কলকাতা, ১৭ ডিসেম্বর- মমতার সাধের কন্যাশ্রীর দৌলতে বাংলা আবার জগৎ সভায় শ্রেষ্ঠ আসন দখল করেছে। কন্যাশ্রী প্রকল্প রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিচারে ৬৩টি দেশের ৫৫২টি প্রকল্পকে পিছনে ফেলে বাংলাকে এনে দিয়েছে সেরার সম্মান। যা ২০১৭ সালে বাংলা কাছে একটা বড় পাওনা। অবশ্যই বাংলাকে এই সম্মান এনে দেওয়ার নেপথ্য কারিগর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কেরামতিতেই বিশ্বের দরবারে বাজিমাত করেছে বাংলা। দেশকেও উচ্চাসনে তুলে ধরেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি কন্যাশ্রীকে পৌঁছে দিয়েছেন স্কুলপাঠ্য, স্কুল থেকে তা উন্নীত হয়েছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমনকী মমতার কন্যাশ্রীর জনপ্রিয়তা তা পৌঁছে গিয়েছে বিনোদনের জগতেও। দেড়ঘণ্টার চিত্রনাট্যে তা স্থান করে নিয়েছে যাত্রাপালাতেও। ৬২টি দেশকে হারিয়ে বিশ্বসেরা কন্যাশ্রী রাজ্যে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সফল রূপায়ণে মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার হার বেড়েছে বহুগুণ। নারী শিক্ষায় প্রভূত উৎসাহ এসেছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের সবথেকে বড় সাফল্য হল নাবালিকা বিয়ে রোখা। এই প্রকল্প চালুর পর স্কুলছুটের সংখ্যাও অদ্ভুতভাবে কমেছে। প্রায় ৪০ লক্ষ স্কুলপড়ুয়াকে স্কলারশিপের সুবিধা দেওয়া থেকে পুস্তিকা আকারে ভিন দেশের প্রতিনিধিদের হাতে কন্যাশ্রীর যাবতীয় পরিসংখ্যান তুলে ধরতেই বাজিমাত, ৬২টি দেশকে হারিয়ে ৫৫২টি প্রকল্পের মধ্যে সেরার শিরোপা উঠল কন্যাশ্রীর মাথায়। হেগের মঞ্চে বাজিমাত মমতার কন্যাশ্রীর নেদারল্যান্ডের দ্য হেগের মঞ্চে সেরা প্রকল্প হিসেবে ঘোষিত হয় কন্যাশ্রীর নাম। মঞ্চে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডাকার পর বাকিটা ইতিহাস। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে সম্মানিত হলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেরার পুরস্কার হাতে নিয়ে মমতা বললেন, কথা নয়, কাজ করাটাই প্রধান দায়িত্ব হিসেবে মনে করেছি। আরও দায়িত্ব বেড়ে গেল। মানুষ আর সমাজের উন্নয়নের স্বার্থে সাধারণের সমস্যার সমাধানকেই সবথেকে গুরুত্ব দিতেই এই কন্যাশ্রীর বাস্তবায়ন। আর তাতেই সাফল্য। আজ মমতার প্রকল্পিত এই কন্যাশ্রী অনেক দেশেই আদর্শ। নারী শিক্ষার প্রসারে কন্যাশ্রীকে কুর্নিশ রাষ্ট্রসঙ্ঘের জন-পরিষেবা সম্মেলনে সেরার শিরোপা বাংলার মাথায় উঠেছে। বিশ্বের দরবারে এই জন পরিষেবার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাস হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন কন্যাশ্রী প্রকল্পকে। নারীশিক্ষার হার বাড়ানোর পাশাপাশি নাবালিকা বিয়ে ঠেকানো ও স্কুলছুটের সংখ্যা কমানো ছিল মূল উদ্দেশ্য। ছবছরে ৪০ লক্ষ স্কুলপড়ুয়াকে কন্যাশ্রীর স্কলারশিপের সুবিধা তুলে দেওয়া হয়। মমতার দেওয়া পুস্তিকা আকারে কন্যাশ্রীর পরিসংখ্যান পাওয়ার পর, তার ধারেকাছে আর কোনও প্রকল্প যায়নি। বিশ্বের কুর্নিশ আদায় করে নিল কন্যাশ্রী। সিঙ্গুরের পর পাঠ্যপুস্তকে কন্যাশ্রীও সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনের পর পাঠ্যপুস্তকে জায়গা পাওয়া পাকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের কন্যাশ্রীর। বিশ্বের দরবারে সেরার স্বীকৃতি মেলার পর কন্যাশ্রী এবার পাকাপাকিভাবে মলাটবন্দি হতে চলেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে কন্যাশ্রী যে সেরার সম্মান এনে দিয়েছিল বাংলাকে, সেই ইতিহাস রাজ্যের পড়ুয়ারা পড়বে তাদের পাঠ্যপুস্তকেই। এতদিন বাংলার নারীশিক্ষায় আলো জ্বালিয়ে এসেছে কন্যাশ্রী। এই একটি প্রকল্পকে ঘিরেই আমূল পরিবর্তন