অবশেষে ফেঁসে গেলেন গোলাপগঞ্জের আলোচিত সেই সাবেক মেয়র পাপলু

গোলাপগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা : স্বাক্ষর জাল করে রেকর্ড তৈরি ও প্রকল্প দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটের সহকারী পরিচালক দেবব্রত মণ্ডল গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় এ মামলাটি (মামলা নং-৮) দায়ের করলে থানায় মামলাটি নথিভুক্ত হয়।

মামলায় গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রনকেলী এলাকার মৃত নঈম আলী ওরফে নঈম টিকাদারের বড় ছেলে পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু (৪২) কে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত সচিব) যুগেশ্বর চ্যাটার্জীর (৫৯), পৌরসভার কর্মচারী ছাব্বির আহমদ (২৬), জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবলা (২৬)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, প্রধান আসামি পাপলু ও প্রকৌশলী যুগেশ্বর চ্যাটার্জী পৌরসভা (চুক্তি) বিধিমালা, ২০০১ এর বিধি ৪ অনুসারে প্রকল্প কমটি গঠন না করে এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮ এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে ২০১৫ সালের ১১ জুন থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন তারিখে ১৪টি স্মারকে অফিস আদেশ স্বাক্ষর করেন এবং ১৪টি প্রকল্প অনুমোদন করেন। প্রকল্পের বিল বাবদ ৭ লাখ ২৫ হাজার ৪ শত ৭৪ টাকা বিল উঠানো হয় যার মধ্যে আসামিরা ৬ লাখ ২৯ হাজার ৭ শত ২২ টাকা আত্মসাৎ করেন। দুদকের সরেজমিন অনুসন্ধানে ১৪টি প্রকল্পের মধ্যে ১২টির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং মাস্টার রোলে উল্লেখিত শ্রমিকদের নাম ঠিকানায় বাস্তব কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

মামলায় আরো উল্লেখ করা হয় আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ করে পৌরসভার কর্মচারী (সাট-মুদ্রাক্ষরিক) দুলাল আহমদের নামে দুইটি প্রকল্প বানিয়ে তার স্বাক্ষর জাল করে অর্থ আত্মসাৎ করেন। দুদকের তদন্তে বিষয়টি ধরা পরলে দুলাল আহমদ তদন্ত কর্মকর্তাকে জানান তার স্বাক্ষর জাল করে সাবেক মেয়র এই টাকা উত্তোলন করেছেন, তিনি এসবের কিছুই জানেন না।

দুদকের কর্মকর্তা দুলালের কথায় বিশ্বাস না করে দুলালের নমুনা স্বাক্ষর ও প্রকল্পের নথিতে থাকা স্বাক্ষর যাচাইয়ের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে ঢাকায় প্রেরণ করলে বিশেষজ্ঞ মতামতে (সিআইডি আঙ্গুলাংক শাখা) দুলালের স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে বলে প্রতিবেদন আসে।

এছাড়া পৌরসভার বিল বোর্ড না লাগিয়ে আসামি সাব্বির আহমদ ৩৯ হাজার ৭ শত ২২ টাকা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে আসামি জহিরুল ইসলাম ওরফে বাবলা ১ লাখ টাকা আত্মসাত করেন।

এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলুর সাথে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি (প্রশাসন) এ.কে.এম ফজলুল হক শিবলী জানান, আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরো জানান, মামলাটি দুদক তদন্ত করবে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2plOdBX

December 24, 2017 at 05:58AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top