কলকাতা, ২৪ নভেম্বর- আনসারুল্লা বাংলা টিমের জঙ্গিরা ঢাকার পরে কলকাতাকেই দ্বিতীয় হেড কোয়ার্টার বানাতে চেয়েছিল ৷ কলকাতা থেকে ধৃত ওই জঙ্গি সংগঠনের দুই সদস্য সামসাদ এবং রিয়াজুলকে জেরা করে এই তথ্য জানতে পেরেছেন এসটিএফ গোয়েন্দারা৷ জেরায় ধৃতেরা জানিয়েছে, কলকাতায় পাকাপাকিভাবে ঘাঁটি গড়ে তোলার জন্যই হায়দরাবাদ থেকে শহরে চলে এসেছিল ধৃত সামসাদ৷ ধরা পড়ার মাসখানেক আগে কলকাতাতেই তার সঙ্গে আলাপ হয় রিয়াজুলের৷ উত্তর ২৪ পরগনায় বছরখানেক ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকার সুবাদে কলকাতা ভালমতোই চিনে নিয়েছিল রিয়াজুল৷ সামসাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরে সেই শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখিয়েছিল৷ ঘুরে দেখার পিছনে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল শহরের মধ্যেই তাদের পক্ষে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে নেওয়া৷ সেইমতোই উত্তর এবং মধ্য কলকাতার বেশ কয়েকটি জায়গা চিহ্নিত করে তারা৷ সেখানে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকার মাধ্যমে সংগঠনকে এরাজ্যে শক্ত করাই মূল লক্ষ্য ছিল তাদের৷ এই জঙ্গিদের অন্যতম মাথা সামসাদকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতা-লাগোয়া এলাকায় সংগঠনকে মজবুত করার জন্য৷ ধৃত সামসাদ কর্ণাটকের বেলগাঁও থেকে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে নকল আধার, প্যান কার্ড তৈরি করার পরে হায়দরাবাদের চার মাসের হার্ডওয়্যার-নেটওয়ার্কিংয়ের প্রশিক্ষণ নেয৷ সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হওয়ার পরেই কলকাতায় এসে ঘর ভাড়া নিয়ে চাকরি খুঁজে পাকাপাকিভাবে এখানেই ঘাঁটি গাড়তে চেয়েছিল তারা৷ এসটিএফের এক কর্তা বলেন, গত একমাস ধরে গোটা কলকাতা চষে ফেলেছিল সামসাদ আর রিয়াজুল৷ এই কদিন তারা বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড এবং স্টেশনে রাত কাটিয়েছে৷ হায়দরাবাদ থেকে কলকাতায় এসে পাকাপাকিভাবে থাকার জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের কলকাতায় কোনও আস্তানা তারা তৈরি করেছিল কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি৷ এদিকে, ধৃত অস্ত্র ব্যবসায়ী মনোতোষ দেকে জেরা করে এসটিএফের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, তার বাবা মনোরঞ্জন দে একসময় ইছাপুর গানশেল ফ্যাক্টরিতে চাকরি করত৷ তারপর মনোতোষের মায়ের সঙ্গে মনোরঞ্জনের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায়৷ সংসারে অভাব অনটন মেটাতেই অনেক অল্প বয়স থেকে অস্ত্র কারবারে হাত পাকায় মনোতোষ৷ বাবা গানশেল ফ্যাক্টরিতে কাজ সুবাদেই সেখানে কালোবাজারি করে অস্ত্র কিনে বিক্রি করত মনোতোষ তা জানার চেষ্টা করছে এসটিএফ? ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশের থেকে এসটিএফ জানতে পেরেছে, মনোতোষের নামে উত্তর ২৪ পরগনায় বেশ কয়েকটি বেআইনি অস্ত্র কারবারের মামলা রয়েছে৷ তারমধ্যে একটি মামলায় ১১ মাস জেলও খেটেছে৷ তবে বছরখানেকের মধ্যে বাংলাদেশে কমকরে পাঁচ বার উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্র বিক্রি করেছে৷ আনসারুল্লা বাংলা টিমের সদস্যরাই তার থেকে অস্ত্র কিনেছে বলেও গোয়েন্দারা জেনেছে৷ তবে মনোতোষ জেরায় দাবি করেছে, কারা সেই অস্ত্র কিনত তাদের আসল পরিচয় তার জানা ছিল না৷ তবে নতুন করে মনোতেষের থেকে অস্ত্র কেনার জন্য বাংলাদেশ থেকেই যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা জেরায় স্বীকার করে নিয়েছে ধৃত দুই জঙ্গি৷ যদিও মনোতোষের দেখানো অস্ত্র তাদের পছন্দ হয়নি৷ সূত্র: কলকাতা২৪*৭ আর/১৭:১৪/২৪ নভেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2zi1dJn
November 25, 2017 at 12:13AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top