকাই ছিনতাই হয়েছে।
প্রবাসী মহিলার পুত্রবধু জেবুন্নাহার বলেন, উপজেলা সদরের উত্তরা ব্যাংকে থাকা আমার নিজের নামীয় (১ লাখ ৫০ হাজার টাকা) ও শ্বাশুড়ির (২২ লাখ ২০ হাজার টাকা) পৃথক দুটি একাউন্ট থেকে বুধবার সকালে উত্তোলন করি। ব্যাংকে থাকা অবস্থাই আমরা একজনের পাওয়া ১ লাখ টাকা দিয়ে দেই। অবশিষ্ট টাকাগুলো (২২ লাখ ৭০ হাজার টাকা) শ্বাশুড়ির কাছে দিয়ে দেই। এরপর ব্যাংক থেকে বের হয়ে সিএনজি যোগে আমরা বাড়ি যাওয়ার পথিমধ্যে আমাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্রিটিশ পাসপোর্ট, ২টি মোবাইল সেট’সহ টাকাগুলো ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা।
এব্যাপারে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, ইতিমধ্যে ব্যাংক থেকে বড় অংকের টাকা নিতে হলে পুলিশকে অবহিত করার জন্য উপজেলা সদরের মাইকিং করা হয়েছে। কিন্ত বুধবার উত্তরা ব্যাংক থেকে এত টাকা গ্রাহককে দেয়া হয়েছি বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ কিংবা গ্রাহক পুলিশকে অবহিত করেনি। তবে ছিনতাইয়ের ঘটনাটি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2AfrtY9
November 30, 2017 at 12:22AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন