ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর- এই ছবিটির প্রথমে যিনি রয়েছেন, তিনি ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। অপু বিশ্বাসের সঙ্গে গোপন প্রেম আর গোপন বিয়ে নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন। সর্বশেষ অপুকে ডিভোর্সের নোটিশ পাটিয়ে এখনো আছেন সে বিতর্কে। পরের ছবিতে শাকিব খান-অপু বিশ্বাসের পুত্র আব্রাহামকে কোলে নিয়ে অপু বিশ্বাস। সবচেয়ে রহস্য জাগানো ছবি পরেরটি। পরের ছবিতে যাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি সবার পরিচিত কেউ নন। একেবারে অপাংক্তেয়। অচেনা একজন। তার নাম রাহুল খান। দাবি করা হচ্ছে- এই রাহুল খানের পিতাও সুপারস্টার শাকিব খান। সে হিসেবে জয় আর রাহুল ভাই-ভাই। অন্যদিকে অপু বিশ্বাস রাহুলের সৎ মা! এই নতুন বিতর্কের পেছনে জড়িয়ে আছে অনেক অজানা গল্প। যে গল্প শুনলে শিউরে উঠতে হয়! গল্পের শুরুতে চেনা যাক শাকিব খানের কথিত পুত্র রাহুল খানের গল্প। বেশ লাজুক প্রকৃতির ছেলে। নাম রাহুল খান। বাংলামোটর একটি ওয়ার্কশপে মাত্র তিন হাজার টাকার বেতনে চাকুরী করে। কাজ ছাড়া খুব একটা কথা বলে না। একা একা থাকতে পছন্দ করে। পরিবারের প্রসঙ্গ আসলেই চুপসে যায়। বিশেষ করে বাবার প্রসঙ্গ আসলেতো একেবারেই চমকে যায়। কিসের যেন একটা শূন্যতা খেলা করে তার দুচোখ জুড়ে। কিন্তু মুখে কোনো কথা নেই। কিন্তু কে এই রাহুল? রাহুলের মা কে? রাহুলের মায়ের নাম রাত্রি। এফডিসিতে সবাই তাকে এক নামে চেনে। তার মায়ের ক্যারিয়ারের শুরু হয়েছিল এই সময়ের হার্টথ্রুব হিরো শাকিব খানের সাথেই। অনেকেই হয়তো জানেন না শাকিব খানের আসল নাম মাসুদ রানা। সেই মাসুদ রানার কাছের বন্ধু ছিলেন রাত্রি। একসময় শাকিবকে নাচ, গান, এমনকি তাকে তার বাসায় থাকার জায়গা পর্যন্ত করে দিয়েছিলেন রাত্রি। সৌন্দর্য্য আর নাচের পারদর্শীতার কারনে রাত্রির একটা গ্রহণযোগ্যতাও তৈরি হয়েছিল। এমন কি শাকিব খানকে নিয়ে অনেকের কাছে পরিচয় করে দিতেন তিনি। রাত্রির ভাষ্যমতে, হিরা-চুনি-পান্না সিনেমার জন্য শাকিবকে কিনে দিয়েছিল হাজার টাকা দামের একটি দামি কোর্ট। শাকিব এখন বড় সুপারস্টার হয়ে গেছে বলেই এখন হয়তো রাত্রিকে তার নজরে পড়ে না। কিন্তু আজও শাকিবের কোন শুটিং এফডিসিতে থাকলে রাত্রি ঠিক থাকতে পারেন না। শাকিবকে দেখার জন্য আজও খাওয়া দাওয়া ভুলে এফডিসির চারপাশ পাগলের মত ঘুরতে থাকেন। কিন্তু সে খবর কে রাখে! কিন্তু এই তথ্যের ভিত্তি কি? রাত্রির কথা ছাড়া কোনো জোর প্রমাণ না মিললেও এফডিসি সংশ্লিষ্ট অনেকেই শাকিব-রাত্রির ব্যাপারটা জানেন। প্রোডাকশন বয় থেকে শুরু করে অনেক সাংবাদিকের কাছেও এটা ওপেন সিক্রেট। নিকট অতীত না হওয়ার কারনেই হয়তো কেউ আর এটার চর্চা করেন না। কারো সঙ্গে আলাপ করতে গেলেই কেউ রহস্যজনক হাসি হাসেন অথবা হেসেই উড়িয়ে দেন। কথিত আছে, শাকিবের জন্য অনেক কিছুই করেছেন রাত্রি। এক সময়ে রাত্রির বাবা ৪র্থ শ্রেণীর সরকারি চাকুরী করতেন। আর মা ছিল গৃহিনী। পরিবার নিয়ে থাকতেন তেঁজগাঁও এলাকায়। ছোট বেলা থেকেই দেখতে বেশ সুন্দরী ছিলেন রাত্রি। আর সেই সূত্র ধরে হয়তো তার চলচ্চিত্রে আর্বিভাব। প্রথম থেকেই রাত্রির চলচ্চিত্রের প্রতি টান আর ভালবাসার কারনেই এখনো জড়িত চলচ্চিত্র পাড়ায়। রাত্রির ভাষ্যমতে শাকিবই ছিল তার প্রথম জীবনে চলার পথে একমাত্র সঙ্গী। যেখানেই যেত ঠিক সেখানেই সঙ্গে করে নিয়ে যেত শাকিবকে। আর পরিচয় করিয়ে