এসেছে নারীশিক্ষায়। স্কুলছুটের সংখ্যা কমেছে। বাল্যবিবাহের হার কমানো সম্ভব হয়েছে, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কন্যাশ্রীর সাফল্যেই। বিশ্বশ্রী হয়ে কন্যাশ্রী অবশ্য পাঠ্য রাষ্ট্রসংঘের স্বীকৃতিতে কন্যাশ্রী এখন বিশ্বশ্রীতে রূপান্তরিত হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের সেই কন্যাশ্রীকে পাঠ্যপুস্তকে জায়গা করে দেওয়ার পরিকল্পনা আগেই নিয়েছিল সিলেবাস কমিটি। বিশ্বসেরার স্বীকৃতি আসার পর স্কুলের সমস্ত ক্লাসেই পড়া বাধ্যতামূলক হল কন্যাশ্রীর স্বীকৃতি। সিলেবাস কমিটি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, মাধ্যমিকস্তর পর্যন্ত কন্যাশ্রী প্রকল্পটি পাঠ্যপুস্তকে ছিল। এবার সেই পাঠ্যের সঙ্গে যুক্ত হবে কন্যাশ্রীর স্বীকৃতির অংশটুকু। যে শ্রেণির পাঠ্যে নেই কন্যাশ্রী, সেই শ্রেণিতেও কন্যাশ্রীর স্বীকৃতি পাঠ্যসূচিতে যুক্ত হবে। কন্যাশ্রী কী, কী তার উপযোগিতা, কেন সেরা প্রকল্প হল- যাবতীয় বিষয় উল্লেখ থাকবে এই পাঠ্যে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও কন্যাশ্রীর আওতায় আর শুধু স্কুলে সীমাবদ্ধ নয় কন্যাশ্রী। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও কন্যাশ্রীর আওতাভুক্ত হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৌজন্যে। কন্যাশ্রীকে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় আরও বড় আকারে নিয়ে আসার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নজরুল মঞ্চে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে মান্যতা দিতে তৎপর হয় শিক্ষা দফতর। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়কেও কন্যাশ্রীর আওতায় আনার কাজ চলছে। দেড়ঘণ্টার চিত্রনাট্যে কন্যাশ্রী এবার যাত্রাপালায় বিশ্বসেরার স্বীকৃতি মেলার পর কন্যাশ্রীকে প্রচারের আলোয় তুলে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয় রাজ্যজুড়ে। তাই বাংলার যাত্রাপালাতেও জায়গা করে নেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের কন্যাশ্রী। নাটকের মোড়কে এবার বাংলার কন্যাশ্রীকে প্রচারের আলোয় আনার পরিকল্পনা পশ্চিমবঙ্গ যাত্রা অ্যাকাডেমির সৌজন্যে। এতদিন কেন্দ্রের বেটি বাঁচাও কর্মসূচি সেভাবে প্রচার পেয়েছে, তার সিকি শতাংশ প্রচারও পায়নি বাংলার কন্যাশ্রী। তবু বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশের জনসেবামূলক প্রকল্পকে হারিয়ে বাংলার কন্যাশ্রী হয়ে উঠেছে সর্বোত্তম। বিশ্বজয়ের স্মারক নিয়ে বাংলায় ফেরার পর থেকেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কন্যাশ্রী একের পর এক মাইল ফলক ছুঁয়ে স্থান করে নিল যাত্রাপালাতেও। স্বাধীনতা দিবসে বাতিল কন্যাশ্রীই সেরার আসনে একটা সময় কন্যাশ্রীর ট্যাবলো স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজ থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। সেই কন্যাশ্রীই বিশ্বের দরবার থেকে সেরার শিরোপা অর্জন করে নিয়ে এসেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সুযোগ কিছুতেই হাতছাড়া করতে চাইছেন না। তিনি কন্যাশ্রীকে ঘিরেই বড়সড় প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন। আর সেই প্রচার কাজে শিক্ষা দফতরের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেয়ে গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ্ যাত্রা অ্যাকাডেমিকেও। যাত্রা অ্যাকাডেমি পরিকল্পনা করেছে কন্যাশ্রীকে নিয়ে দেড় ঘণ্টার একটি যাত্রাপালা বানানোর। এমএ/ ০৫:১৪/ ১৭ ডিসেম্বর
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2jb3rUM
December 17, 2017 at 11:13PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন