ছিনতাই আতঙ্কে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা, নির্বিকার প্রশাসন !

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন:: ‘সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্র’ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী আখালিয়া সুরমা এলাকাতেই গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি সিএনজি অটোরিকশায় ছিনতাই চক্রের কবলে পড়া ৪৫ জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। যার ২৫ জনই সিলেট-সুনামগঞ্জে মহাসড়কের এ এলাকাতে ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এ চক্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের হামলায় গত সোমবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রভোস্ট, শিক্ষার্থী ও এক কনস্টেবলসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের মামলা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসন। হামলার প্রতিবাদে জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে- বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলাচল করা বাসের সংখ্যা কম থাকার কারণে সিএনজি অটোরিকশাই নগরীর বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। অন্যদিকে, আবাসিক হলের স্বল্পতা থাকায় অন্তত আটহাজার শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করে। সে জন্য ছিনতাইকারীরা শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস থেকে চলাচল করার পথকেই বেছে নিয়েছে ছিনতাইয়ের মাধ্যম হিসেবে। সংঘবদ্ধ এ চক্র মূলত টিম হিসেবে কাজ করে। দিনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে এ চক্র অত্যধিক সক্রিয় হয়ে পড়ে। ড্রাইভার ছাড়াও যাত্রী বেশে প্রতারণা করে তারা এ ধরনের কাজ করে থাকে। অনুসন্ধানে সম্প্রতি ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন এমন ৪৫ জন শিক্ষার্থীর তথ্য ঘেঁটে বেশ চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়।

ওই অনুসন্ধানে দেখা যায়- ৪৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে অন্তত ৫ জন শিক্ষার্থীকে অস্ত্রের মুখে মোবাইল ও টাকা-পয়সা কেড়ে নেয়া হয়। এর মধ্যে একজনের পিঠে ছুরিকাঘাত ও একজনকে চলন্ত সিএনজি থেকে ফেলে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তবে সবচেয়ে বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে এ ৪৫ ছিনতাইয়ের অন্তত ২৫টি ছিনতাই হয়েছে সুমরা এলাকায়। মহাসড়কের মদিনা মার্কেট নবাবী মসজিদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় গেট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাকেই ছিনতাইকারীরা সবচেয়ে বেশি নিরাপদ জোন হিসেবে বেঁছে নিয়েছে ছিনতাই কাজে। ওই এলাকার তপোবন ও সুরমা এলাকায় মীর সাব্বির ২৬শে আগস্ট, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের পিয়া ৭ই অক্টোবর, ইংরেজি বিভাগের তানি ও সায়েদ সুজন, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের মুজিব ২৯শে অক্টোবর, স্থাপত্য বিভাগের আকাশ কর্মকার ও সায়েদ নাঈম গাজী ৫ই নভেম্বর ছিনতাইয়ে শিকার হন। বিজিবি অডিটেরিয়াম ও ২নং গেট এলাকায় আবিদ হাসান আজাদ ২৩শে আগস্ট, ইংরেজি বিভাগের নাঈম, আশরাফুল হক, জিওগ্রাফি বিভাগের শিহাবুল হক, পদার্থ বিজ্ঞানের আখলাকুর রহমান ও রসায়নের সোহেল আহমেদ মেহের উদ্দিন হিমেল ২৬ সেপ্টেম্বর, হাসান আল মাসুদ ২৭শে সেপ্টেম্বর, অর্থনীতি বিভাগের তাহমিদুর রহমান চৌধুরী ২৯শে সেপ্টেম্বর, সাফায়েত ইসলাম ২৭শে অক্টোবর, সমাজকর্মের আতিক ৫ই নভেম্বর এবং লোক প্রশাসন বিভাগের সাবিহা সায়মন পুষ্পা ৫ই নভেম্বর ছিনতাইয়ের শিকার হন। এ বিষয়ে মুজিবুর রহমান নামে ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী জানান, ‘গত ২৯শে অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার সময় বিজিবি ৪নং গেটের কাছে আসতেই দুটি পিস্তল একটি মুখে আরেকটি পেটে ধরে একজন, আরেকজন ধারালো লম্বা ছুরি গলায় ধরে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক জহির উদ্দিন জানান- সড়কে নিরাপত্তা এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে অবহিত করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সংক্রান্ত একটি মামলাও করবে বলে তিনি জানান।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2meuGlu

November 11, 2017 at 12:02AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top