দিতেন বড় বড় পরিচালকদের সাথে। রাত্রি আর শাকিবের মধ্যকার বন্ধুত্ব আস্তে আস্তে গাঢ় হয়ে ওঠে। দুজনেই তখন প্রাপ্ত বয়স্ক। ফলে ছেলে-আর মেয়ের বন্ধুত্বটা বাঁধন হারিয়ে ফেলে। একসময় সেটা প্রেমে রূপ নেয়, সেই সঙ্গে শারীরীক সম্পর্কেও জড়িয়ে পড়েন তারা। সব ঠিকঠাক চলছিল। এর মধ্যেই গর্ভবতী হয়ে পড়েন রাত্রি। বিষয়টি শাকিবের কান পর্যন্ত গড়ালো, তখন তাদের মধ্যকার সম্পর্কের ভিতটাই নড়ে ওঠলো। শাকিব তখন চলচ্চিত্রের শীর্ষ তারা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। এখনই পারিবারিক সম্পর্ক বা স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করতে চান না। কারন ততদিনে একটু একটু করে সফল হতে শুরু করেছেন শাকিব। আয় রোজগারও মন্দ হচ্ছিল না। সে কারনে শাকিব কোনোভাবেই ঝুঁকি নিতে চাইলো না। এর মধ্যেই রাত্রির বাচ্চা নষ্ট করার জন্য লাখ টাকা খরচও করতে চেয়েছিলেন শাকিব। কিন্তু মা বলে কথা। নিজের অমূল্য সম্পদ সন্তানের কথা চিন্তা করে শাকিবের প্রস্তাব এড়িয়ে গেলেন রাত্রি । তখন থেকেই রাত্রির নতুন জীবন শুরু। যে জীবন যুদ্ধের, যে জীবন সংগ্রামের। অনেক চাপ, নির্যাতন সহ্য করেও রাত্রি ঠিকই তার সন্তানকে আলোর মুখ দেখিয়েছেন। যদিও জানা গেছে রাত্রির সন্তান পৃথিবীতে আসার পর শাকিব তাদের সংসার খরচ হিসেবে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে আসছেন। মূলত সে কারনেই এই বিষয়টি কখনো মিডিয়ার সামনে ওভাবে আসেনি। অন্যদিকে চলচ্চিত্র পাড়ায় চিত্রনায়ক মান্না মারা যাওয়ার পর, শাকিব নিজের অবস্থান আরোও গুছিয়ে নেন। ততদিনে জুটি হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছেন শাকিব-অপু। গোপনে প্রেম-বিয়ে এমনকি তিনবার অপুরও বাচ্চাও নষ্ট করে ফেলেন তিনি। ততদিনে রাত্রির জীবনের প্রথম অধ্যায় শেষ হয়ে যায়। তবুও রাত্রি নিজের পরাজয় না মেনে নিয়ে, নিজের সাথে যুদ্ধ করে এফডিসিতে চতুর্থশ্রেণীর আর্টিস্ট হয়ে জীবন-যাপন করতে থাকে। এ প্রসঙ্গে রাত্রি জানান, আমি শাকিবকে অনেক ভালবাসতাম আর এখনও ভালোবাসি। আমি কোনদিন চাইনা আমার জন্য শাকিবের কোন ক্ষতি হোক। তাই এই বিষয় নিয়ে আর কোন কথা বলতে চাই না। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই শাকিবই রাহুলের বাবা। রাহুল এখন অনেক বড় হয়ে গেছে। তবে সে শাকিবের কোন কথাই সহ্য করতে পারে না। এসব নিয়ে সে কথা বলতেও রাজি না। রাহুলও জানে শাকিবই তার বাবা। রাহুলের কথা বলা, খাওয়া-দাওয়া এমনকি চুলের স্টাইল পর্যন্ত শাকিবের মত। শাকিব হয়তো অনেক বড় সুপারস্টার হয়ে আমাদের ভুলে গেছে। একদিন সে ঠিকই বুঝবে আমি শাকিবের জন্য কত না কি করেছি? পৃথিবীর এরকমই নিয়ম যে যা করবে, তার ফল সে তাই পাবে। আমি সারা জীবন তাকে দূর থেকেই ভালবেসে যাব। এসব বিষয় নিয়ে শিশু রাহুলকে কোনো প্রশ্ন করে বিব্রত করা হয়নি। তবে তার বন্ধুরা বলেছে রাহুল প্রায়ই বলে বড় হয়ে আমি যদি কখনও তারে পাই, জোরে একটা থাপ্পর বসিয়ে দেবো তার গালে। ঘটনার বিষয়ে শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। অপুর সঙ্গে বিয়ে, শাকিব-অপুর সন্তান সর্বশেষ ডিভোর্স বিতর্কের পর রাত্রির বিষয়টি নতুন করে সামনে এলো। এখন সত্য আমাদের কোন দিকে নিয়ে যায় দেখার বিষয় সেটাই। এমএ/১১:৫৫/১১ ডিসেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2yfZtPP
December 12, 2017 at 06:28AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top