ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর- তামিম ইকবালের এখন থাকার কথা ছিল দুবাইয়ে। প্রথম টি-টেন টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই আজ তাঁর পাখতুনের হয়ে খেলার কথা ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেলেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস অধিনায়কের জন্য যে এখনো কাটেনি বিপিএলের রেশ! কালকের ফ্লাইটটা তামিমকে বাতিল করে দিতে হয়েছে সে কারণেই। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট ও আউটফিল্ডের সমালোচনা করে বিসিবির কাছ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন তামিম। আজ দুপুর ১২টায় সেটির শুনানি হবে বলেই তিনি এখনো ঢাকায়। শুনানি শেষে আরেক ফ্লাইটে তাঁর দুবাই চলে যাওয়ার কথা আজই। অবশ্য যদি তখনো টি-টেনে খেলার অনুমতিপত্রটি (এনওসি) বহাল থাকে। এই টুর্নামেন্টের জন্য তামিম আরও আগেই বিসিবির এনওসি নিয়ে রাখলেও জোর গুঞ্জন, মাঠ ও উইকেটের সমালোচনার শাস্তি হিসেবে সেটি বাতিল করে দেওয়ার আলোচনাও হয়েছে বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে। তা যদি না-ও হয়, নেমে আসতে পারে অন্য শাস্তির খড়্গ। টি-টেনে কাল-পরশু আরও দুটি ম্যাচ আছে তামিমের দল পাখতুনের। ১৭ ডিসেম্বর ফাইনাল। তামিমের ওই মন্তব্য গত ২ ডিসেম্বর রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের পর। ৯৭ রানের জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে শেষ ওভারে জেতে কুমিল্লা। ম্যাচ শেষে কুমিল্লার অধিনায়ক তামিম মিরপুরের উইকেটের পাশাপাশি সমালোচনা করেন আউটফিল্ডেরও। সংবাদ সম্মেলনে উইকেট সম্পর্কে বলেন, হরিবল, হরিবল, হরিবল। রংপুরের অধিনায়ক মাশরাফিও সেদিন উইকেট সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করেছিলেন। শুধু মাশরাফি-তামিম নন; মিরপুরের উইকেট যে তখন টি-টোয়েন্টির জন্য একেবারেই আদর্শ উইকেট ছিল না, পরে তা স্বীকার করে নেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিকও। তবে তামিমকে ঠিকই কারণ দর্শাতে চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠিতে শুনানির তারিখ উল্লেখ করা ছিল ২১ ডিসেম্বর। টি-টেন টুর্নামেন্ট এবং টুর্নামেন্টের পরও ব্যক্তিগত কাজে কয়েক দিন দেশের বাইরে থাকতে হবে বলে তামিম সেটিকে পিছিয়ে ২৫ ডিসেম্বর নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। বিসিবি উল্টো তা ১৪ ডিসেম্বরে এগিয়ে আনে। অথচ টি-টেনে তামিমের প্রথম ম্যাচ যে ১৪ ডিসেম্বর, সেটি জেনেই তো বিসিবি তাঁকে অনুমতিপত্র দিয়েছিল! জাতীয় দলে প্রায় ১১ বছর ধরে খেলছেন তামিম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের অনেক সাফল্যের রূপকারও তিনি। দেশের অধিনায়কত্বও করেছেন। তার মানে এই নয় যে, আচরণবিধি লঙ্ঘিত হলে কারণ দর্শানো নোটিশ, শুনানি এসবের মধ্য দিয়ে তামিমকেও যেতে হবে না। কিন্তু তিনি তো আর এমন কোনো গুরু পাপ করেননি যে, শাস্তিটা তাঁকে এখনই দিয়ে দিতে হবে। দুবাই গিয়ে তিনি আর দেশে ফিরবেন না, এমনও তো নয়। এটা বিবেচনায় নিলে বিদেশি একটা দলে সময়মতো যোগ না দেওয়ার মতো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না তামিমকে। ওই ঘটনার জের ধরেই কিনা, তামিমকে আরও চাপে ফেলার চেষ্টাও দৃশ্যমান। বিপিএলের কুমিল্লা-রংপুর দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে যে সুপার ওভার হলো না, বোর্ডের শীর্ষ কর্তাদের ধারণা, সেটাও নাকি তামিমের কারণেই। অথচ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের কর্মকর্তা ও ম্যাচ-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তামিম একবারের জন্যও না খেলার কথা বলেননি। উল্টো আম্পায়ারদের জানিয়েছিলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিক মাঠে নামতে বললে তিনি সঙ্গে সঙ্গে দল নিয়ে মাঠে নামবেন। ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে ৫ ওভারে ৬২ রানের লক্ষ্য বা সুপার ওভার, যেটারই সিদ্ধান্ত হোক, ড্রেসিংরুমে সবকিছুর জন্যই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন তামিম। কুমিল্লার ম্যানেজার খন্দকার সাইদুল ইসলাম কাল মুঠোফোনে বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে দিলেন, কেউ যদি বলে, তামিম খেলতে চায়নি, সেটা ভুল। সে খেলার জন্য প্রস্তুত ছিল। সুপার ওভার হলে হাসান আলী বল করবে, এমনকি ব্যাটিংয়ের জন্য বাটলার, স্যামুয়েলস আর শোয়েব মালিককে প্যাড পর্যন্ত পরিয়ে রাখা হয়েছিল। তামিমের মন খারাপ করার মতো ঘটনা সম্প্রতি আরও ঘটেছে। মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে গত দুই বছর তিনিই ছিলেন টেস্ট দলের সহ-অধিনায়ক। বিসিবি কর্তাদের মনে হতেই পারে, তামিম নেতৃত্ব দেওয়ার উপযুক্ত নন। তাই সাকিব আল হাসানকে অধিনায়ক করা, মাহমুদউল্লাহকে বানানো হলো তাঁর ডেপুটি। কিন্তু তামিমকে যে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, সেটি তাঁকে আগেই জানিয়ে দেওয়ার সৌজন্য তো দেখাতে পারত বোর্ড! এমএ/০৬:০০/১৪ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2Cjdtva
December 15, 2017 at 12:06AM
14 Dec 2017

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

:) :)) ;(( :-) =)) ;( ;-( :d :-d @-) :p :o :>) (o) [-( :-? (p) :-s (m) 8-) :-t :-b b-( :-# =p~ $-) (b) (f) x-) (k) (h) (c) cheer
Click to see the code!
To insert emoticon you must added at least one space before the code.

 
Top