বালাগঞ্জ প্রতিনিধি :: এক শিক্ষকের ৫০ হাজার টাকাসহ জরুরী কাগজপত্র ফেরত দিয়ে সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখালেন অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক মো. লক্কু মিয়া (৩০)।
সোমবার সকালে তার কাছ থেকে টাকাসহ কাগজপত্র ফেরত পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বালাগঞ্জ উপজেলার দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান। স্থানীয় লোকজন অটোরিক্সা চালকের এ সততাকে ব্যাপক সাধুবাদ জানিয়েছেন। এলাকাবাসী খুশি হয়ে রাতে মো. লক্কু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকালে দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠান থেকে রওয়ানা হন। এ সময় কলেজ ফটকের সামনে স্থানীয় দয়ামীর মোরারবাজার সড়কে একটি চলমান অটোরিক্সায় তারা উঠেন। শিক্ষক খলিলুর রহমান পথিমধ্যে ৫০ হাজার টাকা এবং জরুরী কাগজপত্রসহ হাতের ব্যাগটি অটোরিক্সার পেছনের দিকে তুলে রাখেন।
কিন্তু সিলেট শহরের কাজিরবাজার সেতু এলাকার গন্তব্যে পৌঁছে তিনি ভুলে গাড়িতে ব্যাগ রেখে নেমে পড়েন। চালক গাড়ি নিয়ে যাত্রীর খোঁজে স্থান ত্যাগ করে চলে আসেন।
পরবর্তীতে যাত্রী উঠাতে গিয়ে তিনি গাড়ির পিছনে একটি সাদা ব্যাগ দেখতে পান। হাতে নিয়ে ভেতরে ৫০ হাজার টাকাসহ জরুরী কাগজপত্র থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হন। অপর দিকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও অপরিচিত এ অটোরিক্সা চালকের কোন সন্ধান পাননি শিক্ষক খলিলুর রহমান।
সর্বশেষ খলিলুর রহমান টাকা এবং কাগজপত্রের প্রকৃত মালিক বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে সোমবার সকালে দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজে এসে ব্যাগ হস্তান্তর করেন অটোরিক্সা চালক মো. লক্কু মিয়া। আচমকা ৫০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য জরুরী কাগজপত্র হাতে পেয়ে শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকবৃন্দ ব্যাপক আনন্দিত হন।
মো. লক্কু মিয়া ওসমানীনগর উপজেলার দয়ামীর ইউনিয়নের খাগদিওর খালিয়া গ্রামের রইছ আলী পুত্র।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অটোরিক্সা চালক মো. লক্কু মিয়ার এ সততার বিষয়ে জানাজানি হলে ব্যাপক আলোচনার সূত্রপাত হয়। শিক্ষকের টাকা এবং জরুরী কাগজপত্র ফেরত দেয়ার বিষয়ে অবহিত হয়ে মোরারবাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ও দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী, সমাজকর্মি এনায়েতুর রহমান রাজু মিয়া সোমবার রাতে অটোরিক্সা চালকের বাড়িতে গিয়ে তাকে মিষ্টিমুখ করেন।
তিনি মো. লক্কু মিয়ার এ সততার বিষয়ে ধন্যবাদ জানিয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান, নলজুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসিদ আলী, বালাগঞ্জ উপজেলা রেফারি এসোসিয়েশনের আহবায়ক মো. আনোয়ার হোসেন, বালাগঞ্জ ওসমানীনগর উপজেলা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি মো. জিলুর রহমান জিলু, সাংবাদিক এম.এ কাদির, সমাজকর্মি শামীম চৌধুরী, মইনুল ইসলাম, লিটন খান, শিমুল আহমদ প্রমুখ এসময় তার সাথে ছিলেন।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2A65m7X
December 05, 2017 at 02:09PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন