সুরমা টাইমস ডেস্ক :: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট বিভাগের মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনের পরই সবচেয়ে আলোচিত আসনের তকমা জড়ানো ‘সিলেট-২’ সংসদীয় আসন। বালাগঞ্জ-বিশ্বনাথ-ওসমানীনগর এই তিন উপজেলা নিয়েই বিস্তৃত সিলেট-২ আসন। সম্প্রতি দেশের অন্যস্থানগুলোর মতো এখানেও থেমে নেই আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। বিএনপি তথা ইলিয়াস আলীর ঘাটি হিসেবে পরিচিত এই আসনে আগামী নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীতা নিয়ে তৃণমূলে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্রই একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কে হবেন সিলেট-২ আসনের বিএনপির কান্ডারী? ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি দলটির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা নাকি ইলিয়াস আলীর আপন ছোট ভাই আসকির আলী।
এ আসনে জাতীয় পার্টির একক প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় দলটির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন নবম সংসদ নির্বাচনে চমক দেখানো এবং দশম নির্বাচনে শেখ হাসিনার নির্দেশে মহাজোটের স্বার্থে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের ‘রানিং’ সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও। এদিকে, আসনটিতে এতোদিন বিএনপির একক প্রার্থী হিসেবে ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি তাহসিনা রুশদীর লুনার নাম থাকলেও সম্প্রতি আলোচনায় আরেকটি নাম। আর তিনিও ইলিয়াস আলী পরিবারের সদস্য- ইলিয়াস আলীর আপন ছোট ভাই কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আছকির আলী।
সম্প্রতি ফেসবুকে আসকির আলীর সমর্থনে কয়েকটি পোস্টার এবং পোষ্টের মাধ্যমে তাকে তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে চলছে প্রচারণা। থেমে নেই লূনার সমর্থকেরাও। গোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা না করে তাহসিনা রুশদীর লুনাকে কান্ডারী হিসেবে মেনে নিতে অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা। ‘সিলেট জেলা ছাত্রদল’ নামক একটি ফেইসবুক পেইজে বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই আসকির আলীর প্রশংসা করে বলা হয়, ‘সিলেট-২ আসনের জনসাধারণকে যেভাবে বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন, তাদের সুখেদুঃখে সবসময় বিগত দিনে পাশে থেকে ছিলেন, তা সত্যি অভূতপূর্ব। তাই আমরা আগামীতে সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে আছকির আলীকে এমপি হিসেবে পেতে চাই।’
এছাড়াও ‘সোহাগ ছাত্রদল’ নামক আরেকটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্টারের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো হচ্ছে সাবেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আসকির আলীর পক্ষে। তবে পাল্টা জবাব কিংবা প্রচারণা চলছে লূনা সমর্থকদের মাঝে। ‘Jatiyotabadi Sylhet Chatrodol’ নামক পেজটি কমেন্টের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে- ‘গোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা ……….
এম ইলিয়াস আলীর সহধর্মীনি দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদীর লুনা ম্যাডাম বিশ্বনাথ ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ নিয়ে গঠিত সিলেট ২ আসনের একমাত্র কান্ডারি। একটি পক্ষ বিশ্বনাথ ওসমানীনগর বালাগঞ্জ নিয়ে গঠিত (সিলেট-২ আসনে) একটি দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে চাচ্ছে এদের ষড়যন্ত্র থেকে সবাইকে সাবধান থাকার জন্য অনুরোধ করা হল।’ এছাড়াও বিএনপি, স্বেচ্ছাসেবক দল এবং ছাত্রদলের অনেকগুলো পেইজ এবং ব্যাক্তিগত আইডি থেকে চালানো হচ্ছে পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা।
পক্ষ-বিপক্ষের প্রচারণায় জটিল সমীকরণের দিকে এগুচ্ছে বিএনপির একক প্রার্থী নির্বাচন। পরিস্থিতি আরো বেশী ঘোলা হচ্ছে উভয় প্রার্থীই ইলিয়াস আলীর পরিবারের সদস্য বলে। নীতিনির্ধারকেরা মনে করেছেন, বিএনপির এই দ্বন্দের সুবিধা নিয়ে আওয়ামী লীগ বা অন্যদল ভালো অবস্থানে চলে যেতে পারে। তবে নীতিনির্ধারকেরা এখনও প্রকাশ্যে কাউকে সমর্থন দেননি।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাহের শামীম বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় দল। এই দলে একাধিক প্রার্থী থাকতেই পারে। একাধিক প্রার্থীর সমর্থকেরা প্রচারণা চালাবেন এটা স্বাভাবিক। তবে নির্বাচনে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যাকে মনোনয়ন দিবেন আমরা সিলেট বিএনপি তার হয়েই কাজ করব।’
তবে সিলেট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানান, ‘এখন পর্যন্ত কোন আসনে বিএনপির প্রার্থীতা ঘোষণা করা হয়নি। তবে, ইলিয়াস আলীর সহধর্মিনী সিলেট-২ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন। সিলেটের তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীও তিনি। ফেসবুকের বিভ্রান্তিমুলক গুজবে কান না দিতে নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানান তিনি।’
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2AVZvhN
December 19, 2017 at 02:00AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন