‘তারা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে ফায়দা লুটতে চাইছে’– খালেদা জিয়া

সুরমা টাইমস ডেস্ক::

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অব্যাহত রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তি উপস্থাপনকালে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, এটি একটি রাজনৈতিক মামলা। আমাদের দেশে ক্ষমতাসীনরা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে বিরোধীদের সাজা দিতে চায়। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি দেশে এখনো অনেক বিচারক আছেন যাঁরা রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ন্যায় বিচার করছেন। তাদেরই নাম ইতিহাসের পাতায় লেখা থাকে। বকশিবাজারের কারা অধিদফতরের মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত-৫ এ পঞ্চম দিনের যুক্তিতর্কে অংশ নিয়ে খন্দকার মাহবুব এসব কথা বলেন। বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ শুনানি গ্রহণ করে আগামী ৩রা ও ৪ঠা জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। শুনানিকালে আদালতে খালেদা জিয়া উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অরফানেজ মামলাটি কালিমালিপ্ত মামলা। রাজনৈতিক অশুভ ইঙ্গিত ছাড়া এ ধরনের মামলা হতে পারে না। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যেই এ মামলা করা হয়েছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়াকে মামলা দিয়ে নিঃশ্বাস ফেলার সময় দেওয়া হচ্ছে না। কেন এই মামলা দায়ের করা হয়েছে তা ইতিহাসের কাছে প্রশ্ন হয়ে থাকবে। জনগণ এই মামলার বিচার করবে।

তিনি বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা কুয়েতের আমির পাঠিয়েছিলেন। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান সেই টাকা এনেছিলেন। ওই টাকার একটি অংশ জিয়া মেমোরিয়াল ট্রাস্টে গিয়েছিল। এটার ট্রাস্টি ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, তার স্ত্রী সুফিয়া রহমান ও ছেলে রিয়াজ রহমান। অথচ সেখানে কোনো মামলা হয়নি। ওটা হালাল। আর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টেরটা হারাম হয়েছে। তাহলে এক যাত্রায় তো দুই রকম ফল হতে পারে না।

খন্দকার মাহবুব বলেন, সরাসরি কোনো নথিপত্র ছাড়াই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। স্বাক্ষরবিহীন ঘষামাজা ছায়ানথি দিয়ে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না। যদি বিন্দুমাত্র সন্দেহ থাকে, তাহলে আসামিপক্ষ সুবিধা পাবেন।

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, জাল নথি তৈরি করে খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরাতেই এই মামলা করা হয়েছে। এই মামলা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ হবে। দেশকে একটি রাজনৈতিক বাস্তবতায় নিয়ে যাবে। যেসব কাগজপত্র সৃজন করা হয়েছে তাতে ঘষা-মাজা ও তেল চিটচিটে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নথিপত্র এমন হতে পারে না। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মামলা করায় দুদক কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেন তিনি। এ পর্যায়ে আদালত বলেন, যে নথিপত্র নিয়ে এতো কথা বলছেন সেগুলো যখন আদালতে দাখিল করা হয় তখন আপত্তি দিয়েছিলেন? জবাবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ভুয়া কিংবা সৃজিত কাগজপত্রের বিষয়ে আপত্তি না দিলেও তা আসল হয়ে যায় না।

এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ এ মামলায় ভুয়া তথ্যপ্রমাণ দাখিল করেছে। তখন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, কোনটা মিথ্যা? আপনি তো সাক্ষীদের জেরায় অংশ নেননি। জানেন না বলে আপনি এভাবে বলছেন। এ সময় দুপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে বাদানুবাদ হয়। এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের শুনানির মাঝে আপনি (দুদক কৌঁসুলি) কথা বলতে পারেন না। এ সময় দুদকের আইনজীবীকে আদালত বলেন, আপনি বসুন, পরে আপনার কথা শুনব। শুনানিকালে খালেদা জিয়ার পক্ষে জয়নুল আবেদীন, এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, এম আমিনুল ইসলাম প্রমুখ আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2pZdBhc

December 31, 2017 at 12:23AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top