ঢাকা, ১৭ নভেম্বর- মাহমুদউল্লাহ ফিল্ডিং শেষে মাঠ ছাড়ার সময় যেন খলনায়ক। তিনটি ক্যাচ ছেড়েছেন যে খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক। পরে রান তাড়া করতে নেমে চার হাঁকিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন মাথা উঁচু করে। চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে জয়ের নায়ক তো তিনিই। মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ উইকেটে জিতেছে খুলনা। ছয় ম্যাচে এটি তাদের তৃতীয় জয়। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে চিটাগংয়ের করা ১৬০ রান খুলনা পেরিয়ে যায় ১০ বল বাকি রেখে। ৬ ম্যাচে এটি চিটাগংয়ের চতুর্থ পরাজয়। দুই দলের প্রথম দেখাতেও খুলনার কাছে হেরেছিল তারা। রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। মাইকেল ক্লিঙ্গার ও প্রমোশন পেয়ে তিন নম্বরে নামা ধীমান ঘোষ ফিরেন দ্রুত। তবে তার কোনো প্রভাব দলের ওপর পড়তে দেননি রাইলি রুশো। ২৬ বলে ৪৯ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে এনে দেন উড়ন্ত সূচনা। রুশোকে বোল্ড করে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান চলতি আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা আল আমিন জুনিয়র। নাজমুল হোসেন শান্ত আবার ব্যর্থ হলে চাপে পড়ে খুলনা। সেখান থেকে দলকে পথ দেখান মাহমুদউল্লাহ। আরিফুল হকের সঙ্গে অধিনায়কের ৭০ রানের জুটি দলকে নিয়ে যায় জয়ের দোরগোড়ায়। তানবীর হায়দারকে পরপর দুই ছক্কার পর ক্রিস জর্ডানকে উড়িয়ে আরিফুল সমীকরণ সহজ করে যান। তার বিদায়ের পর কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৫ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৮ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক। এর আগে দুটি জুটিতে লড়াইয়ের পুঁজি গড়ে চিটাগং। অসংখ্য সুযোগ হাতছাড়া করে তাদের জন্য কাজটা অনেক সহজ করে দেয় খুলনা। খুলনার ফিল্ডারদের ক্যাচ ছাড়ার শুরু ম্যাচের প্রথম বলেই। আবু জায়েদকে উড়ানোর চেষ্টায় রাইলি রুশোকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান লুক রনকি। মিসবাহ-উল-হকের জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। সেই ওভারের শেষ বলে মিড অনে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহর বলে। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকার জীবন পেয়েছেন তিনবার! তিনবারই বোলার ছিলেন সিকুগে প্রসন্ন। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া সৌম্যর ব্যাটে দেখা যায়নি প্রত্যাশিত ঝড়। লম্বা সময়ে উইকেট থাকলেও কখনও ঠিক থিতু মনে হয়নি তাকে। অন্য প্রান্তে আলো ছড়িয়েছেন এনামুল হক। সুইং বোলিং একটু ভুগিয়েছে কিন্তু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছেন সঠিক বলের জন্য। শফিউল ইসলামের দুটি শর্ট বলে হাঁকিয়েছেন ছক্কা, কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে উড়িয়েছেন একবার। সৌম্যর সঙ্গে ৯৫ রানের জুটিতে অগ্রণী ছিলেন এনামুল। নিজের জোনে বল পেলেই চড়াও হয়েছেন। তার ব্যাটে তরতর করে এগিয়েছে খুলনা। সৌম্যকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। ৩৪ বলে ৩২ রান করার পথে তার হাতেই দুইবার জীবন পেয়েছিলেন সৌম্য। এর পর বেশিক্ষণ টিকেননি এনামুল। ৪৭ বলে পাঁচটি চার আর তিনটি ছক্কায় ৬২ রান করা ডানহাতি ব্যাটসম্যানকে ফেরান জায়েদ। এক বল বিরতিতে বিদায় করেন সিকান্দার রাজাকে। নিজের শেষ ওভারে আবার জোড়া উইকেট পেতে পারতেন জায়েদ। নাজিবউল্লাহ জাদরান ও স্টিয়ান ফন সিলের দুটি ক্যাচই ফিল্ডারদের হাত থেকে ছুটে যায়। জীবন পাওয়া দুই ব্যাটসম্যানের শেষের ঝড়ে দেড়শ ছাড়ায় চিটাগংয়ের সংগ্রহ। ২৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার জায়েদ। ক্যাচগুলো হাতছাড়া না হলে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পেতে পারতেন পাঁচ উইকেটের স্বাদ। তবে ক্যাচ ছাড়ার মাশুল পরে আর দিতে হয়নি খুলনাকে। সংক্ষিপ্ত স্কোর: চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৬০/৫ (রনকি ৩, সৌম্য ৩২, এনামুল ৬২, জাদরান ২৪, রাজা ০, ফন সিল ২৩*, জর্ডান ১*; জায়েদ ৩/২৬, অ্যাবট ০/৩৩, শফিউল ০/৪১, ব্র্যাথওয়েট ০/২০, মাহমুদউল্লাহ ১/২২, প্রসন্ন ০/১৪) খুলনা টাইটান্স: ১৮.২ ওভারে ১৬৪/৫ (ক্লিঙ্গার ১, রুশো ৪৯, ধীমান ৪, মাহমুদউল্লাহ ৪৮*, শান্ত ৯, আরিফুল ৩৪, ব্র্যাথওয়েট ১০*; রাজা ১/২০, সানজামুল ১/৩৩, তাসকিন ১/৩৮, জর্ডান ০/২৮, আল আমিন জুনিয়র ১/১৪, তানবীর ১/২৯) ফল: খুলনা টাইটান্স ৫ উইকেটে জয়ী সূত্র: বিডিনিউজ২৪ আর/১০:১৪/১৭ নভেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2mz1nKF
November 18, 2017 at 05:55AